বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন : ‘আল্লাহ মানুষকে তাদের কৃত কর্মের জন্য শাস্তি দিলে ভূপৃষ্ঠে কোনো জীব-জন্তুকেই রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তাদের অবকাশ দিয়ে থাকেন।’ (সূরা ফাতির : আয়াত-৪৫)। কেননা, অনেক গোনাহ তো আল্লাহপাক মাফই করে দেন। যেগুলো ক্ষমা করেন না, সেগুলোর পুরোপুরি শাস্তি পৃথিবীতে দেন না, বরং সামান্য স্বাদ আস্বাদন করার, যাতে করে তারা ফিরে আসে।
আর মানুষকে ন্যায় ও কল্যাণের পথে ফিরে আসার জন্যই আল্লাহ পাক পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) কে এই ধরা বক্ষে দাঈ বা আহ্বানকারী রূপে প্রেরণ করেছেন এবং তাঁকে চিরস্থায়ী সংবিধান আল কোরআন দিয়েছেন। যাতে করে মানুষ সকল প্রকার বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে পারে এবং আল্লাহ পাকের রহমত ধন্য হতে পারে ও তাঁর স্মরণে নিমগ্ন থাকতে পারে। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : ‘আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ।’ (সূরা আনকাবুত: আয়াত- ৪৫)।
স্মরণ রাখা দরকার যে, ‘আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ’ বাণীটির কয়েকটি অর্থ হতে পারে। যথা : (ক) আল্লাহর জিকির সবচেয়ে বড় ইবাদত। এতদর্থে সালাত বড় ইবাদত হওয়ার কারণ হচ্ছে, এতে আল্লাহর জিকির আছে। সুতরাং যে সালাতে যিকির বেশি সে সালাত বেশি উত্তম। (তাফসিরে ইবনে কাসির)।
(খ) আল্লাহর স্মরণ অনেক বড় জিনিস, সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ। মানুষের কোনো কাজ এর চেয়ে বড় নয়। আর আল্লাহর স্মরণেই মানুষের অন্তরাত্মা শান্তি লাভ করে। (তাফসিরে তাবারি)। (গ) বস্তুত : বান্দাহর আল্লাহকে স্মরণ করার চাইতে আল্লাহ কর্তৃক বান্দাহকে স্মররণ করা অনেক বড় জিনিস। আল কোরআনে মহান আল্লাহপাক বলেন : ‘তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ করবো।’ (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-১৫২)।
সুতরাং বান্দাহ যখন সালাতে বা বাইরে আল্লাহকে স্মরণ করবে, তখন অবশ্যই আল্লাহ পাক ও তাকে স্মরণ করবেন। আর বান্দাহর আল্লাহকে স্মরণ করার তুলনায় স্বয়ং আল্লাহপাকের বান্দাহকে স্মরণ করা অনেক বেশি উচ্চমানের। বান্দাহ যখন আল্লাহকে স্মরণ করে তখন আল্লাহপাক ওয়াদা অনুযায়ী জিকিরকারী বান্দাহকে ফিরিশতাদের সমাবেশেও স্মরণ করেন।
আল্লাহ পাকের এই স্মরণই ইবাদতকারী-বান্দহর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। এতে এদিকের ও ইঙ্গিত আছে যে, আল্লাহর জিকির ও সালাত আদায়ের মধ্যে গোনাহ থেকে মুক্তি লাভের আসল কারণ হলো আল্লাহপাক স্বয়ং জিকিরকারী ও সালাত আদায়কারীর দিকে অভিনিবেশ করেন এবং ফিরিশতাদের সমাবেশে তাকে স্মরণ করেন। (তাফসিরে তাবারি; তাফসিরে মায়ালেমুত্ তানজিল)। সুতরাং সকল প্রকার বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার একটিই পথ। তাহলো আল্লাহর পথে ফিরে আসা। আসুন আমরা এদিকে মনোযোগী হইÑ আমীন!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।