নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সবশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়শিয়া গিয়েছিল সাধারণ একটা দল হিসেবে। তবে সেই দলে অসাধারণ এক ফুটবলার ছিলেন, নাম লুকা মদ্রিচ। এই মিডফিল্ডারের নৈপুণ্যে ২০১৮ সালের বিশ্বসেরার আসরে ক্রোয়শিয়া ফাইনাল খেলেছিল। যদিও অপ্রতিরোধ্য ফ্রান্সেকে শেষমেশ থামাতে পারেনি ক্রোয়াটরা। তবে ছোট প্রাত্যাশা নিয়ে এসেও, বিশ্বকাপে রানার্স-আপ হয়ে চারদিকে হইচই ফেলে দিয়েছিল ডালিচের দল। ক্রোয়শিয়ার এই অনন্য অর্জনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল মদ্রিচের। এই মিডফিল্ডারের হাতেই ওঠে রাশিয়া বিশ্বকাপের গোল্ডেন বলের স্বীকৃতি। বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে না পারলেও, মদ্রিচের গোল্ডেন বল পাওয়াটা, গোটা ক্রোয়শিয়ার জন্যই বিশাল সান্ত¦না হিসেবে কাজ করেছে। আর জিদানের পর পুনঃরায় কোন মিডফিল্ডার ও রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবলার এই পুরষ্কারটি নিজের করে নেন।
বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচেই ক্রয়শিয়ার মধ্যমাঠের প্রাণ ছিলেন মদ্রিচ। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে ১টি গোল করেন এই মিডফিল্ডার। তবে পরের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মদ্রিচের দূরপাল্লার শট গোলে পরিণত হলে ক্রোয়শিয়া দলেরই আত্মবিশ্বাস ও ছন্দ বদলে যায়। তারা রীতিমত উড়তে থাকে। যা ফাইনাল পর্যন্ত বহাল ছিল।
সেকেন্ড রাউন্ডে ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের ডেনমার্কের বিপক্ষে ম্যাচ ১-১ ব্যধানে ড্র থাকে। তবে ডেনিশদের পাওয়ার ফুটবলকে একদমই মধ্য মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে দেননি মদ্রিচ। টাই-ব্রেকে গোল করে দলকে দারুন উজ্জোবিত রাখেন তিনি। ক্রোয়েটরাও ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। সেখানে স্বগতিক রাশিয়ার বিপক্ষেও ম্যাচ ২-২ ব্যবধানে ড্র ছিল। ক্রোয়শিয়ার দ্বিতীয় গোলটি এসেছিল মদ্রিচের পাস থেকেই। এই ম্যাচেও টাই-ব্রেকে গেলে, মদ্রিচ সফলভাবে পেনাল্টি থেকে বল জালে পাঠান।
সেমি ফাইনালে অসম্ভব চাপে ছিল ক্রোয়শিয়া। কারন ইংলিশ মিডিয়া, ‘থ্রি লায়ন্সদের হাতে শিরোপা’ তুলেই দিয়েছিল ম্যাচের আগে। মদ্রিচ সেমিতে কোন গোল বা এসিস্ট না পেলেও তার সেরা ম্যাচটি খেলেন। তাতেই ফিকে হয়ে যায় ইংলিশদের ‘শিরোপা ঘরে আসছে’ বলে তোলা রব। ম্যাচটি ২-১ ব্যবধানে জিতে ফাইনলে উঠে ডালিচের দল। যেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল অপ্রিরোধ্য ফ্রান্স।
মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ফরাসীদের বিপক্ষে ৪-০ গোলে হেরে যায় ক্রোয়শিয়া। তাই শেষ পর্যন্ত আর সোনালী শিরোপা উঁচিয়ে ধরা হয়নি মদ্রিচের। তবে বেলজিয়ামের এডিন হ্যাজার্ড এবং ফ্রান্সের অ্যান্তোনি গ্রিজম্যানকে পিছিনে ফেলে, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হইয়েছিলেন মদ্রিচ। এমনকি এর রেশ ধরে ব্যালন ডি অ’রের পুরষ্কারও পান তিনি। যদিও ক্ষেত্র বিশেষে বলা হয়, সেবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগার শিরোপা জয়ে অসামান্য অবদানের জন্য পুরষ্কারটা মদ্রিচের এক সময়ের সতীর্থ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পাওয়ার কথা ছিল। তবে তাতে খাটো হয় না ক্রোয়াট মিডফিল্ডারের অবদান।
জিনেদিন জিদানের পর (২০০৬) আবারও কোন রিয়ালের ফুটবলার গোল্ডেন বলের পুরষ্কার পায় সবশেষ বার। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর হাত থেকে ট্রফি নেওয়ার পর ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচকে আলিঙ্গন করেন মদ্রিচ। সেই সময় দেশের প্রেসিডেন্টকে দারুণ এক কথা বলেছিলেন মদ্রিচ, ‘আমি পুরস্কারের জন্য গর্বিত। ভক্তদের অবিশ্বাস্য সমর্থণ আমাকে সুখী করে তুলেছে। আপনি জানেন যে, পরাজয়ের পরেও আমরা বড় কিছু অর্জন করেছি।’
যা আজও আত্মবিশ্বাসের এক অমরগাঁথা হয়ে আছে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।