Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের ১১ নৌকা ফেরত পাঠালো বিজিবি

| প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

টেকনাফ উপজেলা সংবাদদাতা : মিয়ানমারের সেনাবাহিনীদের বর্বরতা থেকে রক্ষা পেতে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে রোহিঙ্গাবোঝাই ১১টি নৌকা ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি। সোমবার ভোরে নাফ নদী পার হয়ে সীমান্তের ছয়টি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশের চেষ্টা করছিল তারা।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানান, সোমবার ভোরে নাফ নদীর পার হয়ে সীমান্তের ছয়টি পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গাবোঝাই ১১টি নৌকা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। এ সময় সীমান্তের টহলরত বিজিবির সদস্যরা অনুপ্রবেশকারীদের বাধা দেয় এবং তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠায়। রোহিঙ্গারা প্রতিদিন অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর বর্বরতা থেকে বাঁচতে নাফ নদী পার হয়ে সীমান্ত দিয়ে দলে দলে রোহিঙ্গারা আশ্রয়ের প্রত্যাশায় বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে ২২ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবৈধভাবে ঢুকে পড়েছে বলে বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে।
অনুপ্রবেশকারী এইসব রোহিঙ্গাদের দাবি মিয়ানামারের সেনাবাহিনীরা এখনও রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নাফ নদী থেকে ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে বিজিপি
নাফ নদীতে মাছ শিকারের সময় ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। গতকাল দুপুরে ২টি নৌকাসহ নাফনদী থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে দুইজন নাফনদী থেকে লাফ দিয়ে সাঁতারিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। আটক ছয়জন এখনও বিজিপির জিম্মায় রয়েছে। তাদেরকে ফেরত পেতে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে এবং আটক জেলেদের মংডু বিজিপি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফেরত আসা জেলে জানান।
এ ঘটনায় নৌকার মালিক মো: জাফর আলম ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের ফিরিয়ে আনতে বিজিবির সহায়তা চেয়ে শনিবার দুপুরে টেকনাফ সদর বিজিবি ক্যাম্পে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। সদর বিওপি ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার শামসুল ইসলাম জানিয়েছেন বিজিবির পক্ষ থেকে মিয়ানমার বিজিপির সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করছে।
ফিরে আসা আবদুল আমিন ও নুর মোহাম্মদ জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাফ নদীর মাঝামাঝি স্থানে হোসেনের মালিকানাধীন ২টি নৌকার ছয় জেলে বিহিঙ্গি জাল ফেলে মাছ শিকার করছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর স্পিডবোট যোগে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা এসে অস্ত্রের মুখে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়। তাদেরকে মংডু বিজিবি ক্যাম্পে আটকে রাখা হয় বলে জানায় জেলেরা। আটক জেলেরা হলোÑ টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার মো: হোসেন (৩০), মো: করিম (২৮), আকতার ফারুক ((১৬), সাদেক হোসেন (১৮), মো: ফারুক (১৭), মো: সাদেক (১৫)।
এদিকে স্থানীয় জানিয়েছে, বাংলাদেশি জেলেরা মাসিক টোকেনের বিনিময়ে মিয়ানমার জলসীমায় মাছ শিকার করে থাকে। এতে প্রতিটি জালের পেছনে মাসিক এক হাজার টাকা করে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে প্রদান করতে হয়। কোন জেলে নৌকা এর হেরফের করলে তাদেরকে ধরে নিয়ে টাকা আদায় ও নির্যাতন করে মিয়ানমার বাহিনী। দীর্ঘকাল ধরে নাফ নদীতে এ প্রথা চলে আসছে বলে জানিয়েছে জেলে সম্প্রদায়। মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদীর গভীরতা বেশি হওয়ায় মাছও বেশি ধরা পড়ে ফলে টেকনাফের জেলেরা এই টোকেনের বিনিময়ে মাছ শিকার করে থাকে।
আটকের বিষয়টি টেকনাফ ২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক আবু রাসেল ছিদ্দিকী জানান, জেলেদের ডিঙ্গি জাল নিয়ে মাছ শিকার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবু জেলেরা নদীতে ডিঙ্গি জাল মাছ শিকারের ফলে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। তিনি জেলে আটকের বিষয়টি শুনেছেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ