Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ভারত দ্রুত গণহত্যার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে : ড. গ্রেগরি স্ট্যানটন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৩৫ পিএম

সম্প্রতি ভারতে মুসলিম তরুণ-তরুণীদের উপর নিপীড়ন এবং তাদের সাথে চরম দুর্ব্যবহারের একটি বড় আলামত লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্ব জেনোসাইড ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা ড. গ্রেগরি স্ট্যানটনের মতে, ভারতে আরও গণহত্যামূলক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য সব রকমের প্রস্তুতিমূলক আলামত রয়েছে। -জিও টিভি, ট্রিবিউন, ডেইলি টাইমস

উল্লেখ্য, ড. স্ট্যান্টন ১৯৯৪ সালে সংঘটিত হওয়ার কয়েক বছর আগে রুয়ান্ডায় গণহত্যার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। এখন তিনি নরেন্দ্র মোদি সরকারের অধীনে দেশটির পরিস্থিতিকে মিয়ানমার এবং রুয়ান্ডার ঘটনার সাথে তুলনা করে ভারতে মুসলিমদেরকে আসন্ন গণহত্যার বিষয়ে সতর্ক করেন। বিশেষ করে গারবার ধর্মীয় উৎসবের সময় একাধিক ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ডানপন্থী হিন্দু উগ্রপন্থী জনতা উক্ত ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে মুসলমানদের সাথে চরম ও ন্যক্কারজনক দুর্ব্যবহার করেছে।

৩ এবং ৪ অক্টোবরের তিনটি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছিল, যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্র তাদের মুসলিম বিরোধী এজেন্ডায় হিন্দু চরমপন্থীদের সমর্থন করেছিল। গুজরাট রাজ্যে নয়জন মুসলিম পুরুষকে প্রকাশ্যে হিন্দু চরমপন্থীরা বেত্রাঘাত করেছিল। তখন জনতা জাতীয়তাবাদী স্লোগান দেয় এবং পুলিশ সহ রাষ্ট্রীয় সহযোগি সংস্থা নির্যাতনের তত্ত্বাবধান ও সমর্থন করেছিল বলে জানা গেছে। ঘটনাটির সময় হিন্দুদের একটি মিছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের অধ্যুষিত এলাকায় ইসলাম বিরোধী স্লোগান দেয় এবং তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে উত্যক্ত করে।

ঝাড়খাণ্ডের একটি পৃথক ঘটনায়, ২২ বছর বয়সী এজাজ আনসারিকে কুড়াল ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে আরএসএস জনতা। মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌর শহরে গরবা উৎসবে বিঘ্ন ঘটানোর জাল অভিযোগে ১৯ জন মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিন যুবকের বাড়িও বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন। ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন এই ঘটনার জন্য ভারত সরকারকে দোষারোপ করে নোটিশ দেয়। একজন বিশিষ্ট হিন্দু আধিপত্যবাদী গায়কের আরেকটি ভিডিও হিন্দুদের অস্ত্র কেনার জন্য এবং ভারতকে একটি হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করতে যুদ্ধের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার আহ্বান জানিয়েছে। ভারতে যা ঘটছে তা বিশ্ব আর উপেক্ষা করতে পারে না।

ইন্ডিয়ান আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল টুইটারে লিখেছে, মুসলমানরা গণহত্যার ঝুঁকিতে শীর্ষে রয়েছে। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে, ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে যেখানে মুসলমানরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বসবাস করতে বাধ্য হবে এবং তাদের নির্যাতিত ও হত্যা করা হবে। নরেন্দ্র মোদির ভারতে, হিন্দুত্ব মতাদর্শের বিরুদ্ধে ভারতীয় মিডিয়া এবং রাষ্ট্রযন্ত্র একাকার। মুসলমানদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে এবং ভুয়া অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।

ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ক্রমবর্ধমান ইসলামোফোবিয়ার দিকে নজর দিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলিকে ভারতের বুদ্ধিজীবিরা আহ্বান জানিয়েছেন। হাস্যকর হলেও, ভারতীয় পুলিশ এবং বিচার ব্যবস্থা মুসলমানদের প্রান্তিক ও পিটিয়ে মারার এজেন্ডায় যেন দক্ষিণপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের সাথে জড়িত। মানবাধিকার লঙ্ঘনে ভারতীয় রাষ্ট্রযন্ত্রের সমর্থন প্রমাণিত হয়, যখন বিলকিস বানুকে গণধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ১১ জন হিন্দুকে আদালত মুক্তি দেয়। মুক্তির পর তাদের বীরত্বকে স্বাগত জানানো হয় এবং তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।

একজন হিন্দু ধর্মীয় নেতা তার হাজার হাজার সমর্থককে ভারতকে হিন্দু দেশ করার মোদির পরিকল্পনাকে সমর্থন করার জন্য অস্ত্র বহন করার আহবান জানিয়েছেন। এই কারণেই সুইডিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ গবেষণার অধ্যাপক অশোক সোয়াইন টুইটারে এক ভিডিওতে মন্তব্য করে বলেছেন, ভারত বিশ্বের এক নম্বর দেশ, যেখানে গণহত্যা হতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ