Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ডিএনসিসির বিশেষ মশক নিধন অভিযানে জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২২, ৮:৫৭ পিএম

ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা নির্মূলে বুধবার থেকে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করা হবে। সপ্তাহ ব্যাপী বিশেষ অভিযানের প্রথম দিনে ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলেই একযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। অভিযানে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় বিশটি মামলায় মোট ছয় লাখ চৌষট্টি হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন মগবাজার এলাকায় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযানের উদ্বোধন করেন। অভিযান উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মো. সেলিম রেজা বলেন, বর্তমানে পুরো দেশেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে অক্টোবর মাসেও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে, কিছুক্ষণ পরেই আবার রোদ হচ্ছে। এসব কারণেও ডেঙ্গুর রোগের বাহক এডিস মশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা যে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারি। আমাদের সবাইকে এডিস মশা নিধনে সচেতন হতে হবে। সিটি কর্পোরেশন নিয়মিত মশা নিধনে কাজ করছে। নগরবাসীকেও দায়িত্ব নিতে হবে। কারো বাড়িতে এডিসের লার্ভা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের সহযোগিতা পেলে ডেঙ্গু সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্ভব। মূলত বাসাবাড়িতেই এডিস মশার জন্ম হয়। নিজেদের বাসাবাড়িতে ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।'

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মো. সেলিম রেজা বলেন, ডিএনসিসির আওতাধীন দশটি অঞ্চলেই এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। দৈনন্দিন মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযানের ফলে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়বে। বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন ও সাবধান করা হচ্ছে। প্রতিটি অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কাউন্সিলরবৃন্দ এই প্রচারাভিযানে অংশ নিয়েছেন। প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পুরো অভিযানটি ততত্ত্বাবধান করছেন।'

এসময় মগবাজার এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে ৫টি নির্মাণাধীন ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৫টি মামলায় মোট ২,৭০,০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন কাওরানবাজার এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে একটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

অঞ্চল-২ এর আওতাধীন পল্লবী, রুপনগর ও শাহআলী থানা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান অভযান পরিচালনা করেন। অভিযানে লার্ভা পাওয়ায় ৫টি মামলায় মোট ১,৩০,০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

অঞ্চল-৬ এর আওতাধীন উত্তরা ১২ নং সেক্ট্রর এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান পরিচালনা করেন। উত্তরা এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে ২টি ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। লার্ভা প্রাপ্তি স্থানসমূহের লাভা ধ্বংস করে লার্ভা প্রাপ্ত ২জন ভবন মালিককে ২টি মামলায় আশি হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এবং অঞ্চল-৮ এর আওতাধীন উত্তরা এলাকায় নিরীক্ষা কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাসির উদ্দিন মাহমুদ অভিযান পরিচালনা করেন। একটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১টি মামলায় বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়াও অঞ্চল-১ এর আওতাধীন ১৭নং ওয়ার্ডের ভাটারা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জুলকার নায়ন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে বাসা বাড়ী ও নির্মানাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লট, ড্রেন ঝোপঝাঁড়ে কিউলেক্স মশক বিরোধী অভিযান ও সমন্বিততভাবে এডিশ বিরোধী অভিযানে ৭টি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ২টি মামলায় মোট ৪,০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ৫টি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।

অঞ্চল-৯ এর আওতাধীন ছোলমাইদ এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত অভিযান পরিচালনা করেন। এডিসে লার্ভা পাওয়ায় ২টি মামলায় ৬০,০০০টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

এছাড়াও সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে জনসাধারণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন এবং মাইকিং করে জনসাধারণকে সচেতন করেন।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান এবং উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা লে: কর্ণেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার কয়েকটি অঞ্চল পরিদর্শন করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ