Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্টার্কটিকায় গলছে হিমবাহ, উষ্ণায়নের জেরে সলিল সমাধির দিকে এগোচ্ছে পৃথিবী?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২২, ৯:২৪ পিএম

বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে একটু একটু করে গলছে বরফ। বাড়ছে সমুদ্রের পানিরস্তর। যার জেরে এবার সলিল সমাধি ঘটতে চলেছে পৃথিবীর? ধ্বংসের মুখোমুখি মানব সভ্যতা? বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে ফের সতর্কবার্তা শোনালেন বিজ্ঞানীরা। অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সায়েন্স এজেন্সির দাবি, আগের চেয়ে আরও দ্রুত হারে গলছে আন্টার্কটিকার বরফ।

সম্প্রতি দক্ষিণ গোলার্ধের ওই মহাদেশের ‘ডেনম্যান’ হিমবাহ নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন তারা। গবেষকদের দাবি, বছরে ৭০.৮ বিলিয়ন টন বরফ গলছে এই হিমবাহের। সমুদ্রের জল গরম হয়ে যাওয়ার জেরেই ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে এই গলন। শুধু তাই নয়, বিপজ্জনকভাবে এই হিমবাহ সরতে শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন ওই বিজ্ঞানীরা। অন্যদিকে হিমবাহের গলনের জেরে সমুদ্রের জলস্তর প্রায় ১.৫ মিটার বেড়েছে বলেও গবেষণায় জানা গিয়েছে।

আন্টার্কটিকার দূরবর্তী স্থান ক্যানঅন এলাকায় ‘ডেনম্যান’ হিমবাহের অবস্থান। এই এলাকায় বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব এতোদিন সেভাবে পড়েনি। ফলে এখানকার হিমবাহগুলির গলন এই শতাব্দীর শুরু দিকেও সেভাবে দেখা যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের দাবি, গত পাঁচ-সাত বছরে সমুদ্রের জল গরম হতে শুরু করায় এখানকার হিমবাহতেও গলন দেখা দিয়েছে। গবেষকদের দাবি, ২০২০ থেকে হিমবাহের গলন ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, ‘টোটেন’ হিমবাহ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আন্টার্কটিকা গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ফেরার পথে ‘ডেনম্যান’ হিমবাহের গলন তাদের চোখে পড়ে। এর পরই সেখানকার গলনের পরিমাণ পরিমাপ করেন তারা।

আন্টার্কটিকার হিমবাহ গলন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার গবেষক দলের প্রধান বিজ্ঞানী এসমি ভন উইজিকের গলায় ছিল উদ্বেগের সুর। তার কথায়, “গত শতাব্দী থেকে এই মহাদেশের হিমবাহগুলিতে গলন শুরু হলেও সেটা নিয়ে চিন্তার কিছু ছিল না। কারণ শীতকালে এখানে বরফপাত হত। ফলে হিমবাহ থেকে যে পরিমাণ বরফ গলত, তার থেকে বেশ পরিমাণ বরফ জমা হত সেখানে।” কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি আর তেমনটা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। “আমাদের তথ্য অনুযায়ী ডেনম্যান হিমবাহ এর মধ্যেই ২৬৮ বিলিয়ন টন বরফ হারিয়ে ফেলেছে। এর মধ্যে আবার প্রতিবছর গলছে ৭০.৮ বিলিয়ন টন বরফ।” উদ্বেগের সঙ্গে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার গবেষক দলের বিজ্ঞানী উইজিক।

বিজ্ঞানীদের আরও দাবি, এতোদিন পর্যন্ত হিমবাহের গলন পশ্চিম আন্টার্কটিকাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে দক্ষিণ এবং মহাদেশের মধ্যভাগের দিকে ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। এই অবস্থা চলতে থাকলে পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন তারা। সমস্যা সমাধানে গ্রিন হাউস গ্যাস এবং কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন তারা। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ