Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইভিএমের বদলে সিসিটিভির ব্যবহার বাড়ান

মতবিনিময় সভায় সাবেক ইসি এম সাখাওয়াত হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বদলে সিসিটিভির ব্যবহার বাড়ান। ভালো হোক, মন্দ হোক, ইভিএম নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। যে বাজেটে ১৫০টি আসনের জন্য ইভিএম কেনা হবে তার থেকে ভালো যতখানি সম্ভব সিসিটিভি ব্যবহার করা। নির্বাচন ভবনে গতকাল অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ব্যালটে ভোটের পক্ষে মত দিয়ে সাবেক কমিশনার এম সাখাওয়াত বলেন, ব্যালট পেপারে ভোট চুরি করলেও সেটা খুঁজে বের করা সহজ। আপনাদের কাছে ভোটার লিস্ট (ছবিসহ) আছে। স্বাক্ষর আছে। সবকিছু আছে। ম্যাচ করা যায়। সুক্ষ্ম কারচুপি আপনারা যেটা দেখলেন ইভিএমে, বাইরের পরিবেশ ফার্স্ট ক্লাস! ঝামেলা নেই। হইচই নেই। কিন্তু ভেতরে কী হচ্ছে? অন্য সিস্টেমে (ব্যালটে) যখন এটা হবে বাইরেও হইচই হবে। কারণ, একা তো পারবেন না। ভোট কাটতে হলেও পাঁচ থেকে ছয়জন লাগবে। এতে প্রতিপক্ষ তো হইচই করবে। এটা আপনারা আরও ভালো করে দেখতে পারবেন।

গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে ইসির নেওয়া পদক্ষেপকে স্বাগত জানান সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, আমি বলেছি, আপনারা যেটা করেছেন, সেটা ঠিক আছে। তবে পরের ধাপগুলোয় যেন সিøপ না করেন। যদি সিøপ করেন, তাহলে জাতির কাছে অন্য রকমের মেসেজ যাবে। আপনারা দেখানোর জন্য করেছেন। বাকিটুকু করলেন না। আইন শক্ত অবস্থানে যে বলেছেন, প্লিজ ডু ইট।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কমিশনের যে ক্ষমতা তারা তা প্রয়োগ করেছে। এখন ফলোআপ হচ্ছে কারা, কী করেছে, তা বের করা। কারা দোষী, কারা দোষী নয়, সেটা চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে না পারলে ইসির উদ্দেশ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠবে।
ইসিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কেবল ভোট বন্ধ নয়, যে ক্ষমতা আছে সেটা প্রয়োগ করতে বলেছি। নিজস্ব কর্মকর্তা ও যাদের দিয়ে ভোট করাবেন তাদের কনফিডেন্স আনতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে আপনারা প্রটেকশন দিচ্ছেন।

এদিকে গাইবান্ধার ভোট বন্ধে সাবেকদের সমর্থন পেলো ইসি। গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম স্বচক্ষে দেখতে পাওয়ায় পুরো নির্বাচন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সেই সিদ্ধান্তের ওপর সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবদের সাধুবাদ ও সমর্থন পেলেন তিনি। সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সিইসি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, গাইবান্ধায় আমরা যে অ্যাকশনটা নিয়েছি, ওনারা বলেছেন, এটা সঠিক হয়েছে। আইনগতভাবে ও সাংবিধানিকভাবে ঠিক হয়েছে। ওনারা আমাদের গুরুজন হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন, সততার সাথে, সাহসিকতার সাথে আমাদের এগিয়ে যেতে।

সিইসি বলেন, আজ আমাদের পক্ষ থেকে আমরা কোনো বক্তব্যই দিইনি, তাদের শুনেছি। সার্বিক বিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা তাদের ডেকেছিলাম, এটা সত্য গাইবান্ধাতে যে একটা ঘটনা ঘটে গেল, আমাদের প্রয়োজন ছিল আরও এনলাইটেন্ড হওয়া; ওনাদের তরফ থেকে কোনো গাইডেন্স আছে কিনা, কীভাবে মূল্যায়ন করেছেন অতটুকু জেনেছি।

গাইবান্ধায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ইসির উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের এমন মন্তব্যের বিষয়ে সিইসি বলেন, অপেক্ষা করেন। আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। রিপোর্টটা আসুক। তারপরে আপনারা দেখেন আমরা কোনো পদক্ষেপ নিই কিনা। ওয়েট অ্যান্ড সি। কাজেই একটু অপেক্ষা করতে হবে।

বেলা ১১টা থেকে তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, মো. শাহনেওয়াজ, সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ, এমএম রেজা এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান অংশ নেন। বৈঠকে আসার জন্য মোট ২৮ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও উপস্থিত ছিলেন ১৪ জন। এদের মধ্যে বিচারপতি আব্দুর রউফের অধীনে মাগুরা উপনির্বাচন, কাজী রকিবের অধীনে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ও কে এম নূরুল হুদার অধীনে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে সাবেক সিইসিদের মধ্যে এ টি এম শামসুল হুদা ও আবু হেনা যুক্তরাষ্ট্রে আছেন আর ‘বিতর্কিত’ এম এ আজিজ আমন্ত্রণ পাননি।

বর্তমান কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান, মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। আর নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান সাউথ আফ্রিকা সফরে আছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইভিএম

৩ অক্টোবর, ২০২২
২৬ মার্চ, ২০১৯
২১ জানুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ