নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বের শুরুতে কিউই আগুনে পুড়লো অজিরা। এই পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে বিধ্বস্ত করে দুর্দান্ত শুরু করেছে নিউজিল্যান্ড। পাশাপাশি টুর্নামেন্টের গত আসরের ফাইনালে অজিদের বিপক্ষে হারের মধুর প্রতিশোধও তুলেছে কিউইরা। গতকাল সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-১ এর ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ৮৯ রানের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে। রান বিবেচনায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো দলের এটি ষষ্ঠ বড় জয়। এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটাই সবচেয়ে বড় জয় কিউইদের। পাশাপাশি নিজেদের মাঠে সবচেয়ে বড় হার অজিদের।
কাল টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। ফিন অ্যালেনকে সঙ্গে নিয়ে দানবীয় ইনিংস শুরু করেন ডেভন কনওয়ে। অজি পেসার মিচেল স্টার্কের প্রথম ওভার থেকেই ১৪ রান তুলেন অ্যালেন। এই ওভারে ২ চার ও ১ ছক্কা মারেন তিনি। পরের ওভারে জশ হ্যাজেলউডকেও পেটান অ্যালেন ও কনওয়ে। কনওয়ে দু’টি ও অ্যালেন এক বাউন্ডারিতে তুলেন ১৫ রান। স্টার্ক-হ্যাজেলউডের করা প্রথম দুই ওভার থেকে ২৯ রান তুলে নেয় অ্যালেন-কনওয়ে জুটি। এমন অবস্থায় বাধ্য হয়েই তৃতীয় ওভারে প্যাট কামিন্সকে আক্রমণে আনেন স্বাগতিক দলের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। এই ওভার থেকেও ১৭ রান আসে। অ্যালেন ২টি চার ও ১টি ছয় মারেন। অবশ্য ওভারের দ্বিতীয় বলে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান তিনি। স্টয়নিসের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে ছয় মেরে নিউজিল্যান্ডের রান পঞ্চাশে পৌঁছান অ্যালেন। ফলে চার ওভার শেষে কিউইদের রান দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৫৬। পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয়বারের মত আক্রমণে এসে সাফল্য পান হ্যাজেলউড। দানবীয় ব্যাটিং করা অ্যালেনকে বোল্ড করে ফেরত পাঠান হ্যাজেলউড। ২৬২ স্ট্রাইক রেটে মাত্র ১৬ বল খেলে ৪২ রান করেন অ্যালেন। তার বিধ্বংসী ইনিংসে ৫ চার ও ৩টি ছয়ের ছিল। উদ্বোধনী জুটিতে ২৫ বলে ৫৬ রান করেন অ্যালেন ও কনওয়ে। অ্যালেন আউট হলে ক্রিজে এসেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। অ্যালেন ঝড়ে পাওয়ার প্লে-তে ১ উইকেটে ৬৫ রান পায় কিউইরা। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরও নিউজিল্যান্ডের রানের গতি ধরে রাখেন কনওয়ে-উইলিয়ামসন। ইনিংসের ১১তম ওভারের প্রথম বলে উইলিয়ামসনের ছয়ের মারে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬১ বলে ১ উইকেটে ১০০ রান। অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার এডাম জাম্পার করা ইনিংসের ১৩তম ওভারের প্রথম বলে ছয় মেরে ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কনওয়ে। এটা করতে তিনি ৩৬ বল খেলেন।
ওভারের শেষ বলে উইলিয়ামসনকে আউট করে অজিদের দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন জাম্পা। ১টি করে চার-ছক্কায় ২৩ বলে ২৩ রান করে ফিরে যান উইলিয়ামসন। কনওয়ের সঙ্গে ৫৩ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়ে আউট হন তিনি। উইলিয়ামসন যখন আউট হন, তখন ইনিংসের ৭ ওভার বাকী ছিলো। তৃতীয় উইকেটে গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে ১৮ বলে ২৭ রান তুলেন কনওয়ে। আর চতুর্থ উইকেটে জেমস নিশামকে নিয়ে ঝড় তোলেন তিনি। শেষ ২৪ বলে ২শ স্ট্রাইক রেটে ৪৮ রান যোগ করে এই জুটি। এসময় নিশাম ২টি ছয় ও কনওয়ে ২ চার মারেন। ইনিংসের শেষ বলে নিশাম ছক্কা মারলে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০০ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। ৫৮ বল খেলে সাত বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারির মারে ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন কনওয়ে এবং দুই ছয়ের মারে ১৩ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন নিশাম। এবারের আসরে এটিই প্রথম ২শ ও সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। শুধু তাই নয়, টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চতুর্থবারের মত ২০০ রান তুলে কিউইরা। বল হাতে হ্যাজেলউড ৪১ রানে পান ২ উইকেট। ৩৯ রান খরচায় জাম্পা পান ১ উইকেট।
জবাবে জয়ের জন্য ২০১ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নারকে ৫ রানে বিদায় করেন কিউই পেসার টিম সাউদি। ওয়ার্নারের পর পাওয়ার প্লে-তে আরও ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে অজিরা। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে ১৩ রানে আউট করেন স্পিনার মিচেল স্যান্টনার এবং মিচেল মার্শকে ১৬ রানে বিদায় করেন সাউদি।
৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে অনেকটা ধুঁকতে থাকে স্বাগতিকরা। এই পরিস্থিতিতে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন স্টয়নিস ও টিম ডেভিড। কিন্তু পরপর দুই ওভারে স্টয়নিস ও ডেভিডকে আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেন স্যান্টনার। ১০.২ ওভারে ৬৮ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় অসিরা। এরপর ১৩তম ওভারে ম্যাথু ওয়েড ও পরের ওভারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বিদায় নিলে অজিদের বড় হার নিশ্চিত হয়ে যায়। ম্যাক্সওয়েল ২০ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ের মারে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন। ১৮ বল খেলে ২ চার ও ১ ছয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন কামিন্স। শেষদিকে ট্রেন্ট বোল্টের তোপে ১৭.১ ওভারে ১১১ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। সাউদি ৬ ও স্যান্টনার ৩১ রানে পান তিনটি করে উইকেট। বোল্ট ২৪ রানে শিকার করেন দুই ব্যাটারকে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান ডেভন কনওয়ে।
আগামী মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া। পরের দিন আফগানদের বিপক্ষে মাঠে নামবে নিউজিল্যান্ড।
আজকের খেলা
আয়ারল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা, সকাল ১০টা
পাকিস্তান-ভারত, দুপুর ২টা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।