Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:২৯ পিএম, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬

মো: আবদুর রহিম : আজ মঙ্গলবার ১২ রবিউল আউয়াল মহানবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্ম দিবস পবিত্র মিলাদুন্নবী। এ মহান দিনে সমগ্র বিশ্বকে বিশেষ করে মুসলিম মিল্লাতকে দেয়া মহান আল্লাহ পাকের সর্বোচ্চ নেয়ামত হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক  ইরশাদ মুবারক করেন, “হে প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, এ সবকিছু মহান আল্লাহ পাক উনার ফজল এবং নেয়ামত (যা হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাদের মধ্যে প্রেরণ করা হয়েছে।) সুতরাং মানুষের বিশেষ করে ঈমানদারদের উচিত এজন্যে আনন্দ প্রকাশ করা। ইহা যে সকল ইবাদত হতে উত্তম। যা তারা সঞ্চয় করেছে।” (সূরা ইউনূস, আয়াত শরীফ ৫৮)। এ আয়াত দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার ফজল, রহমত বা নেয়ামতের শুকরগুজারের জন্য খুশি প্রকাশ করতে হবে। আর হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন সর্বোচ্চ নেয়ামত। আর এজন্য সর্বোচ্চ খুশি ও আনন্দ করার নির্দেশ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাকের। আর এ খুশি প্রকাশ আল্লাহ পাক উনার কাছে যে মকবুল মঞ্জুরী লাভ করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “আমি আপনার আলোচনাকে বুলন্দ করেছি।” কতটুকু বুলন্দ? এতটুকু যে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারকের সাথে (সা.) সংযুক্ত করে দিয়েছেন। মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি একদা নিজগৃহে সমবেত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহ তায়ালা আনহুমকে রাসূল (সা:) উনার জন্মদিনের ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাকের প্রশংসায় তাসবীহ-তাহলীল পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তথায় উপস্থিত হলেন এবং (পবিত্র মিলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে) বললেন: আপনাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব। সুবহানাল্লাহ!
হযরত আবু দারদা রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু একদা রাসূলে পাক তাঁর সাথে হযরত আবু আমির আনছারী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর গৃহে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন আনছারী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তার সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে নিয়ে আখিরী রাসূল (সা.)-এর জন্ম দিবসের ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন। এতদশ্রবণে আল্লাহ পাকের হাবীব হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা রহমতের দরজা আপনার জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফেরেশতাগণ আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। যে কেউ আপনার মতো এরূপ করবে, সেও আপনার মতো নাযাত (ফজিলত) লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে আল্লামা হযরত শিহাবুদ্দীন ইবনে হাজার হাইছামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তার বিশ্ব সমাদৃত ও সুপ্রসিদ্ধ কিতাব “আন নি’য়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম”-এর মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
“হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, যে ব্যক্তি হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার মিলাদ শরীফ পাঠ অর্থাৎ মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে এক দিরহাম ব্যয় করবে সে ব্যক্তি জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!
“হযরত উমর ফারুক রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাহফিলকে অর্থাৎ বিলাদত শরীফ দিবসকে বিশেষ মর্যাদা দিল সে মূলত ইসলামকেই পুনরুজ্জীবিত করলো।” সুবহানাল্লাহ!
“হযরত উছমান রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে এক দিরহাম খরচ করলো সে যেনো বদর ও হুনাইন যুদ্ধে শরিক থাকলো।” সুবহানাল্লাহ!
“হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বিশেষ মর্যাদা প্রদান করলো সে ব্যক্তি অবশ্যই ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” সুবহানাল্লাহ!
অন্য কথায়, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) রাসূল (সা.)-এর  জন্ম দিবস উপলক্ষে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শুভাগমন স্মরণে খুশি প্রকাশ করে মিলাদ শরীফ মাহফিলের ব্যবস্থা করা, শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা আলোচনা করা, পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, দরূদ শরীফ পাঠ, তাওয়াল্লুদ বা জন্মকালীন ঘটনা মজলিশ করে আলোচনা করা, দাঁড়িয়ে সালাম, কাসিদা বা প্রশংসামূলক কবিতা, ওয়াজ-নসিহত, দোয়া-মুনাজাত, সম্ভব মতো মেহমান নেওয়াজির অনুষ্ঠান করা সুন্নত। রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাপক আয়োজনে এ দিন পালন করা কর্তব্য উম্মতের নাজাতের উছিলার জন্য।
হযরত আবু কাতাদা আল আনসারী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সোমবার দিন রোজা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এ দিনে সোমবারে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এ দিনেই আমি নব্যুয়ত পেয়েছি।’ মুসলিম শরীফ।
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিনে খুলি প্রকাশ করা উপলক্ষে পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা ইউনূসের ৫৮ নং আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক বলেন, হে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তারা যে মহান আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে “ফযল ও রহমত” পেয়েছে সে জন্য তারা যেন ‘ফালইয়াফরাহু’ বা খুশি প্রকাশ করে। (তাফসীরে ইবনে আব্বাস, তাফসীরে রুহুল মায়ানী, তাফসীরে কবীর) এ আয়াত শরীফ দ্বারা নবীর জন্মদিন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা আল্লাহ পাকের আদেশ প্রমাণিত হয়।
যথাযথ মর্যাদায় ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পবিত্র ঈদের মিলাদুন্নবী পালনের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন  দরবার খানকাহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সরকারি ছুটির দিন। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার যথাযোগ্য গুরুত্বসহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
প্রেসিডেন্টের বাণী
প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা মানব জাতির জন্য অনুসরণীয়। মহানবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিবস মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে তিনি গতকাল একথা বলেন। আজ (মঙ্গলবার) পবিত্র মিলাদুন্নবী উদযাপিত হবে। এ উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট দেশবাসীসহ বিশ্বের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান। তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের স্মৃতিবিজড়িত মিলাদুন্নবী (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য অত্যন্ত পবিত্র, তাৎপর্যপূর্ণ এবং মহিমান্বিত দিন। মহান আল্লাহ তা’আয়ালা সমগ্র বিশ্বজগতের রহমত হিসেবে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এ জগতে প্রেরণ করেন। দুনিয়ার বুকে তাঁর আগমন ঘটেছিল ‘সিরাজাম মুনিরা’ তথা আলোকোজ্জ্বল প্রদীপ রূপে। তৎকালীন আরব সমাজের অনাচার, অবিচার, অসত্য ও অন্ধকারের বিপরীতে তিনি মানুষকে আলোর পথ দেখান এবং সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রেসিডেন্ট বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বশেষ মহাগ্রন্থ পবিত্র কুরআন তাঁর উপর অবতীর্ণ করে জগতে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেন। নিজ যোগ্যতা, মহানুভবতা, সহনশীলতা, কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে তিনি শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠায় সফল হন।
আবদুল হামিদ বলেন, তাঁর অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব, অনুপম চারিত্রিক গুণাবলী, সৃষ্টির প্রতি অগাধ প্রেম ও ভালোবাসা, অতুলনীয় বিশ্বস্ততা, অপরিমেয় দয়া ও মহৎ গুণের জন্য তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হিসেবে অভিষিক্ত। তিনি বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান ‘মদীনার সনদ’ ছিল মহানবী (সা.)-এর বিজ্ঞতার এক প্রকৃষ্ট দলিল। এ দলিলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সার্বজনীন ঘোষণা রয়েছে। সুতরাং ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে তাঁর শিক্ষা সমগ্র মানব জাতির জন্য অনুসরণীয়। তিনি মহান আল্লাহর কাছে এ প্রার্থনা করেন, মহানবী (সা.) এর জীবনাদর্শ সকলের জীবনকে আলোকিত করুক, সকলের চলার পথের পাথেয় হোক। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ সকলকে সত্য ও সুন্দরের পথে চলার তৌফিক দিন।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহানবী (সা.)-এর সুমহান আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর অফুরন্ত কল্যাণ ও সফলতা নিহিত রয়েছে। মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘আজকের অশান্ত ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত মুখর বিশ্বে প্রিয়নবী (সা.)-এর অনুপম শিক্ষার অনুসরণের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে।’ বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন ও ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত ১২ রবিউল আউয়াল উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী মুসলিম উম্মাহ্র প্রত্যেক সদস্য ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহ্ আমাদের প্রিয়নবী (সা.)-কে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন ‘রহমাতুল্লিল আলামীন’ তথা সারাজাহানের জন্য রহমত হিসেবে। পাপাচার, অত্যাচার, মিথ্যা, কুসংস্কার ও সংঘাত জর্জরিত পৃথিবীতে তিনি মানবতার মুক্তিদাতা ও ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) অন্ধকার যুগের সকল আঁধার দূর করে সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন। তিনি বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন এবং মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এই পবিত্র দিনে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ্ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন।
খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা
মহানবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিবস মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহ বিশ্ব জগতের রহমতস্বরূপ হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে এই জগতে প্রেরণ করেন। বিশ্বনবীর আবির্ভাবে পৃথিবীতে মানুষ ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জগতের মুক্তির সন্ধান পায় এবং নিজেদের কল্যাণ ও শান্তির নিশ্চয়তা লাভ করে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘সমাজে অবহেলিত, নির্যাতিত, বঞ্চিত ও দুঃখী মানুষের সেবা, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, পরমতসহিষ্ণুতা, দয়া ও ক্ষমা গুণ, শিশুদের প্রতি দায়িত্ব এবং নারী জাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মহানবী (স.)-এর আদর্শ অতুলনীয় এবং তাই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে অভিষিক্ত।’
মহানবী (স.)-এর শিক্ষা, আদর্শ ও ত্যাগের মহিমা প্রত্যেকে যেন নিজেদের জীবনে প্রতিফলিত করতে পারেন সেই কামনা করেন বিএনপি নেত্রী।
অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন।
ইমাম হায়াতের আহ্বান
দয়াময় আল্লাহতাআলার সংযোগ ও সম্পর্কের মাধ্যমে ঈমানী অস্তিত্বের উৎস হিসেবে এবং সর্বগুণ-সর্বজ্ঞান-সর্বকল্যাণের মূল কেন্দ্র রূপে মানবিক অস্তিত্বের রক্ষক হিসেবে দুনিয়ায় প্রাণাধিক প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমন সত্য ও মানবতার মুক্তি সাধনায় এর যথার্থ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে উদযাপনের জন্য নবী (সা:) প্রেমিকগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আল্লামা ইমাম হায়াত।
ওলামা লীগের মিলাদ মাহফিল
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর দিনে সমগ্র বিশ্বকে বিশেষ করে মুসলিম মিল্লাতকে দেয়া মহান আল্লাহ পাকের সর্বোচ্চ নেয়ামত হুজুর পাক (সা.) উনাকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন, সুবহানাল্লাহ। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে প্রিয় হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, এসব কিছু মহান আল্লাহ পাক উনার ফজল এবং নেয়ামত (সা:) রাসূল (সা:) উনাকে তাদের মধ্যে প্রেরণ করা হয়েছে। সুতরাং মানুষের বিশেষ করে ঈমানদারদের উচিত এজন্যে আনন্দ প্রকাশ করা। ইহা যে সকল ইবাদত হতে উত্তম। যা তারা সঞ্চয় করেছে।” (সূরা ইউনুছ, আয়াত শরীফ ৫৮) এ আয়াত দ্বারা বুঝায় মহান আল্লাহ পাক উনার ফজল, রহমত বা নেয়ামতের শুকরগুজারের জন্য খুশি প্রকাশ করতে হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “আমি আপনার আলোচনাকে বুলন্দ করেছি।” কতটুকু বুলন্দ? এতটুকু যে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উনার সাথে সংযুক্ত করে দিয়েছেন। গতকাল বিকেলে আওয়ামী ওলামা লীগের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম উত্তর চত্বরে আয়োজিত আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
মাহফিলে উলামা লীগের কার্যকরী সভাপতি হাফেজ আব্দুস সাত্তার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি একদা নিজগৃহে সমবেত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহ তায়ালা আনহুম উনাদেরকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিনের ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাকের প্রশংসায় তাসবীহ-তাহলীল পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তথায় উপস্থিত হলেন এবং (পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে) বললেন: আপনাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব। সুবহানাল্লাহ!
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিনে খুলি প্রকাশ করা উপলক্ষে পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা ইউনূসের ৫৮ নং আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক বলেন, হে রসূল (স:)! আপনি বলে দিন, তারা যে মহান আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে “ফযল ও রহমত” পেয়েছে সে জন্য তারা যেন ‘ফালইয়াফরাহু’ বা খুশি প্রকাশ করে। (তাফসীরে ইবনে আব্বাস, তাফসীরে রুহুল মায়ানী, তাফসীরে কবীর) এ আয়াত শরীফ দ্বারা নবীর জন্মদিন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা আল্লাহ পাকের আদেশ প্রমাণিত হয়।
মাহফিলে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ কাজী আবুল হোসেন শেখ শরীয়তপুরী, হাফেজ মোস্তফা চৌধুরী, মাওলানা শোয়ায়েব গোপালগঞ্জী, মাওলানা আক্তার হোসাইন ফারুকী, মুফতী মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।
আজকের কর্মসূচি
আজ মঙ্গলবার, আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়ার উদ্যোগে রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামা উপলক্ষে জশনে জুলুস ও আন্তর্জাতিক শান্তি মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ মহতী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি মাইজভান্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন, আনজুমান কেন্দ্রীয় সভাপতি আলহাজ্ব শাহসূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভান্ডারী (ম.জি.আ.)।
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন মহানগর
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন, বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার সকাল ১১.৩০ ঘটিকায় এক ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
উক্ত শোভাযাত্রা নগরীর জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব হয়ে হাইকোর্ট মাজার প্রাঙ্গণে এসে প্রেমময় সালাতু সালাম ও মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে।
এতে প্রধান মেহমান হিসেবে দোয়া করবেন সুন্নী আন্দোলন-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সর্বজনীন ও মানবিক রাষ্ট্র ও বিশ্বব্যবস্থা- বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব-এর প্রবর্তক আল্লামা ইমাম হায়াত।



 

Show all comments
  • ইকবাল ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ২:১১ এএম says : 0
    আল্লাহ আমাদেরকে বেশি বেশি আমল করার তৌফিক দান করুক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিলাদুন্নবী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ