Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘জীবনের সকল ক্ষেত্রে রাসূলের (সাঃ) আদর্শ গ্রহণ করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৪৩ পিএম

সমাজে যেভাবে অন্যায় চলছে তা বন্ধ করতে হলে অবশ্যই নবী (সা.) এর দেখানো আদর্শ মত কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, আদর্শ সমাজ বিনির্মানে রাসূলের (সা) সিরাতকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে। প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সা. এর দেখানো মানবীয় মূল্যবোধের প্রতি আমাদের নজর রাখতে হবে। তাকে মানার মাধ্যমেই কেবল মানবতা সঠিক পথে পরিচালিত হবে।

শনিবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর ইনিস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিবিআই) মিলনায়তনে জাতীয় সিরাত উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত “আদর্শ সমাজ বিনির্মানে রাসূল (সা)” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আজকে সমাজে যেভাবে অশ্লীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানে আল্লাহর গজব নেমে আসাটাই স্বাভাবিক। সুতরাং অশ্লীলতা বন্ধে আমাদের প্রিয় নবী সা. এর দেখানো পথে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহর রাসূল সা. শত্রুর সাথে মানবাধিকারে যে দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন পৃথিবীর ইতিহাসে তা নজির স্থাপিত হয়ে আছে। আজ সমাজে যে অশান্তি অবিচার অমানবিকতা তা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে অবশ্যই নবী মুহাম্মাদ সা. এর আদর্শ গ্রহণ করতে হবে।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী বলেন, মানুষের জন্য উত্তম আদর্শ হিসেবে মহান আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ (স.) কে সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন। সুতরাং জীবনের সকল ক্ষেত্রে আমাদের মুহাম্মদ সাঃ এর আদর্শকে গ্রহণ করতে হবে। রাসুলকে স. আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জ্ঞান দিয়ে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। ফলে জ্ঞানের ক্ষেত্রে আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হবে। যারা মানবতার দোহাই দিচ্ছে তারাই আবার পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করছে। যারা ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদেরকে একমাত্র মুহাম্মদ (সঃ) কে নেতা মেনে নিয়ে তাঁর আদর্শকে লালন করতে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অধ্যাপক ড. আ ক ম আব্দুল কাদের বলেন, যখন কোন সমাজে সম্প্রতি, কল্যাণকামীতা, সাম্য ও সুবিচার নিশ্চিত হয় এবং তাকওয়ার নীতিতে পরিচালিত হয় তখন তা আদর্শ সমাজে পরিনত হয়। রাসূলুল্লাহ সাঃ নবুওয়াত লাভ তথা আল্লাহর বাণী পাওয়ার পরে সমাজ সংস্কারে মনোনিবেশ করেন। সমাজ বিনির্মানে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ২ টি যুগ ছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে মক্কায় ছিল সংগ্রামের যুগ, তা ছিল ব্যাক্তিগঠন পর্যায়ে এবং ২য় পর্যায়ে মদীনায় ছিল বিজয়ের যুগ, তৈরীকৃত ব্যাক্তিদের নিয়ে সমাজের আমুল পরিবর্তন করে আদর্শিক সমাজ গঠন পর্যায়। ক্ষমতাসীন ও স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন প্রলোভন দেখালেও সামাজ বিনির্মাণের এই কাজ থেকে নবীকে বিরত রাখতে পারেনি। রাসুলের (সা) আদর্শ সমাজ বিনির্মাণের মুল কথা ছিল মানুষের উপর থেকে মানুষের প্রভুত্ব খতম করে আল্লাহর প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য তিনি ইসলামের সুমহান আদর্শের ভিত্তিতে সুশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী গঠন করেন এবং উপযোগী নেতৃত্ব তৈরী করেন। তিনি সকলের মাঝে সম্প্রীতি ও ভাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন, সকলের অধিকার সংরক্ষণ এবং ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করেন। সামাজিক অনাচার ও ব্যাধি সমূহ নির্মূল করেন। নারীর অধিকার ও শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেন। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে পারস্পরিক পরামর্শের তথা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিলেন। রাসুলের সাঃ প্রতিষ্ঠিত সমাজ পৃথিবীর সকল যুগ ও কালের মানুষের জন্য আদর্শ ও রোল মডেল হয়ে থাকবে।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল কালাম পাটওয়ারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকীব নাসরুল্লাহ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিন, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের জেনারেল সেক্রেটারি ড. খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ