Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘কোহলি ফেক ফিল্ডিং করেছে’

বললেন আকাশ চোপড়া আইসিসির পক্ষে ভারতের সাফাই!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের বিতর্কিত ফেক ফিল্ডিং নিয়ে আলোচনা যেন থামছেই না। এবার সেখানে নতুন মাত্রা যোগ করলেন আকাশ চোপড়া। ভারতের সাবেক এই ব্যাটসম্যানের মতে, বাংলাদেশ যে অভিযোগ করেছে তা পুরোপুরি সঠিক। তবে আম্পায়াররা না দেখায় করার কিছুই ছিল না। এখানেই শেষ নয়। ঐ ম্যাচের আরো বেশক’টি বিষয় নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। ভেজা মাঠে বাংলাদেশকে তড়িঘরি করে, অনেকটা জোর করেই খেলতে বাধ্য করা, বল মাটিতে বাউন্স করে উইকেটরক্ষক কার্তিকের হাতে গেলেও আম্পায়ার নির্দ্বিধায় তা আউট দিয়ে দেওয়া কিংবা ব্যাটিংয়ের সময় কোহলির ‘না’ বল কল করা।

অ্যাডিলেইডে গত বুধবার বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ভারতের বিপক্ষে ৫ রানে হারে বাংলাদেশ। ম্যাচের পর নুরুল হাসান সোহান ফেক ফিল্ডিং থেকে ৫ রান না পাওয়ায় আক্ষেপের কথা জানান। এটি নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠতে সময় লাগেনি। আকাশ চোপড়া এক টুইটে জানতে চান, আসলেই ফেক ফিল্ডিংয়ে কোনো ঘটনা ম্যাচে ঘটেছে কি না। ততক্ষণে ফেক ফিল্ডিংয়ের ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে। যেখানে পরিষ্কার ফুটে ওঠে অভিযোগ সঠিক, বাংলাদেশের রান তাড়ায় সপ্তম ওভারে বল ছাড়াই থ্রো করার ভঙ্গি করেছিলেন বিরাট কোহলি।
অনেকেই এই ভিডিও ক্লিপের দিকে চোপড়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আইসিসির আইন অনুযায়ী, ‘কোনো ফিল্ডার তার কথা বা কাজ দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাটসম্যানের মনোযোগ ভিন্নমুখী করলে বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা কিংবা বাধার সৃষ্টি করলে, তা অন্যায্য হবে।’
ফেক ফিল্ডিংয়ের শাস্তি হিসেবে ব্যাটিং দলের সঙ্গে ৫ রান যোগ হয় এবং বলটিকে ঘোষণা করা হয় ‘ডেড।’একই সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী, ফিল্ডার ইচ্ছাকৃতভাবে এরকম কিছু করেছেন কিনা, সেটির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার আম্পায়ারদের বা মাঠের কোনো একজন আম্পায়ারের। ওই ঘটনার সময় ক্রিজে থাকা ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত তাৎক্ষণিক আম্পায়ারকে জানান। তবে আম্পায়ার তখন বলেছিলেন যে তাদের নজরে পড়েনি। আর এখানেই ভারত পার পেয়ে যায়।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ফেক ফিল্ডিং নিয়ে কথা বলার সময় ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া বলেন, বাংলাদেশের অভিযোগ সঠিক ছিল, ‘হ্যাঁ, ওটা শতভাগ ফেক ফিল্ডিং ছিল কারণ যেভাবে সে (কোহলি) বল থ্রো করার ভঙ্গি করেছিল। আম্পায়াররা যদি দেখত, তাহলে আমাদের ৫ রান পেনাল্টি করা হতো এবং আমরা কেবল ৫ রানেই জিতেছি। তাই এই জায়গায় আমরা বেঁচে গেছি। তবে কেউ এটা দেখেনি, তাই এখন আর কিছুই করার নেই।’
ফেক ফিল্ডিংয়ের শাস্তির কঠোরতাকে মনে করিয়ে দিয়ে এই বিষয়গুলোতে আম্পায়ারদের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানান এই ক্রিকেট বিশ্লেষক, ‘৫ রান পেনাল্টি হবে, যে দুই রানের জন্য দৌড়াচ্ছিলো সেটাও পাবে। ডেড বলও হবে। পরের বল কোন ব্যাটার খেলবে সেটাও তারাই ঠিক করবে। ফেইক ফিল্ডিংয়ের জন্য শাস্তি অনেক বেশি, অবিশ্বাস্য! আবারও আমরা এটা করলে আম্পায়াররা সজাগ থাকবে।’ তবে ক্ষতি যেটা হবার হয়ে গেছে বাংলাদেশের। এখানে স্বদিচ্ছা ও নিরপেক্সার প্রশ্ন তুলে আম্পায়ারদের জোর সমালোচনা করেছেন আরেক সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফর। তিনি বলেন, ‘আম্পায়ার দেখতে না পারলেও সেখানে অনেক ক্যামেরা ছিল দ্বিতীয়বার দেখার জন্য।’
এদিকে, ম্যাচে বাংলাদেশ ইনিংসের সপ্তম ওভার পর বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হলে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে যায় ভারত। কারণ, ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে তখন ১৭ রানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। বৃষ্টি থামার পর মাঠ ভালোভাবে না শুকাতেই শুরু করা হয় খেলা, এমন অভিযোগও ওঠে। ভারতকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিসিসিআই প্রধান রজার বিনি গতপরশু গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দিলেন উত্তর, ‘এটা সঠিক নয়। আমরা মনে করি না, আইসিসি আমাদের পক্ষপাতিত্ব করে। সবাই একই সুযোগ-সুবিধা পায়। কোনোভাবেই এটা (পক্ষপাতিত্ব করে) বলার উপায় নেই। অন্য দল থেকে আমরা ভিন্ন কী পাই? ভারত ক্রিকেটের পাওয়ার হাউজ, তবে আমাদের সবার সঙ্গে একই আচরণ করা হয়।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ