Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সিআইএ রিপোর্ট অগ্রহণযোগ্য

| প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : রাশিয়ার সাইবার হামলার ফলেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর বরাত দিয়ে গত শুক্রবার ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এমন খবর প্রত্যাখ্যান করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবির। তারা বলছেন, যে কেউ ই-মেইল হ্যাক করতে পারে। তবে সিআইএর দাবি বিশ্বাসযোগ্য নয়। বিষয়টি হাস্যকর। এটা কোনও আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যবর্তী দল থেকে পাঠানো এক অস্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার তথ্য দিয়েছিল, তারাই এসব তথ্য দিচ্ছে। নির্বাচন অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এটি ছিল এক ঐতিহাসিক বিজয়। এখন সামনের দিকে এগোনোর সময়। যুক্তরাষ্ট্রকে আবার সেরা করে তোলার সময়। ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য বরাবরই রাশিয়ার হ্যাকিং সম্পর্কিত অভিযোগ খারিজ করে আসছেন। এর আগে ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া কোনও ধরনের হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে বলে তিনি মনে করেন না। এমন দাবিকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও উল্লেখ করেছেন। সিআইএর বরাত দিয়ে দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করেছিল রাশিয়া। ট্রাম্পকে জয়ী করাই ছিল রাশিয়ার লক্ষ্য। এ কারণে রাশিয়া বারবার নির্বাচনের ব্যাপারে নাক গলিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে মস্কোর যোগসাজশ ছিল। তারা উইকিলিকসকে বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করতেন। ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচার দলের প্রধান এবং অন্যদের ই-মেইল হ্যাকের সঙ্গেও তারা জড়িত ছিলেন। নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এসব ই-মেইল উইকিলিকসের মাধ্যমে ফাঁস হয়। এতে হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জড়িত যেসব ব্যক্তি উইকিলিকসের হাতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্যদের হাজার হাজার নথি তুলে দিয়েছিলেন, তাদেরও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা শনাক্ত করতে পেরেছে। ওই কর্মকর্তাদের দাবি, যেসব ব্যক্তি ওই কথিত হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জড়িত, তারা নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারির সমালোচনা সামনে এনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের জয়ের পথ সুগম করার কাজ করছিলেন। এক জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, মার্কিন গোয়েন্দারা ধারণা করছে, এখানে রাশিয়ার লক্ষ্য ছিল, এক প্রার্থীকে ঘায়েল করে অপরজনকে সমর্থন করা, ট্রাম্পের জয়ে সাহায্য করা। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, গত সপ্তাহে এ সম্পর্কিত সিআইএর একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিশিষ্ট সিনেটরদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তখন ওই সিআইএ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সিনেটরদের এ সম্পর্কে অবহিত করেন। ওই কর্মকর্তা আরও দাবি করেন, এটাই মার্কিন গোয়েন্দাদের যৌথ মতামত। তবে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা সিআইএ প্রতিবেদনকে সকল গোয়েন্দাদের মতামত বলে দাবি করলেও তাতে ১৭টি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সবগুলোর সমর্থন নেই। অপর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দাবি করেন, সিআইএর অবস্থানের সঙ্গে কিছু কর্মকর্তার অল্প-বিস্তর ভিন্নমত রয়েছে। কারণ সেখানে কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ, রাশিয়ার হ্যাকিংয়ের লক্ষ্য ছিল ডেমোক্রেটিক পার্টির ই-মেইল এবং প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর তথ্য। চলতি বছরের অক্টোবরে মার্কিন কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করেন, মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়েছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্প বরাবরই রাশিয়ার হ্যাকিং সম্পর্কিত অভিযোগ খারিজ করে আসছেন। এর আগে ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া কোনও ধরনের হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে বলে তিনি মনে করেন না। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা এসব অভিযোগকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও উল্লেখ করেছেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়া ওই তথ্য হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করে উইকিলিকসের কাছে হস্তান্তর করেছে। উইকিলিকস প্রতিনিয়ত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারিকে অপদস্ত করার জন্য তথ্য প্রকাশ করে আসছে বলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। অপর এক জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, রুশ কর্তৃপক্ষ যে উইকিলিকসের কাছে ওই হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া ইমেইল তুলে দেয়, তার কোনও নিশ্চিত প্রমাণ গোয়েন্দাদের হাতে নেই। উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ইমেইল ফাঁসে রুশ সরকার তাদের উৎস ছিল না। সিএনএন, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ