নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল কিভাবে শুরু হয়েছিল মনে আছে? উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিখ্যাত ক্লাসিক সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেত্রী ডায়না রসের একটা হাস্যকর মিস দিয়ে। সেই অনুষ্ঠানের একটা অংশ ছিল এমন; ডায়না পেনাল্টি শুট নিবেন আর সেই বল জালে এত জোরে জড়াবে যে, গোলপোস্ট ভেঙ্গে দুইভাগ হয়ে যাবে। আমেরিকান তারকার বলটা বারে রাখলেই হতো, গোলবার ভাঙ্গার কাজ প্রযুক্তির মাধ্যমে করে নেওয়ার প্ল্যান ছিল আর গোলকিপার ফেইকজাম্প দিয়ে সেই বল ছেড়ে দিবে সেটাও চিত্রনাট্যে ছিল। কিন্তু ডায়না সেই বল মারলেন বাম পার্শ্বের বারের অনেক বাহির দিয়ে। সেই ঘটনার ঠিক একমাস পর, জুলাইয়ের ১৮ বিশ্বকাপ ফাইনালের মঞ্চে, সারা আসর দারুণ খেলা ইতালির রবের্তো ব্যাজিও ১২ গজ দূর থেকে গোল করতে ব্যর্থ হলেন। যার খেসারতে বিশ্বকাপ শিরোপাটাই ছিটকে গেল আজ্জুরিদের হাত থেকে!
ব্যাজিও ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে টাইব্রেকের গোল করতে ব্যার্থ হন। সমীকরণ ছিল তিনি ব্যর্থ হলেই সেলেসাওরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। বিশ্বকাপ ফাইনালে এমন মুহূর্তের মুখোমুখী হবার আগে দডিভাইন পনিটেলদ (তার বিখ্যাত চুলের স্টাইলের জন্য এই নাম) খ্যাত ব্যাজিও ইতালিকে একাই টেনেছিলেন গোটা নক-আউটে। ব্যাজিও তার হৃদয়বিদারক মিস সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলার স্বপ্ন ছিল, কিন্তু শেষটা এভাবে হতে পারে তা ভাবিনি। আজ অবধি, আমি এখনও এই সত্যটা স্বীকার করে নিতে পারি নি যে, এমনটা ঘটেছে। সেই দুঃস্বপ্ন আমাকে আজও তাড়িত বেড়ায়।’
টাইব্রেকে যেকোন ম্যাচ হারা কষ্টের। আর সেটা যদি হয় বিশ্বকাপ ফাইনাল তাহলে সেটার মত নিষ্ঠুর আর কিছুই নেই। আর ব্যাজিওর দাবি এটা তার জন্য দ্বিগুণ কষ্টের ছিল। এই ‘ডিভাইন পনিটেল’ ছাড়া ইতালি যে, রস বোল স্টেডিয়ামের ফাইনাল পর্যন্তই পৌঁছাতে পারত না। এই ফরোয়ার্ড তর্কাতীতভাবে ফাইনালের আগে টুর্নামেন্টের সেরা ফুটবলার ছিলেন। সেকেন্ড রাউন্ডে নাইজেরিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারানোর ম্যাচে ব্যাজিওই করেন দুটি গোল। এরপর একই ব্যবধানে স্পেনের বিপক্ষে শেষ আটে জেতে আজ্জুরিরা। সেখানে ‘ডিভাইন পনিটেল’ করেন ১ গোল। সেমিফাইনালে এই ফরোয়ার্ড বুলগেরিয়াকে একাই বিধ্বস্ত করেন জোড়া গোলে।
ব্যাজিও সাধারণত পেনাল্টি মিস করতেন না। ফাইনালে চরম উত্তেজনের মধ্যেই হয়তো তিনি স্নায়ুচাপে ভুগেছিলেন। তাতেই ঝামেলা বাধিয়ে দেন শুট নিতে গিয়ে। তবে সে ধরণের পরিকল্পনাতে তিনি শুট নিয়েছিলেন তা একদমই যথার্ত ছিল। এই ব্যাপারে ব্যাজিও আত্মজীবনী, ‘উনা পোর্টা নেল সিলো’তে লিখেছেন, ‘যখন আমি কিক নিতে গিয়েছিলাম তখন আমি বেশ সুস্পষ্ট ছিলাম আমার সিদ্ধান্তে। আমি জানতাম টাফারেল (ব্রাজিলের গোলরক্ষক) সবসময় ডাইভ করে, তাই আমি মাঝ বরাবর জোরে বল মারার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে একটু উপর করে, যেন টাফারেল তার পায় দিয়ে বাঁচাতে চাইলেও না পারে।’
সেই পরিকল্পনা যে একদম নিখুঁত হয়েছিল সেই ব্যাপারে ব্যাজিও লেখেন, ‘এটি একটি বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত ছিল কারণ টাফারেল তার বাম দিকে লাফ দিয়েছিল এবং সে কখনই আমার পরিকল্পনা বুঝতে পারেনি। কিন্তু আমি জানি না এটা দুর্ভাগ্যবশত নাকি অন্য কিছু যে, বলটি তিন মিটার উপরে উঠে গেল এবং ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে গেল।’
এমন সময়টা খুব কঠিন। কোন ফুটবলারই এমনটা মেনে নিতে পারে না। তবে ব্যাজিওকে সেই ঘটনা আজও পুড়িয়ে মারে, ‘আমি মরতে বসেছি, আমার ভেতরের অনুভূতি ঠিক এমনতাই ছিল। এছাড়াও, আমি ভেবেছিলাম আমার দেশবাসীর প্রতিক্রিয়া কি হবে। এটি আমাকে আজও নাড়া দেয়। আমি এখনও এই ব্যাপারে দুঃস্বপ্ন দেখি। এবং যদি আমি আমার ক্যারিয়ার থেকে একটি মুহূর্ত মুছে ফেলতে পারি, তাহলে এটিই হবে সেই মুহূর্ত।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।