Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কংগ্রেসের প্রাক্কালে চীনে শির বিরুদ্ধে কেন এই বিক্ষোভ?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫৩ পিএম | আপডেট : ৭:৫৩ পিএম, ২০ অক্টোবর, ২০২২

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা দেওয়ার জন্য পার্টির ২০তম কংগ্রেসের ঠিক আগমুহূর্তে বেইজিংয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। যেটিকে বিরল আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের প্রাক্কালে কেন এ বিক্ষোভ?

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরল সেই বিক্ষোভে সুনির্দিষ্ট কিছু আওয়াজ শোনা গেছে। এ বিক্ষোভ থেকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক ও জাতীয় বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে বলা হয়।

পশ্চিমা মিডিয়ার মধ্যে ফরেন পলিসি প্রথম ওই বিক্ষোভ নিয়ে প্রতিবেদন করে। সেখানে তারা উল্লেখ করে যে, বেইজিংয়ের ওই বিক্ষোভে কয়েকটি ব্যানার দেখা গেছে, যেখানে বিদ্বেষী রাজনৈতিক বার্তা এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের তীব্র সমালোচনা করে কিছু কথা লেখা হয়েছিল। ব্যানারগুলো হাইদিয়ান সেতুতে ঝুলছিল। গত রোববার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেস শুরুর আগে যা ছিল বিরল ও বিপজ্জনক প্রকাশ।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, গত বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় হাইদিয়ান এলাকায় বিক্ষোভ হয়। সেখানকার একটি সেতুতে বিক্ষোভকারীদের দুটি বড় ব্যানার ঝুলতে দেখা গেছে। ব্যানারে লেখা, ‘কোনো কোভিড পরীক্ষা নয়, আমরা খেতে চাই। কোনো বিধিনিষেধ নয়, স্বাধীনতা চাই আমরা। কোনো মিথ্যা নয়, মর্যাদা চাই আমরা। কোনো সাংস্কৃতিক বিপ্লব নয়, সংস্কার চাই আমরা। কোনো নেতা নয়, ভোট চাই আমরা। কোনো দাস নয়, নাগরিক হতে চাই আমরা।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে তিরস্কার করেন এবং তার জিরো-কভিড নীতির সমালোচনা করেন।

বিক্ষোভকারীরা শি জিনপিংয়ের অপসারণ এবং চীনের কঠোর শূন্য-কোভিড নীতির অবসানের দাবিতে স্লোগান প্রদর্শন করেছিল। সেই প্রতিবাদের ছবি ও ভিডিও দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যদিও কর্তৃপক্ষ দ্রুত ইন্টারনেট থেকে সেগুলো মুছে ফেলে।

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, দেশটির জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইবোতে বিক্ষোভ সম্পর্কে যেকোনো ধরনের কিছু সার্চ করার ক্ষেত্র সীমিত করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। উইবোকে টুইটারের সমতুল্য মনে করা হয়। এ ছাড়া ‘বেইজিং’, ‘সিটং ব্রিজ’ এবং ‘হাইদিয়ান’ এসব টার্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ব্লক করা হয়েছে। তা ছাড়া ‘কারেজ’, ‘বেইজিং ব্যানার’ এবং ‘ওয়ারিওর’র মতো শব্দও ব্লক করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ফরেন পলিসির প্রতিবেদনে কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনের একজন ফেলো জংইয়ুয়ান জো লিউকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, যে পার্টির কংগ্রেস শুরু হওয়ার আগে এটি একটি ‘খুব সাহসী এবং বিভিন্ন উপায়ে অত্যন্ত ত্যাগী’ পদক্ষেপ ছিল। যেটিকে তিনি সম্ভবত ‘চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। জো লিউ বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা যা করেছেন সেটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের আগে বেইজিংয়ের সেই বিক্ষোভের পর থেকে চীনের সরকারের সমালোচকদের ওপর নজরদারি ও হয়রানি বেড়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টাকারী বিপুল সংখ্যক পিটিশনার এবং অ্যাক্টিভিস্টসকে চীনজুড়ে কারারুদ্ধ বা গৃহবন্দী করা হয়েছে। মানবাধিকার আইনজীবীদের ভয় দেখানো হয়েছে এবং হয়রানি করা হয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা উদ্বিগ্ন যে কংগ্রেসের আগে এ ধরনের সরকারের সমালোচনা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে এবং শাসনের ক্ষতি করবে। সূত্র : ডেকান হেরাল্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ