পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর মিয়ানমার জান্তা ও সন্ত্রাসী বৌদ্ধদের বর্বরতা ও গণহত্যার মাধ্যমে জাতিগত নিধনের প্রতিবাদে গতকাল বাদ জুমা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সভা ও মিছিল হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে। বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আরাকানের রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার জান্তা ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা ভয়াবহ বর্বরতা ও গণহত্যা চালিয়ে মুসলিম জাতিগত নিধনে লিপ্ত হয়েছে। এমতাবস্থায় জাতিসংঘকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবরোধ-আরোপ ও শান্তিরক্ষীবাহিনী মোতায়েনসহ সামরিক হস্তক্ষেপ নিতে হবে। বক্তারা বলেন জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গা আশ্রয়পার্থীদের সাধ্যমত সহযোগিতা দেয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারকে নিতে হবে।
আওয়ামী ওলামা লীগ
মিয়ানমারের বৌদ্ধ জান্তা এবং বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা চালাচ্ছে। এ যাবৎ পৃথিবীতে যত বর্বরতা ঘটেছে তার চেয়েও ভয়াবহ বর্বরতা চালানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের উপরে। সুতরাং এ বর্বরতা পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যা ও জাতিগত নিধন। তিনি বলেন, মানুষ যে মানুষের উপর এতোটা নিষ্ঠুর হতে পারে শুধু মাত্র মুসলমান হওয়ার কারণে যা না দেখে কেউ উপলব্ধি করতে পারবে না। কাজেই অবিলম্বে জাতিসংঘ মায়ানমারের উপরে সার্বিক অবরোধ আরোপসহ জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষীবাহিনী নিয়োগ করে তাদের বেঁচে থাকা ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল বাদ জুমা বায়তুল মুকাররম উত্তর গেটে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় জাতিসংঘের জরুরী হস্তক্ষেপের এবং এ বিষয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের জোরালো ভূমিকা রাখার দাবিতে মিছিল পূর্ব বিক্ষোভ সভায় ওলামালীগসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বিক্ষোভ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ল’ কলেজের প্রিন্সিপাল এডভোকেট এম এম এ আনোয়ার হোসেন। আওয়ামী ওলামালীগের কার্য্যকরী সভাপতি হাফেজ আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন- মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী-সভাপতি-বঙ্গবন্ধু ওলামা ফাউন্ডেশন। মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- ওলামালীগ, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি সহ-সভাপতি। হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি হুজুর, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল ও ডা. সাইফুদ্দীন মিয়াজি।
বিক্ষোভ সভায় হাফেজ আব্দুস সাত্তার বলেন, জাতিসংঘের রেজুলেশন অনুযায়ী মিয়ানমারের কসাইদের উপর গণহত্যার পুরোপুরি দায়ভার বর্তায়। কারণ ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত গণহত্যা সংক্রান্ত রেজুলেশনের ২৬০(৩) ধারার অনুচ্ছেদ ২ এ নির্ধারণ করা হয়েছে , “শুধু হত্যা নয় আরো কিছু অপরাধ গণহত্যা হিসেবে গণ্য হবে ১। পরিকল্পিত ভাবে একটি জাতি বা গোষ্ঠিকে নির্মুল করার জন্য তাদের সদস্যদেরকে হত্যা বা নিশ্চিহ্নকরণ। ২। একই উদ্দেশে শারীরিক বা মানসিক ক্ষতিসাধন ৩। একটি জাতি বা গোষ্ঠিকে নির্মুল করার উদ্দেশে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা যাতে তারা সম্পূর্ণ বা আংশিক ভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ৪। এমন পরিবেশ তৈরী করা যাতে একটি জাতি বা গোষ্ঠীর জীবনধারণ কষ্টসাধ্য, সেই সংগে জন্মপ্রতিরোধ করে জীবনের চাকা থামিয়ে দেয়া। ৫। একটি জাতি বা গোষ্ঠি শিশু সদস্যদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে তাদের জন্ম পরিচয় ও জাতিসত্তা মুছে ফেলা। জাতিসংঘের রেজুলেশন অনুযায়ী মিয়ানমারের সামরিক কসাইরা উপরিউক্ত সব অপরাধের চাইতেও বেশী অপরাধ করছে। তাই ওআইসি’র দেশগুলোকে নিয়ে মিয়ানমারের কসাইদের বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে আর্ন্তজাতিক আদালতে মামলা করা, অবরোধ আরোপ করা, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করা, মিয়ানমার থেকে কুটনৈতিক প্রত্যাহার করে সামরিক হস্তক্ষেপ করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বসবাস নিরাপদ করা এবং তাদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করা।
ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আরাকানকে মুসলিমশূন্য করার লক্ষ্য নিয়ে মিয়ানমারের সেনা-পুলিশ-বিজিপি ও উগ্রবৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদেরকে গণহত্যা করছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে খুন, ধর্ষণ, সহায়-সম্পদ লুণ্ঠন, শিশু ও বৃদ্ধদের নিপীড়ন, বাড়ি-ঘর জ্বালাও-পোড়াও, ভিটে-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, মসজিদ-মাদরাসা ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস গণহত্যার মাধ্যমে মিয়ানমার চরমভাবে মানবাধিকারের লঙ্ঘন করেছে। অব্যাহত মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থানে বাংলার মানুষ আর বসে থাকবে না। প্রয়োজনে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে মিয়ানমার গিয়ে নিপীড়িত মুসলমানদের প্রতি ফোটা রক্তের বদল নেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
রোহিঙ্গাদের গণহত্যা বন্ধ এবং মিয়ানমারে তাদের নাগরিক মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে গতকাল বাদ জুমা, বিভিন্ন জেলার সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামে মহানগর সভাপতি জননেতা আলহাজ মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে দেশের অধিকাংশ জেলা সদরেই জমায়েত ও ডিসির কাছে স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কোথাও কোথাও পুলিশী বাধায় কর্মসূচি পালিত হয়। যেসব জেলায় স্মারকলিপি পেশ হয়েছে তম্মধ্যে রয়েছে- নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মাদারীপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শরীয়তপুর, শেরপুর, গাজীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম মহানগর, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, নোয়াখালী, কুমিল্লা জেলা পূর্ব, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বি-বাড়ীয়া, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, খুলনা, ঝিনাইদহ, যশোর, নড়াইল, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, জয়পুরহাট, বগুড়া, পাবনা, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাও, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বরগুনা জেলাসহ দেশের সকল জেলা সদরে পুলিশী বাধা উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হয়।
দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি সফল করায় দেশবাসীকে পীর সাহেব চরমোনাই’র মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম মিয়ানমারে সেনাবাহিনী-পুলিশ ও রাখাইন রাজ্যে বৌদ্ধদের দ্বারা বর্বরোচিত রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা, ধর্ষণ, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঘোষিত সারাদেশে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করায় দেশবাসী ও জেলা নেতা কর্মীদের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।
খেলাফত মজলিস
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। মিয়ানমারের সরকার ও সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও বর্বরতার সাধারণ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশুরা নির্মমভাবে নিহত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম ঘর-বাড়ি, জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। পালিয়েও প্রাণ বাঁচতে পারছে না রোহিঙ্গারা। নাফ নদীতে পলায়নপর রোহিঙ্গাদের দ্বারা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে আর বিশ্বসম্প্রদায় তা তাকিয়ে তাকিয়ে তামাশা দেখছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম নির্মুল অভিযান বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মানবতাবিরোধী এ অমানবিক আচরণ বন্ধে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ সকল বিকল্প পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ জন্যে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। খেলাফত মজলিসের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল মজলিস মিলনায়তনে ঢাকা মহনগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা পেশ করেন অধ্যাপক আবদুল হালিম, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, হাফেজ মাওলানা নূরুল হক, জহিরুল ইসলাম, তাওহিদুল ইসলাম তুহিন প্রমুখ।
চট্টগ্রামে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ইসলামী আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আরাকানকে মুসলিমশূন্য করার লক্ষ্য নিয়ে মিয়ানমারের সেনা-পুলিশ-বিজিপি ও উগ্র বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদেরকে গণহত্যা করছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে খুন, নারীদের ধর্ষণ, সহায়-সম্পদ লুণ্ঠন, শিশু ও বৃদ্ধদের নিপীড়ন, বাড়ি-ঘর জ্বালাও-পোড়াও, ভিটে-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, মসজিদ-মাদরাসা ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস করে মিয়ানমার চরমভাবে মানবাধিকারের লঙ্ঘন করেছে।
রোহিঙ্গাদের গণহত্যা বন্ধ এবং মিয়ানমারে তাদের নাগরিক মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে গতকাল (শুক্রবার) বাদ জুমা, আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ উত্তর গেইট চত্বরে বিশাল সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন মহানগর নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ও চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি জননেতা মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, কর্ম, ভূমিস্বত্ব, ভোটাধিকার ও নাগরিক মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া, বাজেয়াপ্ত ওয়াকফ সম্পত্তি ফেরত, মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া মুসলমানদের কবরস্তান, গুঁড়িয়ে দেয়া মসজিদ-মাদরাসাসহ সকল ধর্মীয় স্থাপনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনর্নির্মাণ, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শরণার্থী হিসেবে মানবেতর জীবন যাপনরত সকল রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসনের দাবি জানান এবং উপর্যুক্ত দাবিসমূহ আদায়ে বিশ্বমুসলিমকে আগামী ১৮ ডিসেম্বর মিয়ানমার অভিমুখে সর্বাত্মকভাবে লংমার্চ সফল করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
সবাবেশে চট্টগ্রাম নাগরিক উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মুহাম্মদ আবুল কাশেম মাতব্বর, মুহাম্মদ আল-ইকবাল, সাবেক অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অধ্যাপক মুহাম্মদ মুছা কলিমুল্লাহ, মাওলানা সুলতানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ডা. মুহাম্মদ রেজাউল করীম, এইচএম মুসলেহ উদ্দীন, মু. সগির আহমদ চৌধুরী, মাওলানা তরীকুল ইসলাম সরকার, মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম শাহীন, ওলামা-মাশায়েখ নেতা মাওলানা শেখ মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, শ্রমিক নেতা আলহাজ মুহাম্মদ ওয়ায়েজ হোসাইন ভুঁইয়া, ডা. মুহাম্মদ ফরিদ খান, অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মদ রফিকুল আলম প্রমুখ।
মিয়ানমারে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, মিয়ানমারে উগ্রবাদী বৌদ্ধ ও সামরিক বাহিনী কর্তৃক নির্মমভাবে মুসলিম রোহিঙ্গাদের হত্যা পুড়িয়ে মারা ধর্ষণ, গ্রাম জ্বালিয়ে ছারখার করার প্রতিবাদে গতকাল জুম্মার নামাজের পর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সর্বস্তরের তৌহিদি জনতা। জুম্মার নামাজের পর থেকে নগরীর প্রানকেন্দ্র সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে সমবেত হতে থাকেন মুসল্লিরা। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলে পুলিশি বাধার কারণে তা করা যায়নি। তবে ১৬নং ওয়ার্ড থেকে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে একটি মিছিল এসে যোগ দেয় সমাবেশস্থলে। সর্বস্তরের তাওহিদী জনতার আহবায়ক মওলানা আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সচীব হাফেজ মওলানা হাসান মামুন, মও: আব্দুল করিম, মও: শাহদৎ হোসেন, উমর ফারুক প্রমুখ। বক্তারা মিয়ানমারে নির্মম হত্যাকা-ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অসহায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের আশ্রয় দেবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন আপনি ওদের ছায়াদিন।
১৮ ডিসেম্বর বার্মা অভিমুখে লংমার্চ
সিলেট অফিস জানান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মো: ফয়জুল করীম বলেছেন, প্রতিটি জাতির মতো রোহিঙ্গা মুসলমানদের স্বতন্ত্র পরিচিতি, সাংস্কৃতি ও বৈশিষ্ট জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত। অথচ রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতনে জাতিসংঘ সহ বিশ^নেতৃবৃন্দের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি ও গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগ, বেপরোয়া মানুষ হত্যা আর ধর্ষণের মত অমানবিক ঘটনাগুলোকে কফি আনান গণহত্যা বলতেও চাননা। শিশু সন্তানদেরকে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে আছড়ে মেরে ফেলছে। রোহিঙ্গা সমস্যা রাজনৈতিক ভাবে সমাধান বলে মুখ বন্ধ করে থাকলে হবে না। গণহত্যা ও বর্বরতা বন্ধ না হলে পীর সাহেব চরমোনাইয়ের নেতৃত্বে আগামী ১৮ ডিসেম্বর মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চ করে প্রয়োজনে মিয়ানমার গিয়ে মুসলমানদের পাশে দাঁড়াবো।
গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্ময়া সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠ থেকে মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে সিলেট নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রিয় সদস্য ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন সিলেট জেলা সভাপতি নজির আহমদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন জেলা সভাপতি আলহাজ¦ ফজলুল হক, ইশা ছাত্র আন্দোলন সিলেট মহানগর সভাপতি মোঃ মাহমুদুল হাসান, ইসলাম যুব আন্দোলনের সদস্য সচিব মোঃ রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ সহ সিলেট জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।
কুমিল্লার রাজপথে নেমেছে যুবসমাজ
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে জানান, রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে রাজপথে নেমে এসেছে কুমিল্লার যুবসমাজ। নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের যুব সমাজের উদ্যোগে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় মিছিল নিয়ে ঐতিহাসিক টাউনহল মাঠে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। খ- খ- মিছিল নিয়ে আশ্রাফপুর ও তৎসংলগ্ন এলাকার হাজারো মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের পক্ষে ওই ওয়ার্ডবাসীর রাজপথে নেমে আসার প্রতি সমর্থন জানিয়ে কান্দিরপাড় এলাকার ব্যবসায়ি, পথচারি, সাধারণ মানুষও সমাবেশে অংশ নেয়।
সমাবেশে মাওলানা আবুল খায়ের গোলজার, মাওলানা কাউসার আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বিক্ষোভ সমাবেশ উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন মো. সুমন, মো. রুবেল, মো. ফারুক, সৈকত ও আলাউদ্দিনসহ আরো অনেকে।
নড়াইলে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
নড়াইল জেলা সংবাদদাতা জানান, মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরভাবে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে নড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নড়াইল জেলা শাখার উদ্যোগে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়।
শহরের পুরাতন বাসটার্মিনাল চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের নড়াইল চৌরাস্তা, রূপগঞ্জ চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একইস্থানে এসে শেষ হয়।
পরে মিয়ানমারের মুসলমানসহ সারাবিশ্বের মুসলিমদের হেফাজতের জন্য বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে আয়োজিত সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা খায়রুজ্জামানের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন সাধারণ সম্পাদক ডা: মো: নাছিরুদ্দীন, যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা নুরুন্নবী, শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সভাপতি হাফেজ খবির উদ্দিন, ইসলামী আইয়াম্মা পরিষদের আহবায়ক মাওলানা শাহ্জালাল, জেলা ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি নেওয়াজ মোর্শেদ প্রমুখ।
কর্মসূচিতে তিনটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে মিয়ানমারের মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার জুম’য়ার নামাজ শেষে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে উপজেলার সকল মসজিদের ইমাম,মুসলিসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ বায়তুন্নুর মসজিদের ইমাম আব্দুর রশিদ,কিশোরগঞ্জ থানা মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আজিজ,কিশোরগঞ্জ বায়তুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোস্তাফিজার রহমান,কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান আনিছ,সমাজ সেবক এ কে এম তাজুল ইসলাম ডালিম,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রশিদুল ইসলাম বাবু, মুফতি যোবায়ের আহম্মেদ প্রমুখ।
আড়াইহাজারে মুসল্লিদের বিক্ষোভ
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ)্ উপজেলা সংবাদদাতা জানান, আড়াইহাজারে মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে হাজার হাজার মুসাল্লরা বিক্ষোভ করেছে গোপালদী পৌর সভা এলাকাতে। গতকাল শুক্রবার জুমার পর গোপালদী পৌর সভা ঈমানী শান্তি কাফেলা নামক একটি সংগঠন এই মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলে নেতৃত্বে দেন ঈমানী শান্তি কাফেলার গোপালদী পৌর সভার সভাপতি জাহাঙ্গীর মোল্লা ও সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন ভুইয়া । হাজার হাজার মুসল্লিদের অংশগ্রহণে গোপালদী বড় মসজিদ থেকে শুরু হয় মিছিলটি। দীর্ঘ প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে মিছিলটি রামচন্দ্রদী এসে শেষে হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।