Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কক্সবাজার পর্যটন শিল্পে ব্যাপক ক্ষতি

বিদ্যুতের লোডশেডিং

কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

চাহিদার ৪০ শতাংশের বেশি ঘাটতি নিয়ে কক্সবাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুৎ লোডশেডিং এর কারণে কক্সবাজারের পর্যটন খাতে ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হচ্ছে। একই সঙ্গে লোডশেডিং এর কারণে উপজেলা থেকে গ্রাম পর্যায়ের জনজীবনের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
কক্সবাজার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দেয়া তথ্য মতে, কক্সবাজার জেলার ৯ উপজেলায় বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৮৭ মেগাওয়াট। অথচ বরাদ্ধ পাওয়া যাচ্ছে ১১২ মেগাওয়াটের কম। ফলে প্রতিদিন গড়ে ৪০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে।

কক্সবাজার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদের গনি জানান, কক্সবাজারের ৩টি কেন্দ্রে তাদের বিদ্যুৎ চাহিদা ৬২টি মেগাওয়াট। যার মধ্যে কক্সবাজার কেন্দ্রে ৪০, রামু কেন্দ্রে ৭ এবং চকরিয়া কেন্দ্রে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৪৬.৫ মেগাওয়াট বরাদ্ধ পেলেও সঙ্কট থাকে ১৫.৫ মেগাওয়াট।
কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মো. আখতারুজ্জামান লস্কর জানান, জেলার ৯ উপজেলায় তাদের বর্তমান চাহিদা ১২৫ মেগাওয়াট। বর্তমানে প্রতিদিন ৬২ থেকে ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তারা পাচ্ছে। গত ৩ দিন আগে (১৬ অক্টোবরের আগে) একটু বেশি বরাদ্ধ পেতেন। তখন গড়ে ৮৫ থেকে ৯৫ শতাংশ বিদ্যুৎ বরাদ্ধ ছিল। কিন্তু দোহাজারি কেন্দ্রে কাজ চলমান থাকায় তা কমে গেছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবস্থাপনা খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি পর্যটকরা বিরক্ত হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে পর্যটক বিমুখ হবে কক্সবাজার। কক্সবাজার আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, গত বৃহস্পতিবার পুরোদিন বিদ্যুৎবিহীন ছিল কক্সবাজার। ১৯ অক্টোর হোটেল জোনে ৩ বার লোডশেডিং হয়েছে। ১৮ অক্টোবর হোটেল মোটেল জোনে টানা ৩ ঘণ্টা এবং ১ ঘণ্টা করে ২ বার লোডশেডিং হয়েছে। ১৯ অক্টোবর দুপুর ২টা পর্যন্ত ২ বার লোডশেডিং হয়েছে।

তিনি জানান, লোডশেডিং মানেই পর্যটন খাতে ব্যাপক ক্ষতি। প্রথম লোডশেডিং এর কারণে জেনারেটর ব্যবহার করতে গিয়ে খরচ বেড়ে যায়। এ সময় এসি চালানো, ক্ষেত্র বিশেষে লিফট বন্ধ রাখতে হয়। এতে আগত পর্যটকরা বিরক্ত হন। অনেক সময় কর্তৃপক্ষের সাথে পর্যটকের তর্কাতর্কির ঘটনাও ঘটে। যার কারণে পর্যটকরা কক্সবাজার বিমুখ হওয়ার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে।

ভিসতা বে রিসোর্টের ব্যবস্থাপক এমডি আলাউল জানান, লোডশেডিং মানেই ব্যবস্থাপনা খরচ অনেক বেড়ে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে পর্যটকদের কাছ থেকে ভাড়া অতিরিক্ত নেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এসি-লিফট বন্ধ রাখতে গিয়েও পর্যটকদের সাথে তৈরী হচ্ছে বৈরী সর্ম্পক। ফলে পর্যটন খাত ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে ক্রমাগত।
হোটেল দি কক্স টুডের ব্যবস্থাপক আবু তালেব জানান, এ পরিস্থিতিতে পর্যটন খাত ক্ষতির মুখে পড়ছে। ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত হচ্ছে। শুধু পর্যটন খাত নয়; লোডশেডিং এর কারণে উপজেলা থেকে গ্রাম পর্যায়ের জনজীবনের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

রামুর পোল্ট্রি খামারী শাকিল উদ্দিন জানান, রামুতে বিদ্যুৎ যায় না বরং মাঝে-মধ্যে আসে। বিদ্যুতের কারণে তার খামারটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল কাইয়ূম জানান, একদিকে গরম অপর দিকে লোডশেডিং এর কারণে জনজীবন বিরক্তকর হয়ে উঠেছে। এমনকি মোবাইল ফোন সেটের চার্জও নিয়মিত দেয়া যাচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুৎ

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ