Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশংসাপত্র প্রদানে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তানোর (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর তানোর কারিগরি অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) কলেজ অধ্যক্ষ ইলিয়াস আলী মৃধার বিরুদ্ধে প্রশংসাপত্র প্রদানে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়। এদিকে অধ্যক্ষের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে অভিভাবকগণ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা গেছে, বিগত ২০১৫ সালে তানোর কারিগরি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য তাদের কারিগরি কলেজের প্রশংসাপত্রের প্রয়োজন। আর শিক্ষার্থীদের এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অধ্যক্ষ ইলিয়াস আলী মৃধা বিভিন্ন কৌশলে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে প্রশংসাপত্র প্রদানের সময় ৩০০ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন। কেউ এই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে নানা অজুহাতে প্রশংসাপত্র না দিয়েই তাকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রশংসাপত্র পেতে অধ্যক্ষের চাহিদা মতো টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছে। সূত্র জানায়, বিগত ২০১৫ সালে কারিগরি কলেজ থেকে প্রায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এসব শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশংসাপত্র দিয়ে অধ্যক্ষ প্রায় ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব টাকা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৭ হাজার টাকা অধ্যক্ষ হজম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অধ্যক্ষ ইলিয়াস আলী মৃধার শালিকা ও অফিস সহকারী লতিফা বেগমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে এসব টাকা আদায় করা হয়েছে। তবে এসব টাকা আদায় করা হলেও কোনো রসিদ দেয়া হয় না। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতির নামে রশিদ ছাড়াই এসব টাকা আদায় করা হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, সভাপতির নির্দেশে এসব টাকা উত্তোলন ও ভাগবাটোয়ারা করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুলতানা ইয়াসমিন (১৭) প্রচÐ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে বা অন্যকোন প্রয়োজনে প্রশংসাপত্র ও সার্টিফিকেট তুলতে গেলে অধ্যক্ষের চাহিদা মতো টাকা দিতে হয়। ব্যতিক্রম হলে নানা অজুহাতে প্রশংসাপত্র ও সার্টিফিকেট না দিয়ে দিনের পর দিন হয়রানি করা হয়। তিনি বলেন, প্রশংসাপত্র দিতে গেলে অধ্যক্ষ ৩০০ টাকা দাবি করেন আমি ২৫০ দিতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, কলেজ থেকে বিদায় হয়ে চলে যাচ্ছ কম টাকা দিয়ে শিক্ষকদের অভিশাপ নিবে কেন? তাই বাধ্য হয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে আমাকে প্রশংসাপত্র নিতে হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি
সরেজমিন কলেজে গেলে কয়েক জন শিক্ষার্থী বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এটি নামেই কারিগরি প্রতিষ্ঠান, হাতে কলমে বা বাস্তব সম্মত কোনো শিক্ষা দেয়া হয় না। যে কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা এখানে নিয়মিত পড়ালেখা করলেও হাতে-কলমে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছি না। ফলে উচ্চ শিক্ষা নিতে গিয়ে আমাদের পড়তে হয় অর্বণীয় দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনায়। এদিকে ব্যাপক প্রচার রয়েছে ইলিয়াস আলী মৃধা বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ ইলিয়াস আলী মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রশংসাপত্র ও সনদপত্র নিতে শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে কোনো টাকা চাওয়া হয় না। শিক্ষার্থীরা খুশি হয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের মিষ্টিমুখ করাতে যেই টাকা দেয় সেটা গ্রহণ করা হয়। এ ব্যাপারে কারিগরি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনীরুজ্জামান ভুঞা বলেন, তিনি এসব বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে এসব বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রশংসাপত্র প্রদানে অর্থ আদায়ের অভিযোগ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ