Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২০১০ : ব্রনখোর্স্টে স্তব্ধ বিশ্ব

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০১ এএম

চলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তবে এরই মধ্যে বিশ্বকাপের আসল উত্তাপ নিয়ে দোর গোড়ায় হাজির ফুটবল। আসছে ২০ নভেম্বর থেকে কাতারে পর্দা উঠতে যাচ্ছে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ ফিফা বিশ্বকাপ। তার আগে দৈনিক ইনকিলাবের পাঠকদের জন্য প্রতিদিন থাকছে বিশ্বকাপের জাদুকরী কোনো মুহূর্ত

বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলে খুব কম গ্রেট ফুটবলারই অবসরে যাওয়ার সৌভাগ্য পান। উদাহরণ অনেক থাকলেও, বিখ্যাত হয়ে আছেন জেনেদিন জিদান। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ২০০৬ বিশ্বকাপে ইতালির বিপক্ষে ফাইনাল খেলেই সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসরে গিয়েছিলেন ফরাসি প্লে-মেকার। ঠিক তার চার বছর পরে, একজন ডাচ ডিফেন্ডারও সেই কীর্তি গড়েন। বলছিলাম জিওভানি ভ্যান ব্রনখোর্স্ট্রের কথা। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সেমি ফাইনালের নেদারল্যান্ডস মুখোমুখি হয়েছিল উরুগুয়ের বিপক্ষে। দিয়াগো ফোরলান ও এডিসন কাভানিদের নিয়ে গড়া, অস্কার তাভারেজের লাতিন আমেরিকান দলটি সেই আসরে রীতিমত উড়ছে। তবে ব্রনখোর্স্টের অসাধারণ পারফরম্যান্সের কাছে পরাজয় শিকার করতে হয় উরুগুয়ের।
দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল ব্রনখোর্স্টের পেশাদার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শেষ ম্যাচ। শুরুর দিকে উরুগুয়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল ম্যাচ। তাছাড়া আন্ডারডগ হিসেবে এসে লাতিন দলটি গোটা আসরে যেভাবে খেলছিল তাতে শংকায় ছিল ডাচরা। তবে দলকে শুরু থেকেই দারুণ আত্মবিশাসী রাখেন ডাচ কাপ্তান ব্রনখোর্স্ট। ম্যাচের ১৮তম মিনিটের সময় এই লেফট-ব্যাকের কাছে বল যায় ওয়েসলি স্নাইডার ও ডি জোয়ের পা ঘুরে। ব্রনখোর্স্টের বলটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েই একটু সামনে বাড়েন। কিন্তু তখনও তিনি ডি-বক্স থেকে অনেক বাঁয়ে এবং ৪০ গজ দূরে। কি জানি ভেবে, ডাচ কাপ্তান সরাসরি শট নিলেন প্রতিপক্ষ গোল মুখে। সেই বিশ্বকাপে আলো ছড়ানো উরুগুয়ান গোলকিপার মুসালেরা কল্পনাও করতে পারেন নি যে, এতদূর থেকে শট নিবেন ব্রনখোর্স্ট। সেই শট ডান দিকের বারে লেগে জড়িয়ে যায় জালে।
বিশ্বকাপ এমন অপ্রত্যাশিত মুহ‚র্ত খুব কমই এসেছে। গোলের পর উত্তেজনায় কাঁপছিল গোটা ক্যাপটাউন স্টেডিয়াম, সঙ্গে সারা বিশ্ব। এই স্ট্রাইকের মাধ্যমেই ভ্যান মারউকের দল পেয়ে যায় জয়ের মন্ত্র। যদিও বিরতির আগেই ফোরলান সমতায় ফেরান উরুগুয়েকে। তবে দ্বিতিয়ার্ধে ৭০ থেকে ৭৩ মিনিটের মাঝে দুই গোল করে ডাচদের জয় নিশ্চিত করেন স্নাইডার ও অ্যারিয়েন রোবেন। প্রথম গোল করার পর ব্রনখোর্স্টের রক্ষণ শৈলীর কাছে বারবার পরাজিত হয়েছেন প্রতিপক্ষ দুই ফরোয়ার্ড কাভানি ও ফোরলান। ম্যাক্সি পেরেইরা উরুগুয়ের পক্ষে আরও একটি গোল করলেও ৩-২ ব্যবধানে হার এড়াতে পারেননি।
ম্যাচের পর নেদারল্যান্ডসের তৎকালীন সহকারী কোচ এবং প্রাক্তন অধিনায়ক ফ্রাঙ্ক ডি বোয়ের জানিয়েছিলেন ‘ব্রনখোর্স্টের গোলটি অবিশ্বাস্য সুন্দর ছিল। একদম নিখুঁত শট। এমন একটি শট সারাজীবনে একবারই জালে জড়ায়।’ বিশ্বকাপ ফাইনালে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার একমাত্র গোলে স্পেনের কাছে শিরোপা হারায় নেদারল্যান্ডস। ফাইনাল শেষে ব্রনখোর্স্ট বলেন, ‘সত্যিই আমার চোখে কোন অশ্রæ ছিল না, এই মুহুর্ত আনন্দের। আমার পেশাগত ফুটবলের শেষ ম্যাচ এবং সেটা বিশ্বকাপ ফাইনাল। ব্যক্তিগত অর্জনের দিকে দেখলে এরচেয়ে সুন্দর আর কিছু হতে পারে না।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ