Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাগরিকত্ব আইন এবং সিএএ’র পার্থক্য কী? ভারতের নতুন নির্দেশে বিতর্ক কেন?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০২২, ৯:১৯ পিএম

গুজরাটের ভোটের মুখে অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়া নিয়ে বড়সড় চমক দিয়েছে ভারতের বিজেপি সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গুজরাটের দুই জেলা মেহসানা ও আনন্দে বসবাসকারী অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আর তাই নিয়েই শুরু যাবতীয় বিতর্ক। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, কেন্দ্র সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল। এবার দেশের অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাতেও চালু হবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন।

পালটা এসেছে বিরোধী শিবির থেকেও। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবারই চেন্নাই উড়ে যাওয়ার আগে বলে দিয়েছেন, ‘গুজরাটের এই মডেল বাংলায় কার্যকর হবে না। গুজরাটে ভোট বলেই এসব করেছে। আমরা এখানে সবাই নাগরিক। এরাজ্যে সিএএ করতে দেব না।’ শুধু বিরোধীরা নয়, বিজেপির অন্দরেও এ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার যেমন প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, ‘‘পুরনো আইনেই যদি নাগরিকত্ব দেয়া হয় তা হলে সিএএ-র জন্য এত আন্দোলন করা হল কেন?’ অসীম সরকারের এই প্রশ্ন যে বৈধ তাতে সংশয় নেই।

১৯৫৫-র নাগরিকত্ব আইন আর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মধ্যে মূল পার্থক্য হল, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে কোনও ধর্মের উল্লেখ ছিল না। ২০১৯ সালে কেন্দ্র সরকার যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ করিয়েছে তাতে স্পষ্টত ধর্মের উল্লেখ আছে। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে স্পষ্ট বলা আছে, কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূত বা ভারতীয় উপমহাদেশে জন্মানো নাগরিক নির্দিষ্ট মেয়াদের বেশি সময় এদেশে থাকলেই তাকে নাগরিকত্ব দেয়া হবে। এক্ষেত্রে মুসলিম বা অমুসলিম উল্লেখ করা ছিল না।

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনটি মোট ৬ বার সংশোধন করা হয়েছে। ২০১৯ সালে সর্বশেষ সংশোধনে উল্লেখ করা হয়েছে ওই ছ’টি ধর্মের। তাতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে যদি তিন প্রতিবেশী দেশ থেকে অমুসলিমরা এদেশে আসেন তাহলে তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও জৈন সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা উল্লেখ আছে এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সদ্য গুজরাটের দুই জেলায় নাগরিকত্ব নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে তাতেও ছ’টি ধর্মের উল্লেখ করা রয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও জৈন সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। আর সেখানেই আপত্তি বিরোধীদের। তারা বলছেন, বিজ্ঞপ্তিতে ধর্মের উল্লেখ করার অর্থ ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের বিচ্যুতি হয়েছে। সূত্র: টাইমস নাউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ