মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনায় লাভের মুখ দেখলেও শেয়ার বাজারের ওঠানামায় এ বছর ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন ইলন মাস্ক, মার্ক জাকারবার্গ ও জেফ বেজোসের মতো ধনকুবেররা। পরিসংখ্যান বলছে, বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি ডলার (৪১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা) ক্ষতি হয়েছে তাদের।
পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তিদের প্রতি দিনের সম্পত্তির হিসাব রাখে ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্স। তাদের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র চলতি বছরেই প্রথম সারিতে থাকা ধনকুবেররা হারিয়েছেন ৪৮ হাজার কোটি ডলার।
এই পরিসংখ্যানে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। আগামী দিনে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে ধস ও চরম অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন মেটার কর্ণধার মার্ক জুকারবার্গ। শুধু বৃহস্পতিবার তার সম্পত্তি কমেছে ১ হাজার ১২০ কোটি ডলার । ২০২২ সালে এখনও পর্যন্ত তার ক্ষতির পরিমাণ ৮ হাজার ৭০০ কোটি ডলার।
বছরের শুরুর দিকে জাকারবার্গ ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে ছিলেন। এখন তিনি নেমে গিয়েছেন আঠাশে। মেটার মালিকের সম্পত্তির পরিমাণ ৩ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার।
বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তির শীর্ষে এখনও রয়েছেন ইলন মাস্ক। টেসলার কর্ণধার সম্প্রতি কিনে ফেলেছেন টুইটারও। তার সার্বিক সম্পত্তির পরিমাণ ২১ হাজার ২০০ কোটি । ১ নম্বর পদটি ধরে রাখলেও চলতি বছরে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তিনিও।
আমাজ়ন কর্ণধার জেফ বেজোসের সম্পত্তির পরিমাণ ১৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। শুক্রবার আমাজনের শেয়ার পড়েছে ৭ শতাংশ। বেজোস এবং মাস্ক সম্মিলিত ভাবে চলতি বছরে ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের সম্পত্তি হারিয়েছেন।
গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেট আইএনসির প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ এবং সারজারি ব্রিন যৌথভাবে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় প্রথম দশের মধ্যেই রয়েছেন। চলতি বছরে তাদের প্রত্যেকের ৪ হাজার কোটি ডলার করে ক্ষতি হয়েছে।
চীনের ধনকুবের জ্যাক মা-র এ বছরের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯৩০ কোটি ডলার। বর্তমানে তার সম্পত্তির পরিমাণ ২ হাজার ৯১০ কোটি ডলার।
এই মুহূর্তে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় প্রথম বিশের মধ্যে রয়েছেন একজন মাত্র নারী। তিনি জেফ বেজোসের সাবেক স্ত্রী ম্যাককেনজি স্কট। আমাজন গড়ে তোলায় বেজোসের পাশাপাশি তারও অবদান রয়েছে। এ বছর তার সম্পত্তিতে ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের বেশি ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই স্কট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ত্রাণশিবিরে দান করেছেন।
পরিসংখ্যান বলছে, ধনপতিদের তালিকায় প্রথম বিশ জনের মধ্যে মাত্র ২ জন ২০২২ সালে নিজেদের সম্পত্তির পরিমাণ কিছুটা বাড়াতে পেরেছেন।
চীনের ধনকুবের টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাং ইমিং-এর সম্পত্তি বেড়েছে ১ হাজার ৪০ কোটি ডলার। বর্তমানে তার সম্পত্তির পরিমাণ ৫ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার ।
এ ছাড়া বেতার সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা ইউবিকুইটি-র প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট পেরার সম্পত্তিও বেড়েছে। চলতি বছরে মোট ১৩০ কোটি ডলার সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়েছে তার। মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার।
বিশ্বজুড়ে করোনা অতিমারি চলাকালীন প্রথম ২ বছর ধনপতিদের সম্পত্তিতে রেকর্ড বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এমনকি অতিমারির সূচনাপর্বে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন করে ধনপতি তৈরি হচ্ছিলেন বলে দাবি করেছে কিছু কিছু পরিসংখ্যান।
কিন্তু হঠাৎ উল্টো স্রোতে বইতে শুরু করে আর্থিক বৃদ্ধির গতিপথ। ২০২২ সালে এসে ধনপতিদের সম্পত্তিতে রেকর্ড পতন পরিলক্ষিত হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।