গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
সম্মান জানানোর জন্য অন্য কোনো উপহার নয়, বই বা গাছ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, আমাকে সম্মান জানানোর জন্য কোনো উপহার দেওয়ার দরকার নেই। যদি আমাকে কিছু দিতেই হয়— তাহলে আমাকে একটি বই দেবেন, না হয় একটি ছোট গাছ দেবেন।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে রেডিয়েন্ট বনসাই সোসাইটি আয়োজিত ‘১২তম বার্ষিক বনসাই প্রদর্শনী’ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। ডা. দীপু মনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ছয় ঋতুর ছন্দ হারিয়ে গেছে। তাই এই ছন্দ ফিরিয়ে আনতে পরিবেশ রক্ষায় অন্তত একটি গাছ লাগান। শিক্ষার্থীদের পছন্দ অনুযায়ী যেখানে খুশি সেখানে বছরে অন্তত একটি করে গাছ লাগানোরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, পুরো বিশ্বে এই যে জলবায়ু পরিবর্তন, শীতটা ছোট হয়ে গেছে, বর্ষাটা এলোমেলো, আর গ্রীষ্মটা ভীষণ রকমভাবে চেপে বসেছে আমাদের ওপরে। এই জলবায়ু পরিবর্তন কারো জন্যই ভালো না। এর ফলে সারা পৃথিবীতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে, নানা ধরনের রোগ-বালাই হবে। আগে ঋতুর সঙ্গে যে ছন্দটা ছিল সেই ছন্দপতন ঘটছে। আমরা যেন আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারি, আর যেন ব্যাঘাত না ঘটে, খারাপ দিকে না যাই, এ জন্য গাছের যত্ন নিতে হবে। সবুজের বিস্তৃতি ঘটাতে হবে।
দীপু মনি বলেন, আগামী বছর থেকে নতুন যে শিক্ষাক্রম চালু হবে— ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে, সেই শিক্ষাক্রমে আমরা সবকিছু করে শেখার জায়গাটায় নিয়ে যাচ্ছি। এটির একটি প্রস্তুতি হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে প্রকল্পভিত্তিক শিক্ষার বেশকিছু কাজ শুরু করেছিলাম। এর একটি প্রকল্প ছিল গাছ লাগানো। তার বাইরেও আমরা বলেছিলাম— প্রত্যেক শিক্ষার্থী একটি করে গাছ লাগাবে। সেই গাছ শিক্ষার্থী পছন্দ করবে— সে কোন গাছ, কোথায় লাগাবে। ওই গাছের জন্য কেমন মাটি লাগবে, কেমন করে যত্ন নেবে তা শিখবে। যত্ন নেওয়া এবং দায়িত্ববোধ তৈরি করার জন্য অন্য একটি জীবনের প্রতি দায়িত্ব বোধ নিয়ে কাজ করা শেখানোর জন্য সেই প্রকল্পটা শুরু করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমাকে সম্মান জানানোর জন্য কোনো উপহার দেওয়ার দরকার নেই। যদি আমাকে কিছু দিতেই হয়, তাহলে আমাকে একটি বই দেবেন না হয় একটি ছোট গাছ দেবেন। ছোট বলে বিপদে পড়ে গেছি। যেখানে যাই বনসাই দিয়ে দেয়। এখন বনসাই দিলে তো অনেক দাম। পরে বলেছি, গাছ দিলে ৫০ বা ১০০ টাকার যেকোনো একটি গাছ দেবেন। কিছু দিন আমি যত্ন নেব, তারপর বড় হয়ে গেলে কোথাও লাগিয়ে দেব। আপনাদের কাছে আমার অনুরাধ, বনসাই গাছ পরিচর্যায় কী করতে হয়, সেটি মানুষকে জানিয়ে দেবেন। তাহলে অনেকে যারা যত্ন নিতে জানেন না, সে কারণে তারা হয়ত করেনও না। তাই জানিয়ে দেওয়া ভালো।
আয়োজকরা জানান, ছোট্ট মাটির পাত্রে পূর্ণ গাছের আদলে বট, ফাইকাস, জেড, চাইনিজ এলম, পডোকার্পাস, জেলকোভা এমন যে গাছগুলো সহজে বেঁচে থাকতে পারে তাদের ছোট আকারে সুন্দর করে বাঁচিয়ে রেখে যে শিল্প গড়ে উঠেছে তার নাম বনসাই। দ্রুত নগরায়ণের এসময়ে গাছের সৌন্দর্য আর অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে বহু প্রাচীন এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে বাড়িতে বাড়িতে বনসাইয়ের চর্চা করা জরুরি বলে মনে করেন বনসাই বোদ্ধারা।
এবারের প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য সজীব-সতেজ বনসাই শহরের মানুষের কাছে তুলে ধরা। তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রোটারি ইন্টারন্যাশনালের ৩২৮১ ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর ইঞ্জিনিয়ার এম এ ওয়াহাব এবং ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা। প্রদর্শনীতে বিভিন্ন প্রজাতির বনসাই প্রদর্শন করা হচ্ছে। দর্শনার্থীরা চাইলে বনসাই কিনতেও পারবেন। এক হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যের বনসাই পাওয়া যাচ্ছে প্রদর্শনীতে। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাড়িতে প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।