Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিড়ি-সিগারেট কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২২, ৬:৫৪ পিএম

জনগণের স্বাস্থ্যকে রক্ষায় পাবলিক প্লেসে ধূমপানের স্থান বিলুপ্ত, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ এবং খুচরা শলাকা সিগারেট বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে হবে। বিদ্যমান খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী যৌক্তিক ও জনগুরুত্বপূর্ন বলে অভিমত জানিয়েছেন সংসদ সদস্য ও জনস্বাস্থ্যবিদরা। আজ বুধবার প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও এর চিত্রা হলে প্রধানমন্ত্রী’র ঘোষণা এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে অগ্রগতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। দি ইউনিয়নের সহায়তায় মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) সভা আয়োজন করে।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শামসুল হক টুকু। মানস’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি’র সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ডা: এ কে আজাদ খান এবং জাতীয় সংসদের ৬ জন সদস্যবৃন্দ। তারা হলেন- সাবের হোসেন চৌধুরী, ড. শ্রী বীরেন শিকদার, শিরীন আক্তার, সিমিন হোসেন রিমি ও বাসন্তী চাকমা। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মানস’র সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস ওয়াহিদ এবং সমাপনী বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান তালুকদার।

দি ইউনিয়নের কারিগরী পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের বড় বোঝা ‘তামাক’। এটি নিমূর্ূূলে সরকার প্রধানের ঘোষণা ও কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চলমান উদ্যোগ প্রশংসনীয়। দেশে আইন ও বেশ কিছু নীতি প্রণীত হয়েছে এবং কিছু নীতি খসড়া অবস্থায় রয়েছে। রেলওয়ে মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, বিভাগ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সারচার্জের অর্থে দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আইন ও নীতি বিষয়ে বিভ্রান্তি ও প্রচারণা তামাক কোম্পানির পুরনো পদ্ধতি। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির খসড়া সংশোধনী পাস বাধাগ্রস্ত করতেও কলকাঠি নাড়ছে তামাক কোম্পানিগুলো। উপরন্তু, আইন ভঙ্গ করে কিশোর-তরুণ এবং নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করছে। তামাক চাষ কোম্পানির জন্য লাভজনক, কৃষকের নয়। এজন্য খসড়া তামাক চাষ নীতি পাস করা প্রয়োজন বলেন তিনি।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে এড. শামসুল হক টুকু বলেন, ধূমপান ও মাদকে তরুণ প্রজন্ম ধ্বংসের দারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। জাতি দক্ষ কর্মক্ষম জনশক্তি শূন্য হতে চলেছে। বিড়ি-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। একই সাথে তামাক নিয়ন্ত্রণে পারিবারিক অনুশাসন অত্যন্ত জরুরী। কেননা, এ বিষয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে জনসম্পৃক্ততার বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুপগোযোগী করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে কাজ চলছে। আগামী প্রজন্মের স্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী’র তামাকমুক্ত বাংলাদেশ ঘোষণার ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন ‘রোডম্যাপ’ হয়নি। উপরন্ত, তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার এবং সরকারের প্রতিনিধি রয়েছে যা দেশকে তামাকমুক্ত করতে বড় প্রতিবন্ধকতা। নীতি-নির্ধারনী প্রক্রিয়া প্রভাবিত হচ্ছে। তামাকের পেছনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে লড়তে সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

বীর মুক্তিযোদ্বা প্রফেসর ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, করোনা’র চাইতে তামাকের মৃত্যু হার ১৬ গুণ বেশি! করোনায় যত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তামাক নিয়ন্ত্রণে সেরকম উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ। তামাক ও মাদকের মতো ক্ষতিকর নেশার কুফলগুলো বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন সহজ হবে।

শিরীন আখতারবলেন, তরুণদের তামাক আসক্ত করতে তামাকের বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। আইন প্রয়োগের মাধ্যমে তামাকের বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হবে। ই-সিগারেটে ঝুঁকছে তরুণরা, এটি নিষিদ্ধ করতে হবে। জাতীয় সংসদকে সম্পূর্ণ ধূমপানমুক্ত করতে ডেপুটি স্পীকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

মানস’র প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আবু রায়হানের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর হেড অব প্রোগ্রামস্ মো. শফিকুল ইসলাম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রিসার্চ এন্ড এপিডেমিওলোজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা: সোহেল রেজা চৌধুরী। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, এইড ফাউন্ডেশন, উন্নয়ন সমন্বয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ