Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এই প্রথম আলোচ্যসূচিতে যোগ হলো ক্ষতিপূরণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

পৃথিবী বিপদ সংকেত পাঠাচ্ছেÑ এই সতর্কবাণীর মধ্য দিয়ে মিসরে রবিবার জাতিসংঘের আবহাওয়া পরিবর্তনবিষয়ক সম্মেলন কপ-২৭ শুরু হয়েছে। ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে দরিদ্র দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবি প্রথমবারের মতো কপ (যার সম্পূর্ণ রূপ ‘কনফারেন্স অব পার্টিজ’) সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যুক্ত হয়েছে। এবারের আয়োজনের সভাপতি সামেহ শুকরি উদ্বোধনী দিনে এ তথ্য জানান। কপ-২৭ উদ্বোধনের সময় মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সম্মেলনের সভাপতি সামেহ শুকরি বলেন, এবারের সম্মেলন কপ এবং প্যারিস সমঝোতার আলোকে বিদ্যমান ফাঁকফোকর দূর করতে প্রথমবারের মতো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্থির একটি আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচি তৈরি করা হয়েছে। এর লক্ষ্য তহবিলের ব্যবস্থা করার আলোচনার পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলার বিষয়ে সাড়া দেওয়া। লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত মিসরের শার্ম-এল-শেখ অবকাশকেন্দ্রে আয়োজিত হয়েছে কপ-২৭। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আবহাওয়া নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা এতে যোগ দেওয়া শুরু করেছেন। ধীরে ধীরে আসতে শুরু করবেন বিশ্বনেতারা। আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে আবহাওয়া ইস্যুতে আলোচনা, তর্কবিতর্ক ও দর-কষাকষি চলবে। উদ্বোধনী দিনে নির্ধারিত হওয়া সূচি ধরেই আলোচনা চলবে। প্রতিবারের মতো এবারও কপ সম্মেলন ঘিরে উন্নত বিশ্বের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো দুই শীর্ষ দূষণকারীর ভূমিকার পাশাপাশি ইউরোপের সমন্বিত ভূমিকার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করবে। এসব দেশের কাছ থেকে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর ক্ষতিপূরণপ্রাপ্তির বিষয়ে নিছক আলোচনা ছাড়া কোনো গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়নি। অথচ উন্নত দেশগুলোই সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী। এবারের কপ সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা যোগ দেবেন। তবে বিশ্বের অন্যতম প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি চিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আসছেন না। আশা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও শীর্ষ ইউরোপীয় নেতারা সম্মেলনে আসছেন। সব মিলিয়ে আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা আন্দোলনকর্মীসহ বিভিন্ন স্তরের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ জমায়েত হবেন মিসরে। আজ সোমবার থেকে আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে সম্মেলনে ভিড় বাড়বে। এবারের কপ সম্মেলনের লক্ষ্য সম্পর্কে সামেহ শুকরি বলেন, এবারের কপে ক্ষয়ক্ষতির আলোচনায় দায়বদ্ধতা নির্ধারণ কিংবা ক্ষতিপূরণ আদায়ে বাধ্য করার বিষয় থাকবে না। তবে এর সময়সীমা যাতে ২০২৪ সালের পরে না যায়, সেই দিকে আলোচনা নিয়ে যাওয়া হবে। শুকরি বলেন, আলোচ্যসূচিতে ক্ষতিপূরণের বিষয়টির অন্তর্ভুক্তি আবহাওয়া পরিবর্তনে ক্ষতির শিকার হওয়া দেশগুলোর প্রতি সংহতির ইঙ্গিতবাহী। বিশ্লেষকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে পৃথিবীর উষ্ণায়ন এবং সে কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা এখন বেশ পুরনো আলোচনা। এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এর প্রভাব প্রশমনের উপায় খোঁজা এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণের জোরদার প্রতিশ্রুতি দেওয়া। উন্নত দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হলেও এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাসের ক্ষেত্রেও অঙ্গীকার যথেষ্ট মাত্রায় পূরণ করেনি দেশগুলো। এসব সত্ত্বেও গত কিছুদিন ধরে জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংগঠন ও বেসরকারি সংস্থাগুলো (এনজিও) আশাবাদ জানিয়ে বলছে, কপ-২৭ হবে অঙ্গীকার পূরণের। রয়টার্স, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ