পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডিসি-এসপিদের সঙ্গে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে নির্বাচন কমিশন খুবই বিব্রত। তবে এনিয়ে নির্বাচন কমিশন আর কোনো উচ্চবাচ্য করতে চায় না। বিব্রতকর এই বিষয়টিকে তারা এখানেই ধামাচাপা দিয়ে শেষ করে দিতে চায়। নির্বাচন ভবনে ডিসি-এসপিদের সাথে কোনো ঘটনা ঘটেছে এটি তারা ভুলে যেতে চায়। তবে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান এমনটি মেনে নিতে পারছেন না। তিনি এ বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্যরা এ নিয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নিতে চান না। এ নিয়ে ইসিতে মতদ্বৈততা বা দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।
জানা যায়, ডিসি-এসপিদের সাথে গত ৮ অক্টোবর অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর ইসি আনিছুর রহমান পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন এমন আশ্বাস দিয়ে তাকে পদত্যাগ থেকে বিরত রাখেন। ইসি আনিছুর রহমান কয়েকদিন ছুটি কাটিয়ে অফিসে এসে বুঝলেন যে কমিশন এ বিষয়ে সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নেবে না বা নিতে পারছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক কর্মকর্তা বলেন, ডিসি-এসপিদের আচরণে আনিছুর রহমান খুবই বিব্রত। এ বিষয়ে ইসি যদি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে যে কোনো সময় তিনি দায়িত্ব থেকে সরে যেতে পারেন। তিনি মনে করেন, আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে দায়িত্ব পালন করার চেয়ে না করাই শ্রেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঠ প্রশাসনকে যদি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মানাতে হয় তাহলে তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মাঠপর্যায়ে ধারণা দিতে হবে যে এ কমিশন নির্বাচন করতে দায়িত্ব নিয়েছে, এর বিপরীতে কেউ অবস্থান নিলে বা ন্যায্য সহযোগিতা না করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে, তাহলে তারা সহযোগিতা করতে বাধ্য হবে। কমিশন যদি নিজদের গুটিয়ে রাখে তাহলে প্রশাসন তাদের পাত্তাই দেবে না। ডিসি-এসপিদের সঙ্গে সংলাপে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে সে জন্য কমিশনের অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপে অংশ নিয়ে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা যা করেছেন এটা নজিরবিহীন। তবে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা গত দুইটি সংসদ নির্বাচনে দেখে এসেছেন, ‘ভোটের’ তারাই নিয়ামক শক্তি। কমিশন শুধু বৈধতা দেয় মাত্র। এ ক্ষেত্রে তাদের থেকে কমিশনের প্রতি স্বতঃসিদ্ধ আনুগত্য না দেখে হতাশ হলেও বিস্মিত হইনি। দলীয়করণের মাধ্যমে নিযুক্ত মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বুঝতে পারছেন, সরকার ছাড়া নির্বাচন কমিশন কিংবা অন্য কোনো সংস্থা তাদের কিছু করতে পারবে না। তখন অন্যায় হলেও তাদের কেউ কেউ হয়ে পড়েন বেপরোয়া। ইসির সংলাপে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাদের কর্তৃপক্ষকে লেখা যায়। কিন্তু কমিশন কী তা করবে।
একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দেশের সংবিধান ও আইন ইসির হাতে প্রচুর ক্ষমতা দিয়েছে। ইসির ক্ষমতার ব্যাপকতা বোঝাতে কেউ কেউ বলে থাকেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে সবকিছু করতে পারে। ইসির এই ক্ষমতার অনেকটাই প্রয়োগ করেন ভোটের মাঠে তাদের প্রতিনিধি বা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ ক্ষেত্রে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পুলিশ-প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।
সাধারণত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকেন জেলা প্রশাসকেরা। নির্বাচনের পরিবেশ কতটুকু অনুকূলে থাকবে, তার অনেকটাই নির্ভর করে প্রশাসন ও পুলিশের ওপর। কারণ, মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকেন তারা। আর তাদের নিয়ন্ত্রণ করে নির্বাচন কমিশন।
যদি কেউ ইসির নিয়ন্ত্রণে না থাকেন, ইসির নির্দেশ অমান্য করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আইনি সুযোগ আছে। কিন্তু অন্তত গত দুটি নির্বাচন কমিশনের আমলে দেখা গেছে, ভোটের মাঠে পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর ইসির কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। অবশ্য ইসি পুলিশ ও প্রশাসনকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে আদৌ ইচ্ছুক ছিল কি-না, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ, এ বিষয়ে ইসির তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। পুলিশ ও প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা নির্বাচনি অপরাধ করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নজির নেই বললে চলে। ফলে নানাভাবে নির্বাচনি অপরাধে জড়িত হওয়া বা অপরাধে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সহায়তা করা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে অনেকটা ‘স্বাভাবিক’ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুলিশ ও প্রশাসনকে যদি কঠিন বার্তা দিতে না পারে তাহলে পরিস্থিতির কোনো উন্নতির আশা করা যায় না।
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, আরপিও অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তারা যদি অপকর্ম করে, নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা না করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ইসি ব্যবস্থা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে অপরাধীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন মামলা করতে পারে। নির্বাচন কমিশন তো বলেছে প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ করা হয়েছে। তাহলে তো সে সব প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা তারা করতেই পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।