Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুলবাড়ী সাব-রেজিষ্টার অফিসে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া হয়না দলিল রেজিষ্টারী

সাব-রেজিষ্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় তিন দলিল লেখক সাসপেন্ড

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০২২, ৪:২৬ পিএম

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সাব-রেজিষ্টার অফিসে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোন দলিল রেজিষ্ট্রি হয়না। দলিলের সার্টিফাইট কপি তুলতেও খরচ দিগুন।
কয়েকটি দলিল বাজার মূল্যের থেকেও কম মূল্যে রেজিষ্টারী করে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করার অভিযোগ উঠেছে সাব-রেজিষ্টারের বিরুদ্ধে।
এদিকে সাব-রেজিষ্টারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করায় মনছুর আলী মন্ডল,সামসুল হক মন্ডল ও মোস্তাহারুল ইসলাম রিপন নামে তিন জন দলিল লেখককে সাময়িক সাসপেন্ড করে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সাব রেজিষ্টার। এনিয়ে দলিল লেখকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ফুলবাড়ী সাব রেজিষ্টার অফিসে দলিল রেজিষ্টারী করতে আসা কয়েকজন গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন সরকারী নির্ধারিত মূল্যের ফিস-ষ্টাম্প ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা না দিলে দলিল রেজিষ্টারী হচ্ছেনা, তারা বলেন একটি দলিলের মূল্য অনুযায়ী সরকারী খরচের থেকে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে। এছাড়া দলিলের সার্টিফিকেট কপি তুলতে সরকারী ভাবে ৭০০ টাকা হলেও, সেখানে দিতে হচ্ছে ১৩শ থেকে ১৪শ টাকা।
কয়েকজন দলিল লেখক অভিযোগ করে বলেন,বর্তমানে কর্মরত খন্ডকালিন সাব-রেজিষ্টার রিপন চন্দ্র মন্ডল অতিরিক্ত টাকা ছাড়া দলিল রেজিষ্ট্রি করেননা। একারনে তারা তাদের গ্রাহকদের নিকট অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে সাব-রেজিষ্টার সাময়িক সাসপেন্ড করাসহ দলিল লেখক সনদ বাতিল করার হুমকি দিচ্ছে, এতে করে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনছুর আলী মন্ডল বলেন,তিনিসহ দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি সামসুল হক মন্ডল, ও দলিল লেখক মোস্তাহারুল ইসলাম রিপন সাব রেজিষ্টারের নানা অনিয়মের অভিযোগ স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকের নিকট উত্থাপন করেন। এঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় শৃংখলা ভঙ্গের অপরাধে তাদের তিন জনকে সাময়িক সাসপেন্ড করে কারন দর্শনানোর নোটিশ দেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে সাব রেজিষ্টার রিপন চন্দ্র মন্ডল বলেন অফিসের শৃঙখলাভঙ্গ ও একজন অফিস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর দায়ে তাদের কারন দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে সাব রেজিষ্টারের অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চলতি সনে ৪৫৫৭ নং দলিলে উপজেলার দক্ষিন বাসুদেবপুর মৌজার ১৬২ নং দাগে সাড়ে তিন শতক জমি মাত্র ৫ লাখ টাকায় রেজিষ্টারী হয়েছে, অথচ ওই দাগে সাত শতক জমি ২০২০ সালের ২৪০০ নং দলিলে ২৭ লাখ টাকায় রেজিষ্টারী হয়েছিল, সে অনুযায়ী সাড়ে তিন শতক জমির মূল্য হয় ১৪ লাখ টাকা, কিন্তু মাত্র পাঁচ লাখ টাকায় রেজিষ্টারী হওয়ায় সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব ঘাটতির ঘটনা ঘটেছে। একই ঘটনা ঘটেছে আরো কয়েকটি দলিলে, যেখানে বর্তমানে বাস্ত ভিটা হিসেবে রূপান্তরিত হওয়া জমিও ডাঙ্গা বা দলা শ্রেনীতে রেজিষ্টারী হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তবে সাব রেজিষ্টার রিপন চন্দ্র মন্ডল বলছেন, জমির বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন ঘটলেও রেকর্ডীয় শ্রেনীর পরিবর্তন ঘটেনি, তিনি বলেন রেকর্ডীয় শ্রেনীতে মূল্য কম থাকায় তিনি কমদামে রেজিষ্টারী করেছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ