Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন পরস্পর বিরোধী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২২, ৬:৫৫ পিএম

তামাকজাত পণ্যের কর বৃদ্ধি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে মূল প্রতিবন্ধকতা তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার। কোম্পানি কর্তৃক বহুল প্রচারিত মিথ্যাচার ও তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপের বিষয়ে তথ্য উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে আজ বুধবার সকাল ১১ টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের উদ্যোগে “তামাক কর ও কোম্পানির হস্তক্ষেপ” শীর্ষক একটি ওয়েবিনার আয়োজন করা হয়। উক্ত ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন, দি ইউনিয়ন (যুগ্মসচিব -অনলিয়েন) এর কনসালটেন্ট মো. ফাহিমুল ইসলাম, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস এর কান্ট্রি ম্যানেজার (বাংলাদেশ) নাসির উদ্দীন শেখ, বিএনটিটিপি’র তামাক কর বিষয়ক গবেষক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ব্যুরো অফ ইকোনোমিক রিসার্চ এর প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য।

সভায় উপস্থিত আলোচকরা বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রধান প্রতিবন্ধকতা তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান অংশীদারিত্ব। সিগারেটসহ সকল ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য যেমন: জর্দা, গুল এর উপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপ রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অতি সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের খসড়া প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বহুজাতিক তামাক কোম্পানি। জনস্বাস্থ্যের কল্যাণ ও তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। তামাক কোম্পানির বহুল প্রচারিত মিথ্যাচার “তামাকের উপর কর বাড়ালে সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাবে”। অথচ তামাকজাত দ্রব্য থেকে অর্জিত রাজস্বের পরিমাণ তামাকের কারণে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসা ব্যয় অপেক্ষা অনেক কম। সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে হস্তক্ষেপের মাধমেই তামাক কোম্পানিগুলো তাদের এ অবৈধ ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে চায়। সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রণালয়ে কোম্পানি কর্তৃক অবৈধ হস্তক্ষেপের ফলে বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠনের নিরন্তর দাবি সত্ত্বেও তা আলোর মুখ দেখতে পারছেনা। এছাড়া সভায় উপস্থিত বক্তারা তামাককে একটি নেশাজাতীয় দ্রব্য হিসেবে অভিহিত করেন। কর বৃদ্ধির মাধ্যমে যেসব দেশে কর বৃদ্ধি পেয়েছে তামাক ব্যবহারের সেখানে তুলনামূলক কম। সচেতনতা বাড়ার সাথে সাথে জরুরি নীতি প্রণয়ন, নীতি সংস্কার ও নীতির বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পরিশেষে বক্তারা তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করতে সরকারের আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করার প্রতি জোর দাবি জানান।

উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে উপস্থিত আলোচকরা তামাক নিয়ন্ত্রণ আন্দোলনকে সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান। এছাড়া, কর আদায়ে সিগারেটের উপর অতি নির্ভরশীলতা কমিয়ে নতুন মাধ্যমের প্রতি নজর দেয়া, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য যুক্ত করা, কর আদায় ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা, সকল তামাকজাত দ্রব্যের সুনির্দিষ্ট কর কাঠামো প্রণয়ন করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের খুচরা বিক্রয় নিষিদ্ধের পাশাপাশি কার্যকর ও শক্তিশালী করনীতি প্রণয়নের দাবি জানান। এছাড়া তামাক কোম্পানিগুলোর মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হয়ে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালী করার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জোর দাবী জানানো হয়।

উক্ত ওয়েবিনারে প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, থ্রী স্টার অর্গানাইজেশন, ডেভেলপমেন্ট ফর ডিজএ্যাডভান্টেজ পিপল (ডিডিপি), ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ভিডিসি), সততা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, সেবা, টিপিডিও, সুবাহ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা (এসপিইউএস), এসো জীবন গড়ি, চাঁদপুর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (সিসিডিএস), মমতা পল্লী উন্নয়ন সংস্থা, ডাস - বাংলাদেশ, সবুজবাংলা গ্রামীন উন্নয়ন সংস্থা, কেরাণীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, পিপলস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটিসহ (পিডিএস) এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত আরও বেশ কয়েকটি সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ