পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টেকনিউট্রালিটি হচ্ছে ৯০০ ও ১৮০০ ব্যান্ড
ফারুক হোসাইন : টেকনোলজি নিউট্রালিটি (কারিগরি নিরপেক্ষতা) হচ্ছে ৯০০/১৮০০ মেগাহার্টজ বেতার তরঙ্গ (স্পেকট্রাম)। এই তরঙ্গ দিয়ে এবার বাংলাদেশে থ্রিজি এবং ফোরজি সেবা দিতে পারবে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি) এই দুটি ব্যান্ডের স্পেকট্রামকে টেকনিউট্রালিটি সুবিধা চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। একই সাথে এর মূল্যমান নির্ধারণে ১৪ সদস্যের কমিটি গঠনের সুপারিশও করেছে বিটিআরসি। সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠিয়েছে কমিশন। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানটি। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে অনেক আগে থেকে এসব ব্যান্ডের স্পেকট্রামের টেকনিউট্রালিটি সুবিধা চালু কার্যকর ছিল। কিন্তু বিটিআরসি এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে অনেক সময় নষ্ট করছে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, এতদিন ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্জে শুধুমাত্র টুজি সেবা দিত মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। অন্যদিকে ২১০০ মেগাহার্জে থ্রিজি সেবা দিচ্ছে তারা। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) ৭০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের বেতার তরঙ্গকে মোবাইল টেলিকম ব্যান্ড হিসেবে ঘোষণা করেছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ ফোরজি এবং এলটিই মোবাইল ফোন সেবার জন্য বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে রবি ও এয়ারটেলের মার্জার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার অনুমোদন দিয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্রুত এ সেবা চালুর জন্য স্পেকট্রাম নিলামের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের এবং আগামী নিলামে ৯০০ ও ১৮০০ স্পেকট্রামকে টেকনিউট্রালিটির ঘোষণা দেয়ার জন্য কাজও শুরু করেছে। এজন্য ইতোমধ্যে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠিয়েছে। কমিটি অনুমোদন পেলেই টুজি তরঙ্গ নিলামের গাইড লাইনের বিদ্যমান বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে কারিগরি নিরপেক্ষতা এবং নিলাম হওয়া তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ও মূল্যমান নির্ধারণ করে অন্তর্ভুক্ত করবে। কমিটি প্রয়োজনে অন্যান্য দেশের গাইডলাইন/পলিসি পর্যালোচনা করবে। বিদ্যমান লাইসেন্সিং গাইডলাইনসমূহ বিবেচনায় রেখে টেকনোলজি নিউট্রালিটি সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়সমূহ অনুমোদিত গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্তির জন্য কমিশনের নিকট উপস্থাপন করবে। কমিশন গঠিত ওই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে বিটিআরসি’র স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনারকে এবং সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন একই বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন সহকারী পরিচালক। এছাড়া সদস্য হিসেবে থাকবেন, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক, লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের মহাপরিচালক, সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর/সহযোগী অধ্যাপক, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর/সহযোগী অধ্যাপক (স্পেকট্রাম সংশ্লিষ্ট ডিগ্রিধারী), ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপ-সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজস্ব, অডিট বিভাগের উপ-সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, বিটিআরসি’র স্পেকট্রাম বিভাগের পরিচালক, লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের পরিচালক (লিগ্যাল), লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের পরিচালক (লাইসেন্সিং), স্পেকট্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, অপারেটররা অনেক আগেই থেকে ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রামকে টেকনিউট্রালিটি অনুযায়ী এই ব্যান্ড দিয়ে থ্রিজি সেবা দিতে আগ্রহ দেখায়। কিন্তু বিগত সময় বিটিআরসি এ বিষয়ে কোনো ধরনের সাড়া দেয়নি। এ বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ৯০০ ও ১৮০০ ব্যান্ডকে টেকনিউট্রালিটি সুবিধা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এই ব্যান্ড দিয়ে অপারেটররা থ্রিজি এবং ফোরজি সেবা দিতে পারবে। অচিরেই এই ব্যান্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে টেকনিউট্রালিটি ঘোষণা করা হবে। এজন্য ইতোমধ্যে কাজ করছে কমিশন। এছাড়াও অব্যবহৃত স্পেকট্রাম নিলাম এবং ফোরজি সেবা নিয়ে কাজ করছে বিটিআরসি। তিনি আরও বলেন, থ্রিজি অপারেটরদের ফোরজি সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে নতুন করে লাইসেন্স নেয়ার প্রয়োজন পড়বে। আর ৭০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের সেম্পট্রাম এখনো বিক্রি হয়নি। সে ক্ষেত্রে অপারেটরদের ফোরজি সেবা দেয়ার জন্য ৭০০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম কেনার পাশাপাশি নতুন লাইসেন্স নিতে হবে।
লার্ন এশিয়ার ফেলো আবু সাঈদ খান এ বিষয়ে বলেন, বিটিআরসি অনেক বিলম্ব করে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ বিশ্বে এসব ব্যান্ডের টেকনিউট্রালিটি সুবিধা পাচ্ছে অনেক আগে থেকেই। বিটিআরসি অযথা এ বিষয়টিকে আটকে রেখেছিল।
টেকনিউট্রালিটির বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মোঃ ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিটিআরসি টেকনিউট্রালিটি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে পাঠিয়েছে। আমরা সেই চিঠি পেয়েছি। সব বিষয়ে বিবেচনায় নিয়ে খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
বিটিআরসি ২০১২ সালে একই সঙ্গে থ্রিজি, ফোরজি ও এলটিই লাইসেন্সের জন্য খসড়া নীতিমালা তৈরি করে ওই বছরের ২৭ মার্চ তা চূড়ান্ত করার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠিয়ে দেয়। তখন বিটিআরসি ২০১২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ওই লাইসেন্স নিলামের তারিখ নির্ধারণের প্রস্তাব রেখেছিল। কিন্তু পরে শুধুমাত্র থ্রিজি’র জন্য লাইসেন্স এবং এ সেবার জন্য ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ নিলামের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ওই নিলামে সরকারের হাতে থাকা ৮টি ব্লকে ২১০০ ব্যান্ডের মোট ৪০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের মধ্যে কোন প্রতিযোগিতা ছাড়াই ৫টি ব্লকের ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি হয়। তার আগে তার আগে সরকারি মালিকানার মোবাইল ফোন কোম্পানি টেলিটককে দেওয়া হয় ওই ব্যান্ডের ১০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম। ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বরের ওই নিলামে সর্বোচ্চ দুইটি ব্লকের ১০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম কিনে নেয় গ্রামীণফোন। নিলামে অংশ গ্রহণকারী অন্য তিন অপারেটর- এয়ারটেল, রবি ও বাংলালিংক কিনে নেয় একটি করে ব্লকের মোট ১৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম। এরপর ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের অবশিষ্ট নিলামের উদ্যোগ নিয়েও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি বিটিআরসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।