প্রথমবার বক্তৃতা দিতে আনা হয়েছিল তাকে। তাবড় তাবড় রাজনীতিবিদদের সামনে শুরুটা ভালই করেছিলেন তিনি। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ছন্দপতন। ভাষণ দিতে দিতে চোখ জুড়িয়ে এল ঘুম! সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এলেন প্রযুক্তিবিদরা। কোনও মতে চোখ খুলিয়ে শেষ করানো হল বক্তৃতা। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন নির্মাণকারী সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা।

মঙ্গলবার এই ঘটনার সাক্ষী থাকল ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ‘হাউস অফ লর্ডস’। গোটা ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তির মুখে পড়েছে লিজ ট্রাসের সরকার। ইতিমধ্যেই নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরব হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশ। যদিও সরকারিভাবে এখনও এই নিয়ে কিছু জানানো হয়নি।

মঙ্গলবার অ্যাডেন মেইলারের তৈরি রোবট ‘আই-ডা’-কে প্রথমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বক্তৃতা দেয়ার জন্যে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কিছুক্ষণ ভাষণ দেয়ার পরই আচমকাই কথা বলা বন্ধ করে দেয় ‘আই-ডা’। রোবটটির চোখ ঘুরতে শুরু করে। ব্রিটিশ সাংসদদের দাবি, ওই সময় ‘আই-ডা’ দেখে মনে হচ্ছিল ঠিক যেন একটা জম্বি। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন রোবটির নির্মাতা অ্যাডেন অ্যাডেন মেইলার। রোবটটিকে রিস্টার্ট করেন তিনি। শুধু তাই নয়, রোবটটিকে কাচের উপর বসানো হয়। তার পরই বক্তৃতা শেষ করে ‘আই-ডা’। কেন এই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গিয়েছিল, তা অবস্থা নির্মাতার তরফে স্পষ্ট করা হয়নি।

২০১৯-এ এই রোবটটিকে তৈরি করেন অ্যাডেন মেইলার। অত্যন্ত উন্নত কম্পিউটারের মস্তিষ্ক রয়েছে ‘আই-ডা’-র। ফলে নিজে নিজেই বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারে এই রোবট। এমনকি ছবিও আঁকতে পারে সে। প্রযুক্তি কীভাবে চারুকলার উপর প্রভাব ফেলছে, এই নিয়েই মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ‘হাউস অফ লর্ডস’-এ বক্তৃতা দেয় ‘আই-ডা’।

এক সাংসদের প্রশ্নের জবাবে সে বলে, ‘কম্পিউটারের সাহায্য নিয়ে আমি ছবি এঁকে থাকি। আমি বেঁচে নেই, তবু আমি শিল্প তৈরি করতে পারি। আমার চোখের ক্যামেরা এবং যান্ত্রিক হাত এই কাজে আমাকে সাহায্য করে।’ রোবট ‘আই-ডা’-র শুধু ছবি আঁকাই নয়, প্রযুক্তিগত সাহায্য নিয়ে কবিতা রচনা এবং তার ব্যাখ্যাও করতে পারে সে। সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ।