অন্য দেশে সাবমেরিন বিক্রির চক্রান্তে মার্কিন নৌবাহিনীর এক প্রকৌশলী ও তার স্ত্রীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির ফেডারেল আদালত। দণ্ডিতদের নাম জোনাথন টোয়েবেকে ও ডায়ানা। বুধবার রায় দেওয়ার সময় বিচারক জিনা গ্রোহ বলেন, এই দম্পতি ষড়যন্ত্র করে ভিন্ন এক দেশের প্রতিনিধির কাছে মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিনের গোপন তথ্য বিক্রি করে দেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছিলেন। জোনাথন টোয়েবেকে ১৯ বছরের এবং তার স্ত্রীকে ২২ বছরের কারাভোগের সাজা প্রদান করার সময় বিচারক বলেন, “এটি একটি ব্যতিক্রমী গল্প।” আদালতে তিনি বলেন, এই দম্পতির ক্রিয়াকলাপ এবং লোভী মনোভাব সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সমুদ্রে এবং প্রতিটি মার্কিন নাগরিককে শুধু দুর্বল অবস্থানে মুখেই ফেলেনি বরং সবাইকে প্রতিপক্ষের ঝুঁঁকিতে ফেলেছে। বুধবার পাঁচ ঘণ্টার শুনানির সময় ডায়ানা স্বীকার করেছেন যে, তিনি কারাগারে থাকাকালীন তার স্বামীকে দুটি চিঠি পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন। চিঠি দুটি আদালতে পড়ে শোনানো হয়, যেখানে ডায়ানা তার স্বামীকে উক্ত ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়ে মিথ্যা বলার জন্য বলেন। তিনি যেন বলেন, ডায়ানা এর কিছুই জানেন না। পড়ার পর চিঠিটি কমোডে ফ্ল্যাশ করার জন্যেও তিনি তার স্বামীকে নির্দেশ দেন। নেভাল ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেটিভ সার্ভিসের বিশেষ এজেন্ট ব্রাইস মিলার আদালতে বলেন, এই দম্পতি মার্কিন জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। শুনানির সময় সরকারি উকিল আদালতকে জানান, এই দম্পতি দেশ ছেড়ে পালানোর পাঁয়তারা করছিল। আদালতের নথি থেকে জানা যায়, মেরিল্যান্ডের একটি প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষিকা ডায়ানা। তিনি সাবমেরিনের গোপন তথ্য একটি মেমোরি কার্ডে নিয়ে তারপর সেটিকে চুইংগাম এবং বাটার স্যান্ডউইচের সাহায্যে লুকিয়ে রাখতেন। এভাবে তথ্য প্রদানের এক প্রচেষ্টার সময় ২০২১ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার জেফারসন থেকে তাকে ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে সাবমেরিনের এই নথিগুলো “টপ সিক্রেট” ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে না, সেগুলো “গোপনীয়” ক্যাটাগরির তথ্য ছিল। গ্রেফতারের পর ওই দম্পতির বাড়িতে তল্লাশি চালায় ফেডারেল পুলিশ। তারা সেখানে একটি কাগজের ট্র্যাশ ব্যাগ, কয়েক হাজার ডলার, পাসপোর্ট, ইউএসবি ফ্ল্যাশড্রাইভ ও ল্যাটেক্স গ্লাভসসহ একটি “গো-ব্যাগ” খুঁজে পায়। ডয়চে ভেলে।