Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকলে ১০ মিনিটেই চুরি করতো তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০২২, ৪:২২ পিএম

রাজধানীর খিলক্ষেত থানার একটি বাসা থেকে স্বর্ণ, রূপা ও নগদ টাকা চুরির ঘটনায় জড়িত চোর চক্রের ৬জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলাশান বিভাগ।

পুলিশ বলছে, ৮-১০ বছর বয়স থেকে তারা ঢাকার কারওয়ান বাজার, মিরপুরসহ সংসদ ভবনের আশেপাশের এলাকায় টোকাইগিরি করত। এ সময় তারা বাসা বাড়ির ছাদে রোদে দেয়া জামাকাপড়, জুতা, রড ইত্যাদি চুরি করে বিক্রি করতো। গত ২০-২৫ বছর ধরে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে তারা চুরি করা শুরু করেছেন। চুরি করার আগের দিন তারা কথা বলে ঠিক করে কোথায় চুরি করবে, সেভাবে পরদিন সকালবেলা তারা এই এলাকায় হাজির হয়। একত্রে চা খাওয়ার পর তারা হাঁটতে থাকে এবং খেয়াল করে দেখে কোন বাসায় দারোয়ান ও সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তারা ১০ মিনিটের মধ্যে চুরির কাজ শেষ করেন। চোর চক্র শুধুমাত্র মূল্যবান অলংকার ও বিদেশি কারেন্সি, টাকা ইত্যাদি চুরি করে।

গ্রেপ্তাররা হলো- মো. জব্বার মোল্লাহ, মো. জামাল সিকদার, মো. আবুল, আজিমুদ্দিন, মো. আনোয়ার হোসেন ও মো. আব্দুল ওহাব।

এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৯ ভরি স্বর্ণ, ৮২ ভরি রূপা ও নগদ প্রায় ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

শনিবার রাজধানীর তাঁতীবাজার, পল্লবী থানা, ও গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবি প্রধান বলেন, গত ১৭ আগস্ট খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ-২ এর ১৫ নং রোড়ে ডাক্তার দম্পতির বাসায় দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে অজ্ঞাতনামা চোরেরা ৪২ ভরি স্বর্ণ ও ইউএস ডলার চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মামলাটি পরে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম কাজ শুরু করেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে চুরির ঘটনার সাথে জড়িত চোরদের শনাক্ত করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর তাঁতীবাজার, পল্লবী থানা, ও গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোর চক্রের সর্দার ও স্বর্ণের দোকান মালিকসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সর্ম্পকে ডিবি প্রধান বলেন, চোর চক্রটির সর্দার জব্বার মোল্লাহ । সাদা পাঞ্জাবি- লুঙ্গি, মাথায় টুপি এই বেশভূষাগুলোই এই মুরুব্বী চোর চক্রের প্রধান হাতিয়ার। দাড়ি টুপি-পাঞ্জাবি পরা থাকায় কোন অপরিচিত ভবনে উঠলেও প্রাথমিকভাবে কেউ তাদেরকে সন্দেহ করে না।

কেউ জিজ্ঞাসাবাদ করলে কৌশলে তারা সেই প্রশ্নের উত্তর দেয়। এই চোর চক্র বিভিন্ন জেলা থেকে এসে তারা একত্রিত হয়। একটি এলাকা থেকে হাঁটা শুরু করে এবং সুবিধামত ভবন টার্গেট করে। টার্গেটকৃত ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে ঘুরে যে বাসার প্রধান দরজা লক করা থাকে, সেই বাসার দরজা ভেঙ্গে চুরি করে।

গ্রেপ্তারদের অপরাধের কৌশল সর্ম্পকে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ৮-১০ বছর বয়স থেকে তারা ঢাকার কারওয়ান বাজার, মিরপুরসহ সংসদ ভবনের আশেপাশের এলাকায় টোকাইগিরি করত। এ সময় তারা বাসা বাড়ির ছাদে রোদে দেয়া জামাকাপড়, জুতা, রড ইত্যাদি চুরি করে বিক্রি করতো। চোরাই মাল বিক্রি করতে গিয়ে একে অন্যের সাথে পরিচিত হয়। পরে তারা একত্রে চুরি করা শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, গত ২০-২৫ বছর ধরে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে তারা চুরি করা শুরু করেছেন। চুরি করার আগের দিন তারা কথা বলে ঠিক করে কোথায় চুরি করবে, সেভাবে পরদিন সকালবেলা তারা এই এলাকায় হাজির হয়। একত্রে চা খাওয়ার পর তারা হাঁটতে থাকে এবং খেয়াল করে দেখে কোন বাসায় দারোয়ান ও সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তারা বাসা টার্গেটের পর দুইজন বাসার ভিতরে প্রবেশ করে, বাকি ২-৩ জন বাইরে পাহারায় থাকে। ১০ মিনিটের মধ্যে চুরির কাজ শেষ করেন।

চোরাইকৃত মালামাল ভাগ করে নিয়ে যে যার যার এলাকায় চলে যায়। ওই চোর চক্র শুধুমাত্র মূল্যবান অলংকার ও বিদেশি কারেন্সি, টাকা ইত্যাদি চুরি করে।

তিনি জানান, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সব সহযোগীদের আইনের আওতায় আনা হবে

বহুতল ভবনে নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা ও দারোয়ান রাখার জন্য বাড়িওয়ালাদের প্রতি অনুরোধ করেন ডিবি প্রধান।



 

Show all comments
  • salman ১০ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২২ এএম says : 0
    ai dusto lok gulir 1 ta kore hat ketee dawa hok, islamik Sasti
    Total Reply(0) Reply
  • Yousman Ali ১০ অক্টোবর, ২০২২, ১:৪৬ এএম says : 0
    সব কটিকে গুলি করা হোক
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Aman Ullah Talukder ১০ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫২ এএম says : 0
    এই ভন্ডদের লেবাস পোষাক ছিনিয়ে নেওয়া হোক! পাশাপাশি এই ভন্ডামি ও চুরির দায়ে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ