Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কমছে পণ্যের চাহিদা, সহজ হচ্ছে মার্কিন সরবরাহ ব্যবস্থা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

চার দশকের সর্বোচ্চ উচ্চতায় মূল্যস্ফীতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ অবস্থায় ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন মার্কিন ভোক্তারা। ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। বন্দরগুলোয় কনটেইনার আমদানির সংখ্যাও ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছে। এ পরিসংখ্যান দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা সহজ হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও এ প্রবণতা মন্দার পূর্বাভাস দিচ্ছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন বন্দরজুড়ে কনটেইনারে পণ্য আমদানি গত মে মাসে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। এ সংখ্যা সেপ্টেম্বরে পতনের আগে ধীর ধীরে কমছিল। এ সূচক ২০১৯ সালে শেষবার দেখা স্তরের কাছাকাছি ছিল। মহামারীতে আসবাবপত্র, পোশাক ও যন্ত্রপাতির চালান ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। পণ্যজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় বন্দরগুলোকে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডেকার্ট ডেটামাইনের প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের মোট আমদানির ২৫ শতাংশই কনটেইনারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এগুলোর বেশির ভাগই ভোক্তা চাহিদা পূরণ করে। আর বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে ভোক্তা ব্যয়ের অবদান ৭০ শতাংশ। মহামারী চলাকালীন কনটেইনার আমদানি ২০১৯ সালের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। করোনা বিধিনিষেধ শিথিলের পর ভোক্তা চাহিদা ব্যাপক আকারে বেড়ে গিয়েছিল। চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে পণ্য সরবরাহ করতে পারেনি খুচরা বিক্রেতা ও আমদানিকারকরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্রয়াদেশ গ্রহণ করতে গিয়ে সরবরাহ ব্যবস্থাজুড়ে জট দেখা দেয়। মেডিকেল ডিভাইস থেকে শুরু করে পেলোটনের ব্যায়াম বাইক পর্যন্ত সবকিছুর সরবরাহ বিলম্বিত হয়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন টাস্কফোর্স গঠন করে এবং কিছু বন্দরে টানা ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেয়। সরবরাহ ব্যবস্থার টাস্কফোর্স পণ্য বিতরণে অসুবিধা ও আমদানি নিরীক্ষণের জন্য একটি ড্যাশবোর্ডের অংশ হিসেবে কনটেইনার আমদানি ট্র্যাক করেছিল। পরিবহন খাত নিয়ে কাজ করা অর্থনীতিবিদ ওয়াল্টার কেমসিস বলেন, আমরা ২০১৯ সালের পরিস্থিতিতে ফিরে যাচ্ছি। ভোক্তারা আবারো ব্যয়ের ক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী ধারা ৭০ শতাংশ পরিষেবা এবং ৩০ শতাংশ পণ্যের বিভাজনে ফিরে যাচ্ছেন। ১৯৭৩ সাল থেকে প্রতিটি মার্কিন মন্দার সময় পরিষেবায় ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল। তবে কভিড মহামারীর আঘাতে ২০২০ সালের মন্দায় সে প্রবণতা উল্টে যায়। সে সময় পরিষেবায় কমে পণ্যে ব্যয় বেড়ে যায়। ফলে ওয়াশিংটনকে পণ্য আমদানি বাড়িয়ে দিতে হয়। ওয়াল্টার কেমসিস বলেন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে কনটেইনার আমদানি নিম্নমুখী হয়েছে। মজুদ বেড়ে যাওয়ায় ওয়ালমার্ট ও অ্যামাজনের মতো খুচরা বিক্রেতারা চলতি বছরের শুরুতে লাখ লাখ ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল করে। এ কারণে কয়েক মাস ধরে কনটেইনার আসা নিম্নমুখী হয়েছে। মার্কিন খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত মজুদ কমাতে হিমশিম খাচ্ছে। চার দশকের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অতিপ্রয়োজনীয় নয় এমন পণ্যে ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন ভোক্তারাও। ফলে পোশাক ও গৃহস্থালি সামগ্রীর বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছে। অন্যদিকে বেড়েছে গিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর মজুদের পরিমাণ। এমন পরিস্থিতিতে মূল্যছাড় দিয়ে মজুদ কমানোর চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। যদিও এ কারণে সংস্থাগুলোয় মুনাফায় টান পড়ছে। সম্প্রতি অর্থনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল পূর্বাভাস দিয়েছে, বৈশ্বিক বাণিজ্য ২০২৪ সালে পুনরুদ্ধার হওয়ার আগে ২০২০ ও ২০২৩ সালে কিছুটা সংকুচিত হবে। শিপিং খাতের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জন মনরো সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলেছে, গুদামগুলো পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমদানিকারকদের মজুদ পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ক্রয়াদেশ কমতে থাকবে। সম্প্রতি ব্যাংক অব আমেরিকরার বিশ্লেষকরা একটি নোটেও এমন কথা বলেছেন। তারা বলেন, কনটেইনার আমদানি শিগগিরই বাড়ার সম্ভাবনা কম। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ