নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
রিও ডি জেনিরোর বিশাল মারাকানা স্টেডিয়ামে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে, অন্ততএক ঝলকের জন্য হলেও মারিও গোৎজে ছিলেন রাজা। সেই রাতে জার্মানি-আর্জেন্টিনা ফাইনালে নিঃসন্দেহে লিওনেল মেসি ছিলেন দুই দলের সেরা ফুটবলার। কিন্তু গোৎজেকে ৮৮ মিনিটে মাঠে পাঠান জার্মান কোচ জোয়াখিম লো। খেলা অতিরিক্ত সময়ে গেলে ছোট্ট বিরতির সময় লো একটা বাক্য ব্যয় করেন গোৎজের জন্য। আর তাতেই সেই রাতে লিওনেল মেসির চেয়ে ভালো পারফর্ম করে বসেন জার্মান মিডফিল্ডার। অতিরিক্ত সময়ে তার করা একমাত্র গোলেই বিশ্বকাপ শিরোপা জেতে জার্মানি।
বিশ্বকাপ ফাইনালের অতিরিক্ত সমযয়ের প্রথম অর্ধের খেলার মাঝামাঝি তখন। জার্মানির বস লো তার ২২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে কাছে ডেকে নিচুস্বরে বললেন ‘বিশ্বকে দেখিয়ে দাও, যে তুমি মেসির চেয়ে ভালো’। শীষ্য তার গুরুর কথা অনুধাবন করলেন। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর ৮ মিনিটের সময় সত্যিই গোৎজে অবাক করলেন সারা বিশ্বকে। দুরূহ এক কোণ থেকে বল পাঠিয়ে দিলেন জালে। সেটাও উইক ফুটে! এই ধরণের গোল সেই সময় কেবল দুইজন ফুটবলার করতেন- মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তবে মারাকানার ফাইনালের রাতটি ছিল গোৎজের।
ম্যাচের ১১২তম মিনিটে জার্মান উইঙ্গার আন্দ্রে শুর্লে বামদিক দিয়ে বল নিয়ে সামনে দৌড় দেন। এই ভোঁ দৌড়ের পথে তিনি প্রথমে পেছনে ফেলেন প্রতিপক্ষের এক মার্কারকে।। কিন্তু আরও দুই মার্কার তাকে ঘিরে ছিলে একদম কাছ থেকে। শুর্লে কি ভেবে ক্রস করলেন। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে বলটি বের হতে যতটুকু জায়গা লাগে ঠক ততখানিই খালি ছিল। আর ক্রসটাও মার্কারদের গায়ে না লেগে সেই জায়গা দিয়েই বের হলো! গোৎজে আর্জেন্টিনার ডি বক্সে ঢুকে যান। আর ক্রসটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বুকে নেন প্রথমে। অবশ্য এই মিডফিলদারের আর কোন উপায়ও ছিল না। কারণ তিনি এমন এক কোণে ছিলেন যেখান থেকে সরাসরি হেড বা ভ্লিতে কখনোই গোল করা সম্ভব না। বলটি গোৎজের ধারণার চেয়ে সামনে চলে যায়। আর আলবিসেলেস্তা গোলরক্ষক রোমেরোও মুহূর্তের মধ্যে সামনে চলে আসেন। বলটি তখন দ্বিতীয়বার পা দিয়ে স্পর্ষ করার সময় ছিল না, যা করার প্রথম স্পর্ষেই করতে হবে। অসাধারন তাৎক্ষনিক বুদ্ধিতে ও অসামান্য দক্ষতা প্রদর্শন করে গোৎজে বলটি বাম পায়েই ভলি করেন দূরের বারে। রোমেরোকে ছাড়িয়ে সেই ভলি খুঁজে নেয় জালের ঠিকানা।
‘গোৎজে এক বিষ্ময় বালক, এমন এক ছেলে যে সবাইকে অবাক করে দেয়’, লো ঘোষণা করেন ম্যাচের পর। সেই অনুভূতিগুলিকে অবশ্য বেশিদিন টেকেনি। দক্ষিণ আমেরিকার প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার কিছুদিন পরই বিভিন্ন কারণে গোৎজের তারকাখ্যাতি লোভ পায়। তবে তার আগেই এই মিডফিল্ডার জার্মানিকে চতুর্থবারের বিশ্বসেরা বানিয়ে ফেলেন। গোৎজে পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি দলের বাইরে থাকাকালীন কঠোর প্রশিক্ষণ করেছিলাম এবং নিজের উপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। আমি গোলটি সময় কী ঘটেছিল তা বর্ণনা করার চেষ্টা করতে পারি কিন্তু শুধুমাত্র রিপ্লে দেখার পরেই। ম্যাচে সবকিছুই হয় খেলার ধারাতেই।’
তার ঠিক আধাঘণ্টা পরে মেসি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি স্বরূপ গোল্ডেন বল ট্রফিটি নিজের করে নেন। তবে তারচেয়ে বেশি কিছু কি মেসি চেয়েছিলেন সেই রাতে? তার গোল্ডেন বলের বিনিময়ে তিনি সাড়ে ১৩ পাউন্ডের বিশ্বকাপ শিরোপাটা চাচ্ছিলেন। ততক্ষণে যেটা চলে গিয়েছিল জার্মানির দখলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।