Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কৃষি বিভাগের সহযোগিতা না পাওয়ায় প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না কৃষকের

মিরসরাইয়ে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি

| প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আমিনুল হক, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে সরিষা আবাদ। সঠিক উদ্যোগ, প্রচারণা এবং কৃষি বিভাগের তৎপরতার অভাবে প্রত্যাশার তুলনায় আশানুরূপ বৃদ্ধি পাচ্ছে সরিষা আবাদ। অথচ মিরসরাইতে প্রাকৃতিক প্রাচুর্যে সমৃদ্ধ উপযোগী সরিষা ফলনের ব্যাপক মাঠ রয়েছে। উপকূল থেকে পাহাড়ি ঢালুসহ মধ্যবর্তী বিস্তীর্ণ জনপদে সামান্য সহজ ফলন নিয়ম প্রচারণায় এলেই পতিত জমিগুলো ভরে উঠতে পারে হলুদের একাকার উৎসবে। ইতোমধ্যে অনেক গ্রামে সবুজ, বেগুনি, সাদা, সোনালি নানা  মৌসুমী  ফলনের পাশাপশি হলুদের হাসি যেন অন্য সকল সুন্দরকে হার মানিয়ে মাঠজুড়ে আলোর হাসি হয়ে উঠেছে। উপজেলার সোনাপাহাড়, হিঙ্গুলী, করেরহাট, ধূম, আমবাড়িয়া গ্রামের পাহাড়ি এলাকা সংলগ্ন অনেক জমিতেই এখন বেড়েছে সরিষার চাষ। মাঘ মাসের ঠিক এই সময়ে মাঠে-ঘাটে তেপান্তরে সরিষা ফোটার ধুম পড়েছে। এখানকার মাঠগুলো এখনো মাঠজুড়ে সরিষা আবাদ না হলেও যেই মাঠেই সরিষা ফুটেছে, সেই মাঠই যেন সরিষার হাসিতে কৃষকদেরও হাসি লেগে থাকে। হলুদের চাদরে গাঢ় সোনালি আভায় গোটা প্রান্তর হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত আলোকময়। এই প্রতিবেদক মিরসরাইয়ের সোনাপাহাড় ও হিঙ্গুলী গ্রামের অনেক সরেজমিনে অনেক সরিষা ক্ষেত আলোতে ঝলমল করতে দেখে।  সোনাপাহাড়ে গত বছর দেখা যায়, কয়েকটি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পায়নি সরিষা চাষ। আমবাড়িয়া গ্রামের কয়েকটি ফসলের মাঠে গত বছর ও মশুর, হেলোইন, জিরা, বাউলা, মোটরসুঁটি ও ধনেপাতার পাশাপাশি একই ক্ষেতে কিছু সরিষাও চাষ করতে দেখা গেছে। এবার আর তা চোখে পড়ছে না। কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দেশে এখন ১৫ জাতের সরিষার ফলন হচ্ছে। মিরসরাইতে চাষ হওয়া এই জাতের সরিষা হেক্টরে ১ হাজার ৬শ’ কেজি থেকে ২ হাজার কেজি উৎপাদন হবে। এ সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানিনির্ভরতা কমবে। প্রতি কেজি সরিষা থেকে ৫০০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। এ সরিষা আবাদের মাত্র ৯০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে কাটিং করা যায়। তারপর ক্ষেতে ইরি-বোরো আবাদ করা যায়। বারি সরিষা আবাদ করে কৃষক বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বিশাল মুনাফা করতে পারবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে উক্ত তথ্য জানানো হয়। একদিকে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে আবাসনের জন্য দিন দিন কৃষিজমি কমছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণের পর ‘বারি-১৫’ জাতের সরিষা আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। তিনি স্থানীয় জাতের তুলনায় বারি সরিষার ফলন তিনগুণ পাচ্ছেন। এ সরিষা চাষ অত্যন্ত লাভজনক। আগামীতে এ অঞ্চলের কৃষকরা সরিষা, মোটরসুঁটি, মশুর, খেসারি ইত্যাদি চাষাবাদেও লাভবান হতে পারবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম ম-ল বলেন, বারি জাতের সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানিনির্ভরতা কমবে। এ সরিষার তেলের গুণগতমানও বেশ ভালো। চট্টগ্রামের মিরসরাইসহ বিভিন্ন এলাকা এই সরিষা আবাদের জন্য উপযোগী। মিরসরাইয়ের উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, মিরসরাই উপজেলায়ও  তেল, ডাল ও ধানজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অগ্রগতিতে মিরসরাইতেও সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধকরণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষি

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ