Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পথ জানালেন ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

২০২১ সালের শেষের দিক থেকে ব্যাপক মূল্যস্ফীতির সংকটে ভুগছে ইউরোপীয় দেশগুলো। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি। ইউরোপের নাগরিক, অর্থনীতিবিদ ও অর্থমন্ত্রীরা বহুদিন এ ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হননি। এটি আমাদের জন্য নতুন ও খুবই উদ্বেগের বিষয়। মূল্যস্ফীতি একটি গোপন বিষ। এটি অর্থনৈতিক মন্দা বা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি রাজনৈতিক সংকটেরও জন্ম দিতে পারে। এ কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের জন্য অগ্রাধিকারের বিষয়। ইউরো জোনে যত দ্রুত সম্ভব দুই শতাংশ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো উচিত। তার জন্য আর্থিক ও জ্বালানি উভয় সমস্যা মোকাবিলায় সমন্বিত কৌশল গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, অর্থ ও আর্থিক নীতিগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। জনগণের খরচ বাড়তে থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণমূলক নীতিগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে। সেজন্য জ্বালানির বাড়তি দামের বোঝা পরিবার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারের মধ্যে ভাগ করে নিতে হবে। ফ্রান্স পরিবারগুলোর জন্য একটি ‘এনার্জি শিল্ড’ চালু করেছে, যা ২০২৩ সালের শুরুর দিকে মূল্যবৃদ্ধির হার ১৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ করবে। এতে অর্থায়নের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের অতিরিক্ত মুনাফা আটকানোর একটি প্রক্রিয়া চালু করেছে ফরাসি সরকার। আশা করা হচ্ছে, এ থেকে আগামী বছর ২ হাজার ৬০০ কোটি ইউরো (২ হাজার ৫৯ কোটি মার্কিন ডলার) আসবে এবং এনার্জি শিল্ডের আংশিক তহবিল জোগাবে। কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই ভালো মজুরির বিষয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ করতে হবে। তবে ১৯৭০’র দশকে ফ্রান্সে আমরা যে দুষ্টচক্রের মুখোমুখি হয়েছিলাম, তা এড়াতে এ ধরনের মজুরিবৃদ্ধি অবশ্যই উৎপাদনশীলতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এটাই ফরাসি সরকারের নীতির লক্ষ্য, যার মধ্যে বেকারত্ব ও পেনশনের কাঠামোগত সংস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আমরা যোগ্যতার মাত্রা ও অংশগ্রহণের হার বাড়াতে শ্রমবাজার সংস্কারের একটি উচ্চাভিলাষী কর্মসূচি অব্যাহত রাখবো। নতুন অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় অর্থ আর সুদমুক্ত নয়। ১০ বছর মেয়াদী ফরাসি সরকারি বন্ডের হার ১৮ মাস আগেও নেতিবাচক ছিল। তা বেড়ে এখন ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হয়েছে, যার ফলে কোটি কোটি ইউরো অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। গত আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ আইন গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই আইনে মার্কিন শিল্পগুলোতে ব্যাপক ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মের লঙ্ঘন হতে পারে। এই উচ্চঝুঁকির পরিস্থিতি তিনটি বৃহত্তম বাণিজ্যিক অঞ্চল- ইউরোপ, আমেরিকা ও চীনের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু এটি অনিবার্য নয়। মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত সংকট সর্বদা বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির মানচিত্র বদলে দিয়েছে। তাই নিশ্চিত করতে হবে, এবারের ঘটনা যেন আমাদের অভিন্ন স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়। দ্য ইকোনমিস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ