Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাবির হলে সাংবাদিক হেনস্তার অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০২২, ৭:৫০ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে ওই হলের এক সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম তুষার হোসাইন। তিন মাস আগে ওই ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল।এ ঘটনায় তুষার সহ তিনজনের বিরুদ্ধে হল প্রভোস্টের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। অভিযোগের ভিত্তিতে হাউজ টিউটর ড. আজহারুল ইসলামকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভূঁইয়া।

মঙ্গলবার রাত ১১টায় হলের রিডিংরুমের সামনে হেনস্তার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক তাওসিফুল ইসলাম ওই হলের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ইংরেজি দৈনিক ডেইলি অবজারভার পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। অভিযুক্তরা হলেন, মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তুষার হোসাইন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মুনতাসির মামুন রিফাত এবং ফাইনান্স বিভাগের সিরাজুল ইসলাম।

অভিযোগ পত্রে ভুক্তভোগী বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা রিডিংরুমে গিয়ে কি নির্দেশনা দেয় সেটি দেখার জন্যে তাদের পেছনে গেলাম এবং দেখলাম তারা সেখানে ‘জায়গা দখল করে ৩০ মিনিটের বেশি থাকা যাবে না।’ এই ধরনের নির্দেশনা দিচ্ছিল। দ্বিতীয় রিডিংরুমেও তারা গেলেন এবং একই কথা বললেন। আমি পেছন থেকেই শুনেছি। একই নির্দেশনা হওয়ায় আমি মনে মনে 'অহ দ্যাট সেইম লেকচার' কথাটি বলি এবং বের হয়ে চলে আসছিলাম।

তিনি বলেন, তারা দলবল নিয়ে ভেতরে থাকলেও মাস্টার্স ও হলের সিনিয়র কিছু নেতা বাইরে ছিলেন। তারা আমার 'লেকচার' শব্দটি শুনে ধরে ফেললেন আমাকে। আমাকে বারবার প্রশ্ন করতে থাকেন ‘কি লেকচার বল। লেকচার না শুনে চলে আসছিস কেন?’ আমার পরিচয় জানতে চাইলে আমি বলি আমি অবজারভারের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার।

ভুক্তভোগী বলেন, এরপর অভিযুক্ত তুষার হুসাইন, মুনতাসির মামুন রিফাত এবং সিরাজুল ইসলামসহ কয়েকজন আমাকে ও সাংবাদিক সমিতি নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তুষার আমাকে মেরে বের করার হুমকি দেন এবং একজন আমাকে ধাক্কাও দেন। এর মাঝে সভাপতি ও সেক্রেটারি বের হয়ে আসলে উনাদের বিষয়টা বললে উনারা সিনিয়র-জুনিয়র বলে চাপা দেন। উনাদের উপস্থিতিতেই তারা আমাকে শাসায় এবং উগ্রভাবে বারবার গায়ের দিকে আসতেছিল।

ভুক্তভোগী আরো বলেন, এর আগেও আমার রুমে এসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঝামেলা করেছিল। পরে হলের সাধারণ সম্পাদকসহ উনারা সাংবাদিক সমিতিতে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলে বিষয়টা আর সামনে আনি নাই।

অভিযোগের ব্যপারে তুষার হোসাইন বলেন, আমরা গতকাল হল ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে রিডিংরুমে যাই। তো সেখানে হলের একটা ছেলে নিজে নিজে আজেবাজে ভাষায় মন্তব্য করছিল। তখন আমাদের একজন সিনিয়র তাকে বলে যে তুমি এরকম কেন করতেছ। তখন সে সাংবাদিক পরিচয় দিলে আমি তাকে বলি, তুমি কি সাংবাদিকতার পাওয়ার দেখাচ্ছ?

তবে গালিগালাজ ও ধাক্কা দেয়ার অভিযোগের কথা বললে তিনি বলেন, এরকম কোন ঘটনা ঘটে নি। আমি বা কেউ তাঁকে ধাক্কা দেয় নি।

এ ব্যপারে হল ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম জামান সোহান বলেন, এটা হলের সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়েছিলো। সাংবাদিক হিসেবে কোন ঝামেলা হয়নি। আর আমরা রাতেই এগুলো সমাধান করে দিয়েছি।

উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর এলাকা থেকে প্রজিত দাশ নামের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল, ১৭ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনতাই করেছিল তুষার ও তার কয়েকজন সহযোগী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পরে ছিনতাইয়ের জিনিসপত্র ফেরত দিয়ে এমন কাজ আর করবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়েছিলেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ