রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : ফুলের হাসিতে দেলোয়ারের সংসারে ছড়াচ্ছে সুখের আলো। ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশি-বিদেশি ফুলের এক সাম্রাজ্য গড়া কৃষক দেলোয়ারের খোঁজ পাওয়া গেছে শ্রীপুরের কেওয়া দক্ষিণ খ- গ্রামে। দেলোয়ার শখের বশে অনেক আগে থেকেই বাড়ির আঙ্গিনায় ফুলের বাগান করতেন। এক সময় শখের ফুল চাষকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। স্থানীয় কৃষি অফিসের মতে তিনিই দেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশী ফুল উৎপাদন করছেন। যে ফুল বাংলাদেশে এর আগে খুব একটা চাষ হয়নি সে ফুলের চাষে বিপ্লব ঘটিয়ে দেখালেন অদম্য ফুলচাষী দেলোয়ার হোসেন। ফুল চাষে নতুনত্ব আনতে তিনি বেশ কয়েকবার বিদেশেও পাড়ি জমিয়েছেন। গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পূর্বখ- গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে দেলোয়ার তার ফুলের রাজ্য গড়েছেন ২০১২ সালে। এর আগে ২০০৫ সাল থেকেই দুষ্প্রাপ্য ফুল চাষের নেশা পেয়ে বসে তাকে। তখন থেকেই বিভিন্ন কৃষি অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ফুল চাষের বিদ্যাটা আয়ত্ত করতে থাকেন দেলোয়ার। প্রথমে অল্প পরিসরে নিজের কৃষি জমিতে দেশি গোলাপ, গাদা, রজনীগন্ধা ফুলের চাষ শুরু করেন তিনি। উৎপাদিত ফুল ঢাকার শাহবাগে বাজারজাত করা শুরু হয়। সন্তোষজনক মূল্য আর ক্রমশ ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি তাকে ফুল চাষে আরো উদ্যোগী করে তুলে। শুরু হয় নতুন নতুন ফুল চাষের প্রচেষ্টা। দেলোয়ার ফুল চাষে অভিজ্ঞ ব্যক্তি ও নেদারল্যান্ডের একজন ফুলচাষীর সাথে এ বিষয়ে কথা বলেন। তার পরামর্শে চায়না জার্বেরা ফুলের চাষ করতে সিদ্ধান্ত নেন। শুরুতে পাশের দেশ ভারত থেকেও কিছু কাটিং কলম এনে চাষ শুরু করেন। বাংলাদেশের আবহাওয়া এ ফুলের জন্য অনুকূলে না থাকায় পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে বিশেষায়িত শেড তৈরি করে তার ভেতর চাষাবাদ শুরু হয়। প্রথম থেকেই ভালো ফলন পেলেন তিনি। কিছু দিন পর জার্বেরার সাথে চায়না বড় জাতের গোলাপ চাষ শুরু করেন। ২০১২ সালের দিকে ৩টি বড় খামারে মোট ৬একর জমিতে বিশদ পরিসরে শুরু করেন জার্বেরা ও গোলাপ চাষ। ফুল চাষি দেলোয়ার জানান, বাংলাদেশে জার্বেরা ফুলের চাষ করে হাতে গুনা ৪-৫ জন কৃষক। অথচ বিশ্বব্যাপী এ ফুল রফতানির বাজার অনেক বড়। ঢাকা শহরসহ বিভাগীয় শহগুলোতেও এর একটি বড় বাজার রয়েছে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন নেই বললেই চলে। তিনি আরো জানা, বিদেশী ফুলের চাষ করতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হয় তা তার নেই। পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা পেলে খামারের সংখ্যা বাড়িয়ে বাংলাদেশ থেকে এ ফুলের রফতানি দ্বিগুণ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। দেলোয়ার বলেন, তার ফুলের সাম্রাজ্য গড়তে বিনিয়োগ করতে হয়েছে প্রায় ৮০ লাখ টাকা। যার দুই-তৃতীয়াংশ উচ্চ সুদে বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে এসএমই ঋণ নেয়া। এ ফুলের একটি চারা থেকে টানা তিন বছর ফুল পাওয়া যায়। একটি গাছ তিন বছরে প্রায় ১শ’টি ফুল উৎপাদিত হয় যার প্রতিটির বাজার মূল্য ২৫-৩০ টাকা। বর্তমানে তার বাগানে ১৮ হাজার জার্বেরা ফুল উৎপাদনক্ষম চারা রয়েছে। সাথে চায়না বড়জাতের গোলাপের চারা রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। সব মিলিয়ে তার বাগান থেকে বছরে অন্তত ৫০ লাখ টাকা আয় হয়। গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান আলী জানান, “আমাদের দেশের মাটির উর্বরতা ও ঋতু বিবেচনায় ফুল চাষ সম্ভাবনাময় এক নাম। বিশ্বময় ফুলের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে অথচ বাংলাদেশে ব্যক্তি উদ্যোগ ছাড়া রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কোন ফুলের খামার গড়ে উঠেনি এখনো”। শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুয়ীদুল হাসান জানান, বাংলাদেশে ফুল চাষে দেলোয়ার এক সম্ভাবনাময় নাম। তাকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করছে শ্রীপুর কৃষি অফিস। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে তার বাগান পরিদর্শন করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।