Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রিজার্ভ থেকে বৃহদাকারে তেল ছাড়ের ঘোষণা বাইডেনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৪৭ পিএম | আপডেট : ৮:২৫ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দেশটির জরুরি তেল রিজার্ভ থেকে বৃহদাকারে তেল ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পেট্রোলের দাম সহনীয় রাখতে তেল কোম্পানিগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামের লাগাম টানতেই এ ঘোষণা দিলেন বাইডেন। হোয়াইট হাউস ও বাইডেন প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের তিন জন কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের জ্বালানি তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। তবে মার্কিন তেলের খনি থেকে দেশটির সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থারই তেল উত্তোলনের অনুমতি নেই। এ সম্পর্কে দেশটিতে সুনির্দিষ্ট আইনও রয়েছে।

সেই আইনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খনিতে মজুত তেলকে ‘কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত দেশের কোনো খনি থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন করা যাবে না। এ আইন থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রয়োজনের শতভাগ তেলই বাইরে থেকে আমদানি করে।

চলতি বছর ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর বিশ্বে জ্বালানি তেলের অন্যতম যোগানদাতা দেশ রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা।

নিষেধাজ্ঞার জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়তে থাকে জ্বালানি তেলের দাম। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারেও তেলের মূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

এ পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে গত মে মাসে ‘কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ’ থেকে ১৮ কোটি ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দেন বাইডেন।

বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি সেই ১৮ কোটি ব্যারেলের সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ১ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল তেল ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। চলতি সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেই ঘোষণাই দেবেন।

তবে এবার এই তেল ছাড়ের পেছনে মার্কিন জনগণের স্বার্থের চেয়ে নিজের দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির স্বার্থকে বাইডেন প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে মনে করছেন মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজনীতি বিশ্লেষক রয়টার্সকে বলেন, আগামী ৮ নভেম্বর কংগ্রেসে মধ্যমেয়াদি নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে নিজের রাজনৈতিক দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে সুবিধাজনক অবস্থানে রাখতে অভ্যন্তরীণ বাজারে অতিরিক্ত এই তেল ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাইডেন।

এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বলানি মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ডেভিড টার্কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রয়টার্সকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। পাশপাশি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে সম্প্রতি একটি চুক্তি হয়েছে মার্কিন সরকারের। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ‘কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ’ থেকে যে পরিমাণ তেল চলতি বছর বাজারে ছাড়া হবে, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সেই পরিমাণ তেল ফের রিজার্ভে মজুত করা হবে এবং সেই তেল সরবরাহ করবে বিভিন্ন মার্কিন কোম্পানি।

পাশাপাশি, আগামী ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের রপ্তানি আর না বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ আরও ২৬ মিলিয়ন বাড়াতে তিন মার্কিন কোম্পানিকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এসব কোম্পানি হলো অ্যাক্সন মোবিল, শেভরন ও ভালেরো।

টার্ক বলেন, যদি কোনো কোম্পানি সরকারি নির্দেশ না মানে, সেক্ষেত্রে সরকার থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ