Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত কি আসলেই একটি হিন্দু রাষ্ট্র হওয়ার পথে?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ৫:১৪ পিএম | আপডেট : ৫:৫০ পিএম, ২৬ অক্টোবর, ২০২২

ভারতে পিএফআইকে নিষিদ্ধ করা এবং একই সাথে আরএসএসকে অপারেশনের অনুমতি দেওয়া বিজেপি মূলধারার রাজনীতি থেকে মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিচ্ছিন্ন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। 'ইন্ডিয়া টুডে টিভিতে ২ অক্টোবর ২০২২'-এ প্রাইম টাইম শোতে, মি. সুরেশ চাভাঙ্কে জনসমাবেশে একটি চরম সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেন। তিনি ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার জন্য হিন্দুদের যুদ্ধ, মারা যাওয়া এবং অন্যদের হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।–সাউথ এশিয়া মনিটর, মুসলিম টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, ডেক্কান হেরাল্ড

তিনি মুসলিমদেরকে গণহত্যার হুমকি দিচ্ছেন। সম্প্রতি অনলাইনে একটি ক্লিপ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে একদল হিন্দু চরমপন্থী কর্ণাটকের একটি মসজিদের বাইরে মুসলমানদের রক্তে স্নান করার হুমকি দিচ্ছে। একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ হল, সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য গঠিত একটি প্রধান মুসলিম সংগঠন হিসেবে পিএফআইকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পিএফআই-এর বিরুদ্ধে হিন্দুদের একটি বৃহৎ অংশের মধ্যে বিভ্রান্তিকর উচ্ছ্বাস তৈরি করতে এবং এটিকে ভারতের জন্য হুমকি ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে উপস্থাপনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোদী সরকার সফল হয়েছে। ভুয়া অভিযোগে পিএফআই-এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিজেপি যদি ভারতে মৌলবাদী প্রবণতা রোধে সিরিয়াস হতো; এটি আরএসএস/বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের মতো সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করতো, যাদের সদস্যরা একাধিক সন্ত্রাসী ঘটনা এবং মুসলমানদের উপর হামলার সাথে জড়িত।

 

জাল ফৌজদারি অভিযোগে মুসলিমদের সম্পৃক্ততা খোঁজা হচ্ছে। সম্প্রতি গোটা ভারত জুড়ে গোহত্যার নামে মুসলমানদের সহিংসতা/মব লিঞ্চিং-এর ঘটনা তুঙ্গে। তাছাড়া, গত ৪ সপ্তাহে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, যেখানে হিন্দু দলিত সংখ্যালঘু মেয়েদের ধর্ষণে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে এবং দ্রুত ইলেকট্রনিকভাবে/এসএম-এ ভাইরাল করা হয়েছে। জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশের একটি সরকারি হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের বাইরে হাসপাতালের কক্ষে প্রার্থনা করার দায়ে ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২-এ একজন মুসলিম মহিলাকে তদন্তের নামে লাঞ্চিত করা হয়েছিল। ২০২২ সালের জুলাই মাসে, ভারতের লখনউতে লুলু শপিং মলের বেসমেন্টে নামাজ পড়ার জন্য ৪ জন মুসলমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ভারতীয় মিডিয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ প্রচার করছে।

ভারতের অন্যতম প্রধান টিভি চ্যানেল 'আজ তক ৩০ সেপ্টে ২০২২ এ ২১১২ ঘন্টা', খোলাখুলিভাবে ৪ মিনিটের জন্য ইসলামোফোবিক বিষয়বস্তু সম্প্রচার করেছে যে, মুসলিম পুরুষরা অনেক হিন্দু মেয়েকে (লাভ জেহাদ) লিঙ্ক করার অভিপ্রায়ে হিন্দু নাম সহ হিন্দু উৎসবে (গরবা) অংশগ্রহণ করেছিল। বলা হয়েছে, মুসলিম পুরুষরা যেখানে মুসলিম মেয়েদের জন্য হিজাব পছন্দ করে, যেখানে তারা বিয়ের জন্য হিন্দু মেয়েদের পছন্দ করে। ভারতীয় নেতা মি. শশী থারুর এবং মি. হর্ষ মধুসদন মিডিয়ায় বিতর্কিত হয়েছিল যে, 'ভারত কি ২০৪৭ সালের মধ্যে হিন্দু রাষ্ট্র হবে' বলে।

দীর্ঘমেয়াদে ভারতীয় সংবিধানে হিন্দুত্বের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক চলছে। মি. থারুরের মতে, চরমপন্থী হিন্দুরা শুরু থেকেই ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং প্রচার করে যে, ভারত শুধুমাত্র হিন্দুদের এবং ভারতের অন্যান্য সংখ্যালঘুরা হয় অতিথি বা আন্তর্জাতিক ডাকাত। তিনি আরও বলেন, হিন্দুত্ব প্রচার করে যে সংখ্যালঘুদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসাবে ত্যাগ করা উচিত বা ভারত থেকে বের করে দেওয়া উচিত। 'হিন্দুদের জন্য পবিত্র রাষ্ট্র' যেখানে মি. মধুসদন ভারতীয় সংবিধানের সারাংশ হিসাবে সাভারকারের হিন্দুত্ব মতাদর্শকে সমর্থন করেন। প্রশ্ন ওঠেছে, ভারত কি আসলেই একটি হিন্দু রাষ্ট্র হওয়ার পথে?



 

Show all comments
  • admin ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৯ পিএম says : 0
    এখন উপায় একটি সেটা হল বাংলাদেশ কে ইসলামিক রাষ্ট্র ঘোষণা করা
    Total Reply(0) Reply
  • admin ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৮ পিএম says : 0
    মুসলমানদের কে ও বাংলাদেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে একই কাজ করিতে হইবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ