মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন মুদ্রা ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রা ইয়েনের মান গত ৩২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে জাপানের মুদ্রাবাজারে এক ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যাবে ১৪৭ দশমিক ৬৬ ইয়েন।
জাপানের অর্থমন্ত্রী শুনিচি সুজুকি দেশের মুদ্রার মানের এই পতনকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ উল্লেখ করে শুক্রবার বিবিসিকে বলেন, ‘ইয়েনের এই পরিমাণ দরপতন খুবই উদ্বেগজনক এবং আমরা এ ব্যাপারটিকে জাতীয় পর্যায়ে একটি বড় বিপর্যয় হিসেবে বিবেচনা করছি।’
গত কয়েক মাস ধরেই অবশ্য নামছিল ইয়েনের মান। নামতে নামতে গত সেপ্টেম্বরে ডলারের বিপরীতে যে অবস্থানে পৌঁছায় ইয়েন, তা ছিল ১৯৯৮ সালের পর বা গত ২৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
নিজেদের মুদ্রার মানের এই টালমাটাল পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত মাসেই বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল জাপানের সরকার। সেসব পদক্ষেপে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ রাখ ডলার। এছাড়া সংকট মোচনের উপায় খুঁজতে সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারেও প্রবেশ করেছিল জাপান। কিন্তু কিছুতেই ইয়েনের দরপতন ঠেকানো যাচ্ছে না।
তবে জাপানের অর্থনীতিবিদদের মতে, আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে প্রবেশের পরিবর্তে সরকারের উচিত যত দ্রুত সম্ভব ব্যাংক সুদের হার বাড়ানো। তা না হলে দেশের মুদ্রাস্ফীতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে যাবে বলে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন তারা।
সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা — বিবিসির এ প্রশ্নের উত্তরে সুজুকি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা দেশের অর্থনীতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অনুমান বা ধারণাগত জায়গা থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে হিতে বিপরীত হতে পারে।’
গত কয়েক মাস ধরে ইউরো, ইয়েন, পাউন্ড, ইউয়ানসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক মুদ্রার বিপরীতে লাগামহীনভাবে বাড়ছে ডলারের দাম। ফলে বেশিরভাগ বৈদেশিক বাণিজ্য, বিশেষ করে জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে টানা মন্দাভাব চলছে।
কারণ ডলারের মান বেড়ে যাওয়ার কারণে উন্নয়নশীল বিশ্বের পাশাপাশি উন্নত বিভিন্ন দেশও বিদেশি মুদ্রার মজুত ধরে রাখতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, যদি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনের বর্তমান ধারা বজায় থাকে, সেক্ষেত্রে আগামী ২০২৩ সালের শুরু থেকেই বৈশ্বিক মন্দা শুরু হবে।
এদিকে, ডলারের মান বাড়ায় ব্যাপক অস্বস্তিতে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র। গত কয়েক মাসে দেশটিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ যাবতীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে গড়ে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ।
অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও ডলারের মান নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতোমধ্যে সুদের হার বাড়িয়েছে মার্কিন বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক, কিন্তু তাতে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কোনো ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।