Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

২০৩০ সালে উন্নয়নের জংশনে বাংলাদেশ

| প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : পথ যেখানে পরিষ্কার, লক্ষ যেখানে স্থির, সেখানে গন্তব্যে আমরা অবশ্যই পৌঁছাবো। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি’স) বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কো-অর্ডিনেটর আবুল কালাম আজাদ আত্মবিশ্বাসের সাথে কথাগুলো বললেন। গতকাল রোববার তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি তা বলেন। এসডিজি’স বিষয়ক চিফ কো-অর্ডিনেটর আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ আর্থাৎ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কর্মপরিকল্পনা সাংবাদিকদের সামনে তুল ধরেন। এসডিজি’স (২০১৬-২০৩০) অর্জনের ১৭টি লক্ষ্য এবং প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগের বিষয় তিনি ভিডিও প্রজেকশনের মাধ্যমে বর্ণনা করেন। এসময় আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অর্জন করেছি। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজিও বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। উন্নয়নের জংশনে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। সে লক্ষে আমরা তিনটি ধাপে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ এবং কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত। এক্ষেত্রে ফোর্থ স্টেট হিসেবে খ্যাত মিডিয়ার সহযোগিতা পেলে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ে লক্ষ অর্জন করতে সক্ষম হবো।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও তিনি জবাব দেন। দুর্নীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব সরকারি কর্মকর্তার স্বচ্ছতা ও জাবাবদিহিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। সরকারি কর্মকর্তাদের মানসিকতা পরিবর্তনে কাজ করছি। সব কাজের জন্য প্রয়োজন সুশাসন। আগে জেলা ও উপজেলার কোনো অফিসে গেলে সরকারি কর্মকর্তারা জানতে চাইতেন, কেন এসেছেন? এখন জিজ্ঞেস করে, আপনার জন্য কী করতে পারি? আমরা এভাবেই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাইন্ডসেট (মানসিকতা) পরিবর্তনে কাজ করছি।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীন। সরকার দুদকের কোনো কাজে বাধা দেয় না। যে কারণে দুদক এখন অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারও করে। আমরা দুর্নীতি কমাবো বলে কোনো স্লোগানও তুলিনি। আমরা বিশ্বাস করি, মাইন্ডসেট পরিবর্তন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে এবং সুশাসন নিশ্চিত হলে দুর্নীতি একেবারে মরে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অর্জন করেছি। এমডিজি সম্পর্কে অনেকের জ্ঞানে অস্পষ্টতা ছিল। তবে এসডিজিতে তা থাকবে না। এসডিজি বিষয়ক তথ্য বিভিন্ন জায়গা থেকে একত্রিত করে এক জায়গা থেকে দেয়া যায় কি না সে বিষয়ে আমরা ভাবছি। এসডিজিতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) একটি সেল রাখা হবে। তবে সেটি কোথায় থাকবে সে বিষয়েও আমরা আলোচনা করছি।
আপর এক প্রশ্নের জবাবে আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের ৮৩ শতাংশ লোক বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। বাকি ১৭ শতাংশ লোক আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে এর আওতায় আসবে। আমি বিশ্বাস করি, যেকোনো উন্নয়নে সরকার মূল শক্তি নয়, মূল শক্তি জনগণ। সরকার সহযোগিতা ও পরিকল্পনা করবে মাত্র। আমরা সোশ্যাল জার্নালিজমের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। আপনার বাড়ির রাস্তা যদি মেরামতের প্রয়োজন হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট জেলার ডিসি ও টিএনওর ফেসবুকে অবহিত করলেই তিনি সরকারের পক্ষে তা মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, উন্নয়নের জন্য টাকা কোনো সমস্যা না। অর্থবছর পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। সে বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কার্যকর হয়নি। কারণ মার্চ-মে পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুম থাকে। এ সময় মাঠে কাজের সময়।
এসডিজি সম্পর্কে তথ্য জানতে চাইলে অনেক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন না, এমন অভিযোগের উত্তরে তিনি বলেন, আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যে কেউ প্রশ্ন করলে আমি জবাব দেব। যদি আপনি আপনার সাধারণ জ্ঞান সমৃদ্ধ করার জন্য প্রশ্ন করেন, তাহলে আমি সে প্রশ্নের জবাব দেব না। প্রশ্ন করতে হলে এসডিজি বিষয়ে প্রাথমিক পড়াশোনা করতে হবে। টেবিল মেকিং নয়, ফিল্ডে গিয়ে প্রতিবেদন তৈরির চেষ্টা করেন। তথ্যের অভাব হবে না।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা এ কে এম শামীম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ইশতাক হোসেন, উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা আকতার হোসেন প্রমুখ।
সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উদ্যোগগুলোর মধ্যে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, আশ্রয়ন প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষা।
সভায় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শামীম চৌধুরী এসডিজি বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে কাগজে জায়গা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সময় বাড়াতে মিডিয়া কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি দেশ এগিয়ে যাওয়ার জন্য কর্মপন্থা ও পরিকল্পনা লাগে। এটি আগে ছিলনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবার শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ১০টি উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন তা পূরণ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ