Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘মাথা উঁচুই থাকবে লড়াকু পাকিস্তানের’

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

নাটকের যবনিকাপাত হয়ে গেল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাস চলছে ইংল্যান্ড দলে। পাকিস্তানে চলছে ফাইনালের হার নিয়ে কাটাছেঁড়া। শুধু পাকিস্তানেই নয়, বাবর আজমদের হার নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে পুরো ক্রিকেট-বিশ্বেই। সাধারণ ক্রিকেট অনুসারী থেকে শুরু করে ক্রিকেটবোদ্ধা- সবাই ব্যস্ত ফাইনাল ম্যাচের নানা দিক নিয়ে কথা বলায়। পাকিস্তান কেন হারল- এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে একেকজন একেক কারণ তুলে ধরছেন। ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আক্ষেপ করেছেন ২০টি রান কম হওয়া আর শাহিন শাহ আফ্রিদির চোটে পড়া নিয়ে। আফ্রিদি ম্যাচের সময় চোটে না পড়লে পাকিস্তান ফাইনাল জিততে পারত কি না, বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার টেন্ডুলকারও।
ম্যাচ শেষে ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান এক টুইটে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানানোর সঙ্গে আফ্রিদির চোট নিয়েও লিখেছেন। টেন্ডুলকারের টুইটটি ছিল এ রকম- ‘ইংল্যান্ড নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জেতায় তাদের অভিনন্দন। অসাধারণ এক অর্জন। লড়াকু এক ফাইনালই হয়েছে। আফ্রিদি যদি চোটে না পড়ত, তাহলে এটা আরও আকর্ষণীয় হতে পারত। উত্থান-পতনের কী এক বিশ্বকাপ!’
আফ্রিদির আরও ১.৫ ওভার বাকি ছিল। সেটা তিনি করতে পারলে কী হতো তা বলা মুশকিল। হয়তো ইনিংসের ওই সময় তিনিও মার খেতে পারতেন। অথবা তিনি ভালো বোলিং করে ইংল্যান্ডকে বিপদে ফেলতে পারতেন। কিন্তু ইংল্যান্ড দলের হাতে থাকা উইকেট আর ইনিংসের সময় বিবেচনা করে ভারতের কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার মনে করেন, আফ্রিদির চোটে পড়টা ম্যাচের ফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি। গাভাস্কারের কথা, ‘আমার এটা মনে হয় না। স্কোরবোর্ডে খুব যথেষ্ট রান জমা করতে পারেনি পাকিস্তান... আমি মনে করি না শাহিনের যে ১০ বল (আসলে ১১ বল) বাকি ছিল, যেটা সে করতে পারেনি, সেটা খুব বেশি পার্থক্য করে দিতে পারত। পাকিস্তান হয়তো আরেকটি উইকেট পেত, কিন্তু ইংল্যান্ডই জিতত।’
মেলবোর্নের ফাইনালে এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ১ ওভার হাতে রেখে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড। লো স্কোরিং এ ম্যাচে একটা সময় ইংল্যান্ডকে চেপে ধরেছিল পাকিস্তানের বোলাররা। ১৩ থেকে ১৫- এই তিন ওভারে ইংল্যান্ড শুধু একটা বাউন্ডারিই মারতে পারে। রান আর বলের হিসাবটা দাঁড়ায় এ রকম- জিততে হলে করতে হবে ৩০ বলে ৪১ রান! তবে ব্রুকের আউট যেমন পাকিস্তানকে সুবিধা এনে দেয়, তেমনি একটি অসুবিধায়ও ফেলে। ব্রুকের ক্যাচটি নিতে গিয়ে পায়ে চোট পান আফ্রিদি। খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছেড়ে যান পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার। তখনো তার ২টি ওভার বাকি ছিল।
আফ্রিদি পরে ফিরে এলেও করতে পেরেছেন মাত্র একটি বল। ১৬তম ওভারের প্রথম বলটি করার পর আবার তিনি খোঁড়াতে খোঁড়াতে চলে যান মাঠের বাইরে। সেই ওভারটি শেষ করতে আসেন অফ স্পিনার ইফতিখার আহমেদ। তার শেষ দুটি বলে একটি করে চার ও ছয় মেরে স্টোকস রান-বলের হিসাবের চাপটা দূর করেন। জয়ের হিসাবটা হয়ে যায় ২৪ বলে ২৮ রানের। এরপর আর ইংল্যান্ডকে বেঁধে রাখতে পারেনি পাকিস্তানের বোলাররা। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মঈনের উইকেটটি হারালেও শেষ বলে জয়ের আনন্দে ভাসে ইংলিশরা।
তবুও মামুলি ১৩৭ রানের পুঁজি নিয়ে যেভাবে লড়াই করেছে বাবর আজমের দল তাতে গর্বিত পাকিস্তানের বোলিং গ্রেট ওয়াকার ইউনিস, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল জেতায় ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড, জস বাটলার ও তার দলকে অভিনন্দন। খুব ভালো খেলেছ স্যাম কারান। ইংল্যান্ডের প্রাপ্য জয়। (পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা) মাথা উঁচু রাখো। তোমরা আমাদের সবাইকে গর্বিত করেছ।’ তবে ফাইনালে কেবল ১৩৭ রানের পুঁজি- ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্সে খুশি নন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি, ‘ব্যাটিং বিভাগ এমন গর্তই খুঁড়েছে যে বিশ্বের সেরা বোলিং আক্রমণও তা ভরাট করতে পারেনি। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে ফাইনাল পর্যন্ত যাওয়া এবং দারুণ একটি (ফাইনাল) ম্যাচ উপহার দেওয়া দলের অসামান্য প্রচেষ্টা। ইংল্যান্ড ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। ছেলেরা মাথা উঁচু রাখো। আমরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের রানার্সআপ।’
ইংল্যান্ডের পাশাপাশি পাকিস্তানকেও অভিনন্দন জানালেন সাবেক শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার রাসেল আর্নল্ড, ‘সাদা বলের দুইটি ট্রফিই ইংল্যান্ডের কাছে। দারুণ গভীরতা সম্পন্ন একটি দল। ফাইনালে দারুণ করেছ তোমরা। পাকিস্তানকেও অভিনন্দন। যদি কোনো দলের পক্ষে এই রান (১৩৭) ডিফেন্ড করা সম্ভব হতো, সেটি পাকিস্তান। কিন্তু ওই সময় শাহিন (শাহ আফ্রিদি) চোটে পড়া মোটেও ভালো হয়নি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ