Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিপাবলিকান দলে ট্রাম্প ডি’স্যান্তিস বিরোধ চরমে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মধ্যবর্তী নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডি’স্যান্তিসের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেই বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। রিপাবলিকান ট্রাম্প তার এক সময়ের অনুগত ডি’স্যান্তিসকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন বৃহস্পতিবার রাতে। কোনো রাখঢাক রাখেননি তিনি। সরাসরি আক্রমণ করেছেন ডি’স্যান্তিসকে। বলেছেন, ডি’স্যান্তিস যেন ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী না হন। যদি তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন, তবে তার এমন সব গোপন কথা আছে, যা ডি’স্যান্তিসের স্ত্রীও জানেন না। সেসব কথা ট্রাম্প ফাঁস করে দেবেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা একে রাজনৈতিক হুমকি, ব্লাকমেইল করা বলেই অভিহিত করছেন। উপরন্তু রিপাবলিকান দলের উদীয়মান এই তারকা গভর্নরকে ট্রাম্প গড়পরতার একজন রাজনীতিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ট্রাম্প মনে করেন, তার কারণেই জিতেছেন ডি’স্যান্তিস। ডি’স্যান্তিসের বয়স এখন ৪৪ বছর। মঙ্গলবার কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ফ্লোরিডার গভর্নর হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি বর্তমান সময়ে রিপাবলিকান দলের সবচেয়ে উজ্বল তারকা, উদীয়মান ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে চাইছেন বলে চাউর হয়ে গেছে। এটাকে ট্রাম্প দেখছেন তার বিরুদ্ধে পরিষ্কার এক চ্যালেঞ্জ হিসেবে। কারণ, তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে আভাস দিয়েছেন। আগামী ১৫ই নভেম্বর তিনি বড় ঘোষণা দেবেন। সেখানে হয়ত আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারেন। ফলে ডি’স্যান্তিসকে হুমকি হিসেবে দেখছেন ট্রাম্প। তাই তাকে সতর্ক করেছেন। সতর্ক তো নয়, রীতিমতো একে হুমকি বলা যায়। এক বিবৃতিতে ডি’স্যান্তিসের রাজনৈতিক ওজন বা গুরুত্বকে ডিসমিস করে দিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ২০১৭ সালে প্রথম যখন ডি’স্যান্তিস নির্বাচন করেন তখন তিনি ট্রাম্পের কাছে গিয়ে হাতেপায়ে পড়েছিলেন। ট্রাম্প বলেন, রন ডি’স্যান্তিরে এপ্রুভাল বা অনুমোদনের হার অনেক নিম্ন। তার নির্বাচনের রেকর্ড খারাপ। এমনকি তার কোনো অর্থ নেই। তাই তিনি আমাকে বলেছিলেন- যদি আমি তাকে অনুমোদন দিই, তবেই তিনি বিজয়ী হতে পারেন। আমি তার প্রচারণা ঠিক করে দিয়েছি। তাতেই তিনি বিশেষত্ব পেয়েছেন। রন ডি’স্যান্তিসকে তিনি ব্যঙ্গ করে প্রচারণার মধ্যে অভিহিত করেছেন ‘রন ডিস্যাংশিমোনিয়াস’ নামে। কিন্তু ডি’স্যান্তিস ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে যেতে অস্বীকৃতির মাধ্যমে গেম খেলছেন। তাই ট্রাম্প তাকে সতর্ক করেন- যদি তিনি নির্বাচন করেন তাহলে শেষ হয়ে যাবেন। ওদিকে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তৃতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন ট্রাম। এ জন্য তিনি চাইছেন রিপাবলিকান দল থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীর দৌড়ে টিকে থাকতে। কিন্তু তাতে হতাশা সৃষ্টি করেছে মধ্যবর্তী নির্বাচন। রিপাবলিকানরা ধারণা করেছিল প্রতিনিধি পরিষদে তারা ব্যাপক বা ভূমিধস সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী হবে। কিন্তু তা ঘটেনি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে প্রায় সমানে সমান। ফলে নির্বাচনের প্রায় চারদিন কেটে গেলেও উচ্চকক্ষ সিনেটে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ এটা এখনও নিশ্চিত নয়। এর জন্য দলের অনেকেই দায় চাপিয়েছেন ট্রাম্পের ওপর। তিনি ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতির যেসব অভিযোগ করেছিলেন, সেই অভিযোগে অকাট্য সমর্থন দিয়েছিলেন কিছু রিপাবলিকান। ট্রাম্প তাদের জন্য জানপ্রাণ দিয়ে সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু তার সেইসব প্রার্থীদের বেশির ভাগকেই ভোটাররা প্রত্যাখ্যান করেছেন। হাইপ্রোফাইল অনেক প্রার্থীকে পদ ধরে রাখতে লড়াই করতে হয়েছে অথবা পরাজিত হয়েছেন। এ অবস্থায় ১৫ই নভেম্বর বড় ঘোষণার আগে ট্রাম্পকে নতুন করে বুদ্ধিবিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেছেন ঘনিষ্ঠ মিত্ররা। ট্রাম্পের সাবেক একজন উপদেষ্টা ডেভিড আরবান নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, রিপাবলিকানরা ট্রাম্পকে অনুসরণ করে একটি পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করেছেন। এর অর্থ হলো যেকোনো সময় পাহাড়ের চূড়া থেকে পা পিছলে খাদে পড়ে যেতে পারে রিপাবলিকানরা। অন্যদিকে ট্রাম্পের সাবেক প্রেস সেক্রেটারি কিলি ম্যাকইনানি ফক্স নিউজকে বলেছেন, আমি মনে করি তার নির্বাচনী ঘোষণা দেয়া স্থগিত রাখা উচিত। অন্যদিকে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের চারলি ক্রিস্টকে ২০ পয়েন্টের ব্যবধানে পরাজিত করে গভর্নর নির্বাচিত হয়েছেন রন ডি’স্যান্তিস। এর মধ্য দিয়ে দলে তিনি একজন বড় নেতা হিসেবে নিজের অবস্থানকে সিমেন্টের মতো দৃঢ় করেছেন। ফ্লোরিডার সবচেয়ে বড় কাউন্টির মধ্যে তাদের মিয়ামি-ডেডে কাউন্টি অন্যতম। এই কাউন্টি হলো ডেমোক্রেটদের শক্ত ঘাঁটি। চার দশকের মধ্যে সেখানে ডি’স্যান্তিস সবচেয়ে বড় বিজয় অর্জন করেছেন। একে বিরাট কৃতীত্ব হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই কাউন্টিতে ডেমোক্রেট হিলারি ক্লিনটন শতকরা ২৯ ভাগ পয়েন্ট বেশি পেয়েছিলেন। সেই আসনে মঙ্গলবার শতকরা ৫৫ ভাগ ভোট পেয়ে জিতেছেন ডি’স্যান্তিস। অক্টোবরে ইসপোস জরিপের তথ্য অনুযায়ী, নিবন্ধিত শতকরা ৭২ ভাগ রিপাবলিকান বলেছেন, ভবিষ্যতে দলে প্রভাব বিস্তারের জন্য খুব ভাল অবস্থানে আছেন ডি’স্যান্তিস। পক্ষান্তরে ট্রাম্পের পক্ষে এ মত দিয়েছেন শতকরা ৬৪ ভাগ। তবে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প যে তীর ছুড়ে মেরেছেন তার তাৎক্ষণিক জবাব দেননি গভর্নর রন ডি’স্যান্তিস।



 

Show all comments
  • Mirja Nazrul ১২ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৩৪ এএম says : 0
    ট্রাম্পের মতো লোককে নির্বাচিত না করাই উত্তম।
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Arif Sheikh ১২ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৩৪ এএম says : 0
    ফেল করলে আমেরিকায় নাকি আর দাড়ানো যায় না। ট্রাম্প তো একবার ফেল করেছে তাহলে আবার কোন নিয়মে?
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Arif Sheikh ১২ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৩৪ এএম says : 0
    ফেল করলে আমেরিকায় নাকি আর দাড়ানো যায় না। ট্রাম্প তো একবার ফেল করেছে তাহলে আবার কোন নিয়মে?
    Total Reply(0) Reply
  • Ismail Sagar ১২ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৩৫ এএম says : 0
    যে যাই বলুক, ট্রাম্পের আসা টা জরুরী। বাইডেন এর মত অথর্ব আর ক্রিমিনাল মাইন্ডের লোক আমেরিকার মত শক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট থাকা বিপজ্জনক। ইউক্রেন- রাশিয়ার পর , চায়না- তাইওয়ান সহ পুরা মিডল ইস্ট কে অশান্ত করার চক্রান্ত করছে সে। পৃথিবীর শান্তির জন্য ই ট্রাম্পকে প্রয়োজন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ