Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালো ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে হলের ১১০০১ নাম্বার রুমে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম মোনাফ প্রান্ত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও হল ছাত্রলীগের সদস্য। অন্যদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম রাসেল মাহমুদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী ইনকিলাবকে জানান, হল ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার পর এদিন এলাকাভিত্তিক গ্রুপ আলাদা হয়ে যাচ্ছিল। ফলে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রুমে নতুন করে সিফট করা হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যে রুমে থাকতেন সেই রুমে সিফট হয় অভিযুক্ত প্রান্ত। রাত সাড়ে আটটার রুমে সবাই না থাকায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কিছুটা দেরিতে রুম থেকে বের হতে চেয়েছিল যাতে রুমের সবাই আসলে একসাথে বের হতে পারে। ওই রুমের সবাইকে আলাদা আলাদা রুমে সিফট করা হয়। ফলে সবাই নিজেদের নতুন রুমে চলে যায় কিন্তু তিনজন শিক্ষার্থী রুম ছাড়তে একটু দেরি করে। তাদের মাঝে ভুক্তভোগী রাসেল একজন।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রান্ত রুমে এসে রাসেলের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। রুম থেকে তাড়াতাড়ি কেন বের হচ্ছে না এসব নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হাতের কাছে রড পেয়ে তা দিয়ে রাসেলকে মারধর করে। মুখে থাপ্পড় দেয়। মারধরের কারণে রাসেল তার হাত ও কোমরে আঘাত পায়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয় রাসেল।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদ বলেন, আমাদের রুম পরিবর্তন চলছে। তখন আমি রিডিং রুমে ছিলাম। রুমে এসে দেখি প্রান্ত (অভিযুক্ত) আমার রুমে শুয়ে আছে। আমি রুমে ঢুকার সাথে সাথে সে বলতেছে, এখনো রুম থেকে সব জিনিস নিয়ে যাস নাই কেন? তাড়াতাড়ি নিয়ে যা। নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে শিক্ষার্থী বলেন, আমি তখন তাকে একটু দেরিতে বের হওয়ার কথা বলতেই সে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। এরপর রড দিয়ে বেধড়ক মারপিট শুরু করে। আমি হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করি। আমার কোমর, হাত ও পিছনে রড দিয়ে বাড়ি দেয়। পরে বন্ধুরা এসে আমাকে সেভ করে ঢাকা মেডিক্যাল নিয়ে আসে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, প্রান্ত খুবই উগ্র মেজাজের ছেলে। প্রায়ই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বন্ধুদের সাথে ঝগড়া করে। জুনিয়রদেরও মারধর করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গভীর রাতে জুনিয়রদের রুমে গিয়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে গালাগালি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রান্ত হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসের অনুসারি হয়ে রাজনীতি করেন।
এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুস বলেন, মানুষকে সম্মান করার এই মানবিক মূল্যবোধ যদি কারো মধ্যে না থাকে তাহলে তার ব্যাপারে আর কি বলব! বিষয়টিতে আমি অত্যন্ত ব্যথিত। কোনোরকম রাজনৈতিক কর্মসূচির চাপ ছিল না। সবকিছুই স্বাভাবিক চলছিল। তার মধ্যেই এমন অনাকাঙ্খিত একটা ঘটনা ঘটে গেল। বিষয়টির অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব। ছাত্রলীগের সকল কর্মীর কাছ থেকে মানবিক মূল্যবোধ একান্ত কাম্য।
তবে মারধরের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী মোনাফ প্রান্ত। তিনি বলেন, এরকম কোন কিছুই হয়নি। রাসেল আমার বন্ধু হয়। রুম নিয়ে জাস্ট একটু তর্কাতর্কি হয়েছে। পরে সিনিয়র ভাইরা এসে সমাধান করে দিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আব্দুল বাছির। ###

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ