মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন পার্লামেন্টে অভিশংসিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হং কু আন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। গত শনিবার এক ভাষণে তিনি জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি দেশটির শেয়ারবাজারকেও চাঙ্গা করার আশ্বাস দেন। পার্লামেন্টের ৩০০ আসনের দুই-তৃতীয়াংশ (২০০) ভোট দরকার হলেও অভিশংসনের পক্ষে ভোট পড়ে ২৩৪টি। আর বিপক্ষে ভোট দেয় ৫৬ জন। পার্লামেন্টে তিন বিরোধী দলের ১৭২ জন সদস্য রয়েছেন। অর্থাৎ অভিশংসনের জন্য বিরোধীদের ভোট ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের ২৮ জনের সমর্থন দরকার ছিল। পার্কের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন তার রাজনৈতিক দল সেনুরি পার্টির অন্তত ৬০ জন সদস্য। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এটি এক বিরল ঘটনা। এর আগে ২০০৪ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট রো মো-হিউনকে পদ থেকে সরানোর জন্য অভিশংসন বিল আনা হয়েছিল।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাইয়ের অভিশংসনের পক্ষে রায় দেয়ার পর হাজার হাজার মানুষ রাজধানী সিউলের রাস্তায় নেমে আসেন তা উদযাপনের জন্য। তাদের দাবি, পার্ককে চূড়ান্তভাবে অভিশংসিত করতে হবে। গত সাত সপ্তাহ ধরে সরকারবিরোধী প্রতিবাদকারীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করছে এবং পার্ককে উৎখাতের দাবি জানিয়ে আসছে। পার্লামেন্ট পার্ককে অভিশংসিত করায় তিনি সাময়িকভাবে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে। অর্থাৎ ৯ বিচারকবিশিষ্ট সাংবিধানিক আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। পার্ক চূড়ান্তভাবে অভিশংসিত হবেন কি হবেন না সে সিদ্ধান্ত জানাতে ছয় মাস সময় পাবেন তারা। আর সে পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত থাকবেন পার্ক। গত শনিবার প্রায় দুই লাখ প্রতিবাদকারী বিক্ষোভে অংশ নেন। পার্কের অভিশংসনের পর এই বিক্ষোভ সমাবেশ পরিণত হয়েছে উৎসব উদযাপনে। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, সাংবিধানিক আদালত যেন যৌক্তিক ও ন্যায়বিচারের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নেন এবং তা যেন জনগণের আকাক্সক্ষার বিপরীত না হয়। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন পার্ক। তার আরও ১৫ মাস মেয়াদ আছে। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। পার্কের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ, তিনি তার বন্ধুকে অবৈধভাবে ক্ষমতার নেপথ্যে থেকে দুর্নীতি করার সুযোগ করে দেন। পার্ক জিউন-হাইয়ের বন্ধু চোই সুন-সিল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্কের সুবাদে অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদানের নামে ৬৫.৫ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেন। এর মধ্যে স্যামসাং এবং হুন্দাই-এর মতো কোম্পানিও রয়েছে। ওই অর্থ সন্দেহভাজন একটি ফাউন্ডেশনের নামে নেওয়া হয়। পরে তিনি সেখান থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হন। পার্ক জিউনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বন্ধুকে ওই অর্থ তুলতে সাহায্য করেন। তিনি চোই সুন-সিলকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছিলেন। প্রতারণা, বল প্রয়োগ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে চোই সুন-সিলকে চলতি মাসের গোড়ার দিকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া গোপন রাষ্ট্রীয় নথি প্রকাশের অভিযোগে প্রেসিডেন্টের অপর এক সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে অভিশংসন ভোটের ফলাফল সাংবিধানিক আদালতের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সাংবিধানিক আদালতের নয়জন বিচারকের অন্তত ছয়জন ভোটের পক্ষে রায় দিলে অভিশংসন প্রক্রিয়া কার্যকর হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হিসেবে পার্ক জিউন হাই ক্ষমতা ত্যাগ করার ৬০ দিনের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।