Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হিজাব আন্দোলনে অশান্তি, প্রথমবার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিল ইরান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৪১ পিএম

হিজাব আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অশান্তির ঘটনায় এবার মৃত্যুদণ্ড দিল ইরান। রবিবার সেই মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় রাজধানী তেহেরানের একটি আদালত। সাজাপ্রাপ্তর বিরুদ্ধে সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ, নাগরিক জীবনে অশান্তি ছড়ানো, বেআইনি জমায়েত, জাতীয় সুরক্ষা নষ্টের চেষ্টা ও ষড়যন্ত্রের মতো মারাত্মক অপরাধের অভিযোগ এনেছিল ইরানি গার্ড। সমস্ত অপরাধই আদালতে প্রমাণ হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহেরানের ওই আদালত। এছাড়া আরও একটি আদালতের তরফে ৫ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেআইনি জমায়েত ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে এদের গ্রেফতার করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, হিজাব আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অশান্তির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩টি প্রদেশের ৭৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের বিচার বিভাগ। এদের একটা বড় অংশই তেহরানের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। রাজধানীর পাশাপাশি হোরমোজগান প্রদেশে ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে চলছে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা। এছাড়া শতাধিক যুবককে বেকসুর খালাস দিয়েছে ইরানের আদালত। এদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেয়া এবং গান গাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।

হিজাব বিতর্কে প্রতিবাদ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এখনও অগ্নিগর্ভ ইরান। দু’মাস পেরিয়ে গিয়েও থামছে না আন্দোলন। এর মধ্যেই ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর নতুন তথ্য সামনে আনল সেদেশের মানবাধিকার কমিশন। শনিবার ইরানি মানবাধিকার কমিশনের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত হিজাব আন্দোলনে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩২৬ জনের। এদের মধ্যে ৪৩ জন শিশু ও ২৫ জন মহিলা। চলতি মাসের ৫ তারিখ সবচেয়ে বেশি আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়। ওই দিন নিহতের সংখ্যা ছিল ২২।

এছাড়া এলাকাভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, সিসতান বালুচিস্তানে প্রাণ হারিয়েছেন সবচেয়ে বেশি মানুষ। ওই প্রদেশে মৃতের সংখ্যা ১২৩। এদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখ। ওই দিন শুক্রবারের নমাজের পর জাহিদেন এলাকায় প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন তারা। অভিযোগ সেই সময় নির্বিচারে গুলি চালায় ইরানি ব়য়্যাল গার্ড। এতেই মৃত্যু হয় বহু বিক্ষোভকারীর। প্রসঙ্গত, ওই দিনের হত্যাকাণ্ডকে ‘রক্তাক্ত শুক্রবার’ বলে উল্লেখ করেছেন আন্দোলনকারীরা।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে হিজাব ঠিকমতো না পরার জন্য ইরানি গার্ডের বিরুদ্ধে বছর ২২-র এক তরুণী মাসা আমিনিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এর পরই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। হিজাব ঠিকমতো না পরার জন্য ‘নীতি পুলিশি’-র জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। সেখানেই ১৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয়েছিল মাসা-র। তবে এই মৃত্যুর ক্ষেত্রে অভিযোগ মানতে নারাজ নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের দাবি, হেফাজতে থাকাকালীন আচমকাই অসুস্থ হয়েছিলেন মাসা। পরে হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়। সূত্র: এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ