Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চমক দেখাতে পারে কাতার-ওয়েলস

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

শেষবারের মত ৩২ দল নিয়ে বসতে যাচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপ। ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের এবারের আসরে চারটি করে দল নিয়ে মোট আট গ্রæপে ভাগ হয়ে খেলবে দেশগুলো। কাতার ফুটবল মহাযজ্ঞের বাকি আর মাত্র ৪ দিন। তার আগে চলুন দেখে নিই গ্রæপ গুলোর কি হালচাল। দৈনিক ইনকিলাবের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে আজ থাকছে গ্রæপ ‘এ’ আর ‘বি’ নিয়ে আলোচনা...

গ্রুপ ‘এ’ : কাতার, ইকুয়েডর, সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডস
স্বাভাবিকভাবেই গ্রæপ ‘এ’ গঠিত হয়েছে স্বাগতিক কাতারকে নিয়ে। এই গ্রæপের বাকি তিন দল হচ্ছে লাতিন আমেরিকার ইকুয়েডর, সাদিও মানের সেনেগাল ও আসরের অন্যতম ফেবারিট নেদারল্যান্ডস। এই গ্রæপ বিশ্লেষণ করতে গেলে সবার আগে আসবে নেদারল্যান্ডসের নাম। বিখ্যাত ফুটবল ম্যানেজার লুই ফন গালের অধীনে এশিয়া মাতাতে আসছে ইউরোপের শক্তিশালী দলটি। ফন ডাইক, ডি লিখট, স্তেফান ডি ভার মতো তিন অভিজ্ঞ ও তারকা সেন্টারব্যাক নিয়ে গঠিত কমলাদের রক্ষণ। বিশ্বকাপের বাকি ৩১ দলের চেয়ে ঢের শক্তিশালী তাদের এই বিভাগে। মধ্যমাঠের নেতৃত্ব দিবেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং, তবে জাভি সিমন্সের অন্তর্ভুক্তি অসম্ভব বেশ চমক জাগানিয়া। ডাচদের হয়ে গোল করার কাজটি শেষ কিছুদিন বেশ ভালোই সামলেছেন মেপফিস ডেপাই আর বার্গউইন।
সবঠিক থাকলে এই গ্রæপের দ্বিতীয় দল হিসেবে নক আউটে যাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে সেনেগাল। তবে কিছুদিন আগে মহাদেশীয় সেরার তকমা পাওয়া দলটার বিশাল দুশ্চিন্তার একটা কারণ আছে। দলের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন সাদিও মানে গেল সপ্তাহে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলার সময় পড়েছেন চোটে। বিশাল ঝুঁকি নিয়েই কোচ আলিও সিসে তাকে বিশ্বকাপে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। দ্বিতীয় রাউন্ডের আগে এই সেনেগালিজকে মাঠে পাওয়ার আশা নেই। তবে দলটি কেবল বায়ার্ন ফরোয়ার্ডের উপরই নির্ভরশীল নয়। চেলসির হয়ে খেলা সুপারস্টার সেন্টারব্যাক কুলিবালি ও গোলরক্ষক এদুয়া মদিও যেকোন ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়ার মত যোগ্যটা রাখেন।
লাতিন আমেরিকার চতুর্থ দল হিসেবে বিশ্বকাপে স্থান পাওয়া ইকুয়েডরও আছে এই গ্রæপে। দলটিতে নেই কোন উল্লেখযোগ্য সুপারস্টার। শেষ ৫ ম্যাচে কেবল ২টাতে জেতা এই দলটির পক্ষে, সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডসের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা কঠিন। সবশেষে আসা যাক স্বাগতিক কাতারের প্রসঙ্গে। দলটিতে নেই দেশের বাইরের কোন ক্লাবে খেলা ফুটবলার। এশিয়ার সেরা দলটি গত আসরের হোস্ট রাশিয়ার মত মাঠে চমক দিতে পারবে কিনা, সেদিকেই চোখ গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের।

গ্রুপ ‘বি’ : ইংল্যান্ড, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েলস
গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের এবারের আসরে, গ্রæপ ‘বি’র সবচেয়ে শক্তিশালী দল সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এই গ্রæপের বাকি ৩ দল ফুটবলের বড় নাম না হলেও, শক্তিমত্তার বিবেচনায় খুব কাছাকাছি। এশিয়ার পাওয়ার হাউজ ইরান, পুলিসিচের যুক্তরাষ্ট্র ও ৬৬ বছর পরে বিশ্বকাপে পুনঃরায় সুযোগ পাওয়া গ্যারেথ বেলের ওয়েলস।
একটা প্রবাদ আছে, দইংলিশ মিডিয়া সবই করতে পারেদ। সেই শক্তিতেই বা অপপ্রচারণায় প্রতি ৪ বছর পর, বিশ্বকাপ এলেই ফেবারিটের তকমা লাগে ‘থ্রি লায়ন্স’দের গায়ে। যদিও প্রিমিয়ার লিগের দেশটির এবারের স্কোয়াড এবং ম্যানেজারিয়াল ট্যাক্টিক্স বেশ ভারসাম্যপ‚র্ণ। কোচ গ্যারি সাউদগেটের অধীনে সর্বশেষ ৫ বছর বেশ গোছান ফুটবলই খেলছে ইংলিশরা। তবে এই ৫২ বছর বয়সী কোচের অতি রক্ষণাত্মক কৌশলের জন্য গতবছর ইউরোপ সেরা হওয়া যোগ্যটা হারায় দলটি। যদি তারকা ফুটবলারের প্রসঙ্গ আসে, তবে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সেই দৌড়ে পিছিয়ে থাকবে আসরের বাকি দলগুলো। হ্যারি কেইন, ফোডেন, সাকা, রাহিম স্টার্লিংদের নিয়ে গড়া আক্রমণভাগ আসরেরই অন্যতম সেরা বিভাগ। দলটির রক্ষণ ও মধ্যমাঠও যথেষ্ঠ ভারসাম্যপ‚র্ণ। তবে গোলবারের নিচে দীর্ঘদিন ধরেই ইংলিশদের নেই কোন বিশ্বাসযোগ্য হাত। লিগ খেলে ক্লান্ত ইংলিশরা বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেদের কতটা মেলে ধরতে পারবেন, তা সময় গড়ানোর সঙ্গেই জানা যাবে।
আরও ৯টা বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে যদি ওয়েলস বাহিরে থাকত, তবে এক শতাব্দী প‚র্ণ হতো ইউরোপের এই দল বিহীন বিশ্বকাপের। বেল ছাড়াও বেন ডেভিস, রামসি, ও ড্যানিয়েল জেমসের মত তারকা ফুটবলারও আছে দলটিতে। তবে নক আউটের টিকেট পেতে দলটির অসম্ভব লড়াই হবে যুক্ত্রাষ্ট্রের বিপক্ষে। কিন্তু এতোবছর পরে খেতলে এসে, বিশ্বমঞ্চ থেকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে চাইবে না ২০১৬ সালের ইউরো কাপের সেমিফাইনালিস্টরা।
যুক্তরাষ্ট্র দলটিতে আছে সকল চমকে দেওয়ার মত ফুটবলার। দলটিতে চেলসির পুলেসিস, জুভেন্টাসের ম্যাককিনে,মিলানের ডেস্ট সহ আছেন ইউরোপে খেলে বেড়ানো বহু ফুটবলার। ফুটবলকে দসকারদ বলে সম্বোধন করা দেশটি ২০০২, ২০১০ ও ২০১৪ আসরে জাগিয়েছিলো চমক। সাধারণ দল নিয়েও বড় দলকে হারিয়ে দেওয়ার এক অসাধারণ ক্ষমতা আছে মার্কিনিদের।
এই গ্রæপে এশিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে আছে ইরান। যাদের সা¤প্রতিক ফর্ম বেশ আশাব্যঞ্জক। শেষ ৫ ম্যাচে ৩টি জয়, হারের মুখ দেখেছে কেবল একবার। এই সময়ে তারা সেনেগালের বিপক্ষে ড্র করেছে আর হারিয়ে দিয়েছে কাভানি-সুয়ারেজের উরুগুয়েকে। এই দুই কীর্তি ইরানিরা করতে পেরেছে, দেশটির ফুটবলকে নবজন্ম দেওয়া কোচ কার্লোস কুইরাজের অধীনেই। এই পর্তুগিজ কোচ কিছুদিন আগে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নিয়েছে এশিয়ার পাওয়ার হাউজের। নিজেদের মহাদেশীয় আবহাওয়ার সুবিধা নিয়ে, দলটির সামনে এখন দারুণ সুযোগ নক আউটে উত্তীর্ণ হওয়ার।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ