Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাপক উৎসাহ ও ধর্মীয় মর্যাদায় ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উদ্যাপন

| প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আলোচনা সভা দোয়া মাহফিলে মহানবী (সা.) আদর্শ পরিপূর্ণভাবে অনুসরণের আহ্বান


স্টাফ রিপোর্টার : ব্যাপক উৎসাহ, আনন্দ ও সর্বোচ্চ ধর্মীয় মর্যাদার মধ্য দিয়ে গত মঙ্গলবার মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিবস পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে রাজধানী, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও সিলেটসহ সারাদেশের জেলা-উপজেলা শহরগুলো জশনে জুলুছ এবং মিলাদ মাহফিলের নগরীতে পরিণত হয়েছিল। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন মসজিদ এবং অনেক মাদরাসায় মিলাদ ও দোয়ার মাহফিলের মাধ্যমে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করা হয়। এছাড়া দেশের সব দরবার খানকা মাজারগুলোয় বর্ণাঢ্য ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ দিনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল সকাল থেকে শুরু করে আছর নামাজ পর্যন্ত একের পর এক বর্ণাঢ্য জুলুছ বের হওয়া। পাশাপাশি ছিল জুলুছের আগে ও পরে ওয়াজ, আলোচনা ও মিলাদ ক্বিয়াম মাহফিল ও তবারক বিতরণ।
বিভিন্ন ওয়াজ ও আলোচনা মাহফিলে ওলামায়ে কেরাম এবং বক্তারা বলেন, ইবনে কাছির তাফসীর গ্রন্থের মিলাদে মোস্তফা অধ্যায়ে (পৃ. ২৯/৩০) উল্লেখ করা হয়েছে, নবম হিজরিতে তাবুকের যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে রাসূল (সা.) দেখতে পেলেন, হজরত আব্বাস (রা.) তার হুজরায় মিলাদুন্নবী (সা.) সম্ভবত কবিতা আকারে পাঠ করছেন। রাসূল (সা.) তা দেখে মন্তব্য করেন, ‘তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত অনিবার্য হয়ে গেল।’ রাসূল (সা.)-এর এ মন্তব্য থেকেই বোঝা গেল, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আনন্দ ও আলোচনা করলে রাসূল (সা.)-এর শাফায়াত পাওয়া যাবে নিশ্চিতভাবে। অন্য কোনো পন্থায় এত সহজে শাফায়াত পাওয়ার পদ্ধতি বিরল। বক্তারা বলেন, আবু লাহাব ছিল রাসূল (সা.)-এর প্রকাশ্য ও বড় শত্রু, যার ধ্বংসের কথা আল্লাহ স্বয়ং সূরা লাহাবে বলেছেন। কিন্তু রাসূল (সা.)-এর জন্মের খবরে খুশি হয়ে আবু লাহাব এক নির্দেশে তার এক দাসীকে মুক্ত করে দিয়েছিল। এ কারণে আবু লাহাব কবরে প্রতি সোমবার তার নির্দেশ দেয়া আঙুল থেকে প্রবাহিত পানি পানের সুযোগ পায় এবং কবরের আজাব হাল্কা হয়। বক্তাগণ আরো বলেন, রাসূল (সা.) উনার সৃষ্টি সমগ্র সৃষ্টির মূল এবং আল্লাহর প্রদত্ত নেয়ামতে আকবর। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বোচ্চ এ নেয়ামতের জন্য খুশি প্রকাশের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, এ নিয়ামতের খুশি সঞ্চিত সকল কিছু হতে উত্তম। এরপরও এজিদের উত্তরসুরিরা ঈদে মিলাদুন্নবী (স:)-কে বিদায়াত বলে গলাবাজি করে সাধারণ মুসলমানদেরকে নাজাতের বড় ওছিলা থেকে বঞ্চিত করছে। এতদস্বপ্নেও মিলাদুন্নবী (সা:)  উনার খুশি ও জশনে জুলুছ বছর বছর বেড়েই চলছে। এদিনটি ছিল সরকারি ছুটির দিন।
মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়ার জশনে জুলুস
 শাহ্ সূফী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ম.)
গত মঙ্গলবার আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজ ভান্ডারীয়ার উদ্যোগে এবং মাইজভান্ডার দরবার শরীফের বর্তমান ইমাম আওলাদে রাসূল (দ.) হযরত শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল্-মাইজভান্ডারী মাদ্দাজিলুহুল আলীর নেতৃত্বে রাজধানী ঢাকায় ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে জশনে জুলুস ও আন্তর্জাকি শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে জশনে জুলুস (ধর্মীয় শোভাযাত্রা) বের হয়ে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়। কলেমা তৈয়্যবা, জাতীয় পতাকা, আন্জুমানের পতাকা এবং নানা ধরনের বাণী ও স্লোগান লিখিত ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিয়ে সারা দেশ থেকে আগত লাখো নবী-ওলীপ্রেমী জনতা জশ্নে জুলুসে অংশ নেন। সভাপতির বক্তব্যে শাহ্সূফী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ম.জি.আ.) বলেছেন, সূফীবাদ হলো শান্তি-সম্প্রীতি ও মানবিক দর্শন। ইসলামের প্রকৃত চর্চা ও অনুশীলনে সূফীবাদই সঠিক পথ। তাই, আইএস, আল কায়েদাসহ বিভিন্ন নামে বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টিকারী জঙ্গিরা কখনো ইসলামের অনুসারী হতে পারে না। ওদের বড় পরিচয় ওরা সন্ত্রাসী, খুনি ও দুর্বৃত্ত। এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। শান্তি মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আমির হোসেন আমু এমপি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জনাব হাসানুল হক ইনু এমপি, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, আমরা কোম্পানিজের চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ ফারুকুদ্দীন আহমেদ, শাহজাদা সৈয়দ ফরহাদউদ্দীন আহমেদ, শাহজাদা সৈয়দ মাশুক-এ মইনউদ্দীন, শাহজাদা সৈয়দ হাসনাইন-এ-মঈনুদ্দীন।  অতিথি ও আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খান, ইরানের রাষ্ট্রদূত  ড. আব্বাস ওয়েজ দানবী, মরক্কো থেকে আগত ড. আজিজ ইদ্রিসি, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লি.-এর উপদেষ্টা নাসির আহমেদ চেšধুরী, ইউক্রেন থেকে আগত মুফতী আহমদ তামিম, ইন্ডিয়া থেকে আগত মো: আব্বাস নিয়াজী, সিঙ্গাপুর থেকে লেয়াকত আলী বিন মো: ওমর, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ড. শেখ আহমদ তিজানী বিন ওমর, মালেশিয়া থেকে আগত শেখ ইসমাইল বিন কাশিম, তিউনিশিয়া থেকে আগত মাজেন শেরিফ, ড. খালেদ চৌকেট প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে  মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, যতই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্ত করা হোক, তা কখনো সফল হবে না। বাংলাদেশে সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদীদের ঠাঁই হবে না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক দেশ। এখানকার জনগণ সূফীবাদী মানবিক ইসলামে বিশ্বাসী।
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ঢাকা মহানগর
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা ইমাম হায়াত বলেন, দয়াময় আল্লাহ তাআলার পরম রহমত হিসেবে সমগ্র মানবম-লীর দোজাহানের সর্বকল্যাণ ও মুক্তি সাধনায় দুনিয়ায় প্রাণাধিক প্রিয় নবী (সা.)-এর শুভাগমন ঈদে আজম উদ্যাপন উপলক্ষে বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে আজ এক বিশাল শোভাযাত্রা নগরীর জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাইকোর্ট মাজার প্রাঙ্গণে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে সভাপতির ভাষণে ইমাম হায়াত বলেন, আল্লাহতাআলার পক্ষ থেকে প্রাণাধিক প্রিয় নবীর শুভাগমন সত্য-জীবন ও মানবতার অতুলনীয় মহা ঈদ ঈদে আজম। তিনি বলেন, প্রিয় নবীর শুভাগমন স্বয়ং আল্লাহতাআলার নিজেকে প্রকাশ করা এবং মানবম-লীর সাথে আল্লাতাআলার সংযোগ ও বন্ধন তৈরি করার জন্য। মহান প্রিয়নবীর এ শুভাগমন মিথ্যা-দাসত্ব-পাশবতা-বর্বরতা-পরাধীনতা-স্বৈরতা-দস্যুতা থেকে আত্মা ও জীবনের সব দিকে উদ্ধার ও মুক্তির লক্ষ্যে।
ইমাম হায়াত বলেন, ইসলামের ছদ্মনামে বাতেল ফেরকা, বস্তুবাদী মতবাদ এবং বিভিন্ন ধর্মের নামে অধর্ম উগ্রবাদ দুনিয়ায় প্রিয় নবীর শুভাগমনের দান ও লক্ষ্য থেকে মানবম-লীকে বঞ্চিত করাতে দুনিয়াতে ধ্বংসের কাঠামো তৈরি করেছে।
ইমাম হায়াত বলেন, দ্বীনী মূল্যবোধভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, একক গোষ্ঠীর স্বৈরতামুক্ত, সর্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও অবিভাজ্য বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াতই, বাতিল জালিম অপশক্তির রুদ্ধতার ফাঁস থেকে জীবন ও মানবতার মুক্তির একমাত্র উপায় এবং মহান ঈদে আজমের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন ও আলোকপ্রবাহ জারি রাখার একমাত্র পথ। আলোচনা শেষে পবিত্র সালাতুস সালামের মাধ্যমে শোকরিয়া আনন্দ জুলুস ও সমাবেশ সম্পন্ন হয়।
কোটি কণ্ঠে মিলাদ শরীফ
১২ রবিউল আউয়াল উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘কোটি কণ্ঠে মিলাদ শরীফ’ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি ‘আন্তর্জাতিক সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উদযাপন কমিটির উদ্যোগের অনুষ্ঠানে হামদ, নাত, মিলাদ পাঠ করে ‘কোটি কণ্ঠে মিলাদ উদযাপন কমিটি’ নামে আরেকটি সংগঠন। একযোগে মিলাদ শরীফ শুরু হয় সকাল ১০টা বেজে ৩০ মিনিটে।
অনুষ্ঠান থেকে ১২ই রবিউল আউয়াল উপলক্ষে সরকারি উদ্যোগে ইসলামী বই প্রকাশ, বোনাস-ভাতাপ্রদানসহ বিভিন্ন দাবি তোলা হয়।  
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রকার তবারক বিতরণ করেন চ্যাম্পিয়ন কর্পোরেশন, সততা মেটাল, মদীনা মেটাল, বিশিষ্ট সমাজ সেবক শাহীন ভুইয়া এবং ব্যবসায়ী সোহেল রেজা। অনুষ্ঠান শেষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালি জাতীয় মসজিদে বায়তুল মোকাররমে গিয়ে শেষ হয়।  
‘আশেকানে গাউছিয়া মাইজভান্ডারীয়া’
গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে ‘আশেকান গাউছিয়া রহমানিয়া মইনিয়া সহিদীয়া মাইজভান্ডারীয়া’- এর উদ্যোগে গত মঙ্গলবার সেমিনার ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বেলা ১২টায় জশ্নে জুলুসে (র‌্যালি) বের হয়। র‌্যালিটি জিরো পয়েন্ট ও প্রেসক্লাব হয়ে মহানগর নাট্যমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন  দরবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আলহাজ্ব শাহ্ সূফি মাওলানা সৈয়দ সহিদ উদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী (মাঃ জিঃ আঃ)। এরপর বিশ্ববাসীর মঙ্গল কামনায় দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমার রাঙা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য হক্কানী উলামা কেরামগণ, রাজনীতিবিদ, আশেকান ও ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মুশুরীখোলা দরবার শরীফ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই আল্লাহ পাকের সৃষ্টি জগতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। আর সেই নিয়ামতের শুকরিয়া সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাঁর আগমনের খুশি উদযাপন ফেরেস্তানের সুন্নাত আর আল্লাহ পাকের নির্দেশ। যুগে যুগে আসহাবে রাসূল থেকে তাবেঈ, তাবে তাবেঈগণ মহাসমারোহে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন। এ উপলক্ষে নারিন্দায় ঐতিহ্যবাহী মুশুরীখোলা দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব কেবলাহ আল্লাহ শাহ মুহাম্মদ আহছানুজ্জামান (মা.জি.আ.) এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকারকে সমুন্নত রেখে বিশ্ববাসী সমানে মানবতা ও মানবাধিকারের বেনজির উদাহরণ সৃষ্টি করেন। ইসলামের সাম্য ও ভ্রাতৃত্বে অনন্য দর্শনকে তুলে ধরেছিলেন। তাই ইসলামের নামে অন্য ধর্মের মানুষের অধিকার হরণ যেমনিভাবে কোনো প্রকৃত ঈমানদাররা মেনে নিতে পারে না, তেমনিভাবে মিয়ানমার, কাশ্মীর, ফিলিস্তিনিসহ মুসলিম দেশে দেশে গণহত্যাও বরদাশত করতে পারে না। মুসলিম গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব। মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- দারুল উলুম আহসানিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক উপাধ্যক্ষ আল্লামা আনোয়ারুল্লাহ, উপাধ্যক্ষ আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, আরবী প্রভাষক আল্লামা আবুল বাশার প্রমুখ। বক্তব্য শেষে দেশ, জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করেন দরবার শরীফের পীর সাহেব কেবলাহ আল্লামা শাহ মুহাম্মদ আহচানুজ্জামান (মা.জি. আ.)।
দাওয়াতে ইসলামী জুলুস
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন আদর্শ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে দাওয়াতে ইসলামী। পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে আয়োজিত জশনে জুলুস শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা এ আহ্বান জানান। বিশ্বনবী (সা.)-এর জীবন আদর্শ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন দাওয়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুফতি জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী ও মুবাল্লিগ মাওলানা রিয়াজ আত্তারি। তিনি বলেন, মিলাদুন্নবী (সা.) আমাদের জন্য বড় নেয়ামত। এই নেয়ামত প্রাপ্তির জন্য আমাদের খুশি প্রকাশ করা উচিত। মুফতি জহির আরো বলেন, প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বিশ্বের রহমত হিসেবে আমাদের মুক্তির দূত হিসেবে এই পৃথিবীতে শুভাগমন করেছিলেন। আমরা যদি তার জীবনাদর্শ মনে-প্রাণে ধারণ করতে পারি তাহলে অবশ্যই সব সঙ্কটের সমাধান করে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দাওয়াতে ইসলামীর বিপুলসংখ্যক মুবাল্লিগ ও আশেকে রাসূল (সা.) ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে রাজধানীর সায়েদাবাদের ফয়জানে মদিনা থেকে জশনে জুলুস বের করে। জুলুসটি সায়েদাবাদ, টিকাটুলি, মতিঝিল, বায়তুল মোকাররম, পল্টন হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে যায়। সেখানে সংক্ষিপ্ত  সমাবেশ করে হাইকোর্ট মাজার হয়ে সায়েদাবাদে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে ফয়জানে মদিনা মসজিদে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ঈদে মিলাদুন্নবীর (সা.) কর্মসূচি শেষ করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিলাদুন্নবী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ