Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ডলারের উচ্চমূল্যে বিপাকে মার্কিন ব্যবসায়ীরাও

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মার্কিন ডলারের দাম এখন আকাশচুম্বী। এ মুদ্রার ঊর্ধ্বগতির কারণে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের মুদ্রার মানেই পতন দেখা দিয়েছে। ডলারের দাম বৃদ্ধি অন্যান্য দেশের অর্থনীতির জন্য দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কেবল যে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের দেশগুলোর নাগরিক, ব্যবসা ও সরকারের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা নয়। এতে কিছু মার্কিন ব্যবসাও রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েছে। খবর ডয়চে ভেলে। ডলারের মান বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটকরা ঘুরছেন যুক্তরাজ্য ও জাপানের মতো দেশ। পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে সস্তায় পণ্য আমদানি করতে পারছে দেশটি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানিকারক ও ব্যবসায়ী যারা আন্তর্জাতিক পরিসরে লেনদেন করেন তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। কারণ বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রেতাদের কাছে পণ্য ও সেবা দুটোর দামই অনেক বেড়ে গিয়েছে। অন্তত ৩০ শতাংশ মার্কিন কোম্পানি দেশের বাইরে থেকে রাজস্ব আয় করে। সেসব প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্যের চাহিদা কমেছে বিশ্ববাজারে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের আয় কমেছে। মাইক্রোসফট, কস্টকো, সেলসফোর্সের মতো কোম্পানিও এ পরিস্থিতিতে পড়েছে। এদের অনেকেই মুনাফার পূর্বাভাস কমিয়েছে। এ বিষয়ে ফিচ রেটিংয়ের গবেষণা প্রধান কার্লা নরফ্লিট টায়লর বলেন, অনেক কোম্পানিই তাদের আয়ের প্রতিবেদনে ডলারের উচ্চমূল্যের কথা উল্লেখ করছেন। তাছাড়া এক বছর আগের সময়ের তুলনায় মুনাফা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবেও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তৃতীয় প্রান্তিকের রাজস্ব আহরণ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ফেডারেল রিজার্ভ ক্রমাগত সুদের হার বাড়িয়ে চলেছে। যার ফলাফল হিসেবে কেবল বেড়েছে ডলারের প্রভাব। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ডলার ইনডেক্স অনুযায়ী, চলতি বছর মার্কিন ডলারের দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশের বেশি। সূচকে ডলারের মান যাচাই করা হয়েছে ১৬টি মুদ্রার সঙ্গে। গত সপ্তাহে জাপানি ইয়েনের দামে পতন দেখা যায়। ডলারের বিপরীতে যা ছিল ৩২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত মাসে ইতিহাসে সর্বনিম্ন ছিল ব্রিটিশ পাউন্ডের দামও। বছরের শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের মান কমেছে ১৬ শতাংশ এবং ইউরোর কমেছে ১৩ শতাংশ। অর্থনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে ডলারে বিনিয়োগকে নিরাপদ বলে মনে করা হয়। বৈশ্বিক সংকট ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নেয়া কিছু পদক্ষেপের কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে ডলার, বেড়েছে এর দাম। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপজুড়ে যে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে তার ফলে বিশ্বে মন্দার ঝুঁকি ও আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু ডলারের দাম অন্যান্য দেশের মুদ্রার তুলনায় কম ওঠানামা করে, তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগকারীরাও ডলারের ওপরই আস্থা রাখছেন। কারণ বিশ্বের সব বিনিয়োগকারীই তুলনামূলক নিরাপদ স্থানেই বিনিয়োগ করতে আগ্রহী থাকেন। কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি ব্যবসার লেনদেনে ডলারের ব্যবহার হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ঋণের প্রায় অর্ধেকও ডলারেই লেনদেন হয়। ফলে ডলারের দাম বেড়ে গেলে বিশ্বের সব দেশেই কোনো না কোনোভাবে তার প্রভাব পড়ে। ডয়চে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ