Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণমাধ্যম কর্মীদের তামাক বিরোধী ওরিয়েন্টেশনে বক্তারা

তামাক কোম্পানির প্রতারণা প্রকাশ করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২২, ৫:২৪ পিএম

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে তামাক কোম্পানিগুলো অপতৎপরতা ও প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। দেশ থেকে তামাক নির্মূল করতে গণমাধ্যমগুলোকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) এর আয়োজনে রোববার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর বিএমএ ভবনে তামাক নিয়ন্ত্রণে গণমাধ্যম কর্মীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

মানস এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্বা প্রফেসর ড. অরূপরতন চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে অতিথি ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল’র সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত এবং দি ইউনিয়নের কারিগরী পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানের সমাপনী পর্বে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ^ বিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। মানস এর প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধি ও তামাক কোম্পানির কূট-কৌশল ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ক প্রবন্ধে এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, তামাকের কারণে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। স্বাস্থ্যখাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার অধিক অর্থ ব্যয় হয়। অথচ, তামাক কোম্পানিগুলো প্রচার করে তারা সরকারকে প্রচুর রাজস্ব দেয়। প্রকৃত পক্ষে, তামাকজাত দ্রব্যের ভোক্তারা যে ভ্যাট দেয় সেই অর্থ নিজেদের প্রদত্ত ট্যাক্স বলে চালিয়ে আসছে। উপরন্তু, কৌশলে সরকারকে কর ফাঁকি দিচ্ছে। তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি বন্ধ হলে দেশের সকল হৃদরোগীর ফ্রি চিকিৎসা সম্ভব। কিশোর-তরুণদেরকে নেশাগ্রস্ত করতে নাটক, সিনেমা এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোতে তামাকের আগ্রাসী প্রচারণা চালাচ্ছে, উল্লেখ করেন তিনি।

হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, মানুষ গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের কথা বিশ^াস করে। সংবাদে ভালো-মন্দ দিক থাকে, এতে যদি সমাজের উপকার হওয়ার মতো সত্য তথ্য থাকে সেগুলো ইতিবাচকভাবে নেয়া উচিৎ। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ ঘোষণা বাস্তবায়নে বিদ্যমান আইন সংশোধন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জাতীয় নিয়ন্ত্রণ সেল এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কাজ করছে। কার্যকরভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাক বিরোধী প্রচারণা জরুরি। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

শ্যামল দত্ত বলেন, তামাকের মতো ক্ষতিকর দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কোন কোন ক্ষেত্রে দৈততা লক্ষ্য করা যায়। সাংবাদিকদের এ বিষয়ে কাজ করার আছে এবং তাদের সচেতন থাকতে হবে। অতীতে আমরা লাখ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন ফিরিয়ে দিয়েছি শুধুমাত্র জনস্বার্থ মাথায় রেখে। কারণ, তামাক কোম্পানিগুলো মানুষকে মরণ নেশায় উদ্বুদ্ধ করতে এমন প্রচারণা চালায়। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো শক্তিশালী কিন্তু, দেশ ও মানুষের স্বার্থে সাংবাদিকদের অনেক কিছু করার আছে। এরকম ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের জন্য সহায়ক হবে।

প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তামাক বহুমাত্রিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু, তামাক কোম্পাানিগুলো নানাভাবে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। দেখা যাচ্ছে, তামাক কোম্পানিগুলো প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী বিলম্ব করতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। সাংবাদিকতার প্রধান কাজ- সত্য প্রকাশ করা। তামাক কোম্পানিগুলোর অপতৎপরতা নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রচার/প্রকাশ করতে হবে।

বীর মুক্তিযোদ্বা প্রফেসর ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, তামাক বিরোধী সামাজিক আন্দোলন বর্তমানে যে আশাব্যঞ্জক অবস্থানে এসেছে সেখানে গণমাধ্যমের ভূমিকা রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি গণমাধ্যমে তামাক বিরোধী কার্যক্রম শুরু করি এবং সেটা অব্যাহত আছে। তামাক বিরোধী প্রচারণায় নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে গণমাধ্যমগুলোকে আরো সক্রিয় হওয়া উচিৎ। মানস কর্তৃক এই অনুষ্ঠান ও সরবরাহকৃত তথ্যসমূহ সংবাদকর্মীদেরকে তামাকের বিরুদ্ধে লিখতে সহায়ক হলে আয়োজন স্বার্থক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. অরূপরতন চৌধুরী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ