Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যাত্রীবাহী বিমান লক্ষ্য করে গুলি

দুই ডজনের বেশি মিয়ানমার সৈন্য নিহত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারে একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজকে লক্ষ্য করে বন্দুক হামলা হয়েছে। হামলায় একজন যাত্রী আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিমানের ফিউসেলেজও (বাইরের কাঠামো)। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৯টায় দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কায়াহর রাজধানী লোইকোতে ঘটে এই ঘটনা। উড়োজাহাজটি এ সময় প্রায় ১ হাজার মিটার (৩ হাজার ২৮০ ফুট) ওপরে ছিল এবং ৬৩ জন যাত্রী ছিলেন সেটিতে। তবে তা সত্তে¡ও উড়োজাহাজটি নিরাপদে বিমানবন্দরে অবতরণে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ও মিয়ানমারভিত্তিক বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। হামলার শিকার উড়োজাহাজটি মিয়ানমারের সরকারি বিমান পরিষেবা সংস্থার। সামরিক বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, দূরপাল্লার মেশিনগান দিয়ে বিমানটিকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালানোর আলামত পাওয়া গেছে। হামলার সময় কয়েকটি গুলি ফিউসেলেজ (উড়োজাহাজের বাইরের কাঠামো) ভেদ করে কেবিনে ঢোকায় কোনো একটি গুলিতে আহত হয়েছেন ওই যাত্রী। মিয়ানমারে কয়েকটি সরকারবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে। সেসবের মধ্যে কারেন্নি ন্যাশনাল প্রগ্রেসিভ পার্টি অন্যতম। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় তিন প্রদেশ কারেন, কায়াহ ও কাচিনজুড়ে তাদের সংগঠন ও কার্যক্রম বিস্তৃত। অপরদিকে, প্রতিরোধ যোদ্ধা ও জাতিগত সশস্ত্র বিভিন্ন গোষ্ঠীর হামলায় মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর দুই ডজনের বেশি সদস্য নিহত হয়েছেন। হামলায় নিহতদের মধ্যে জান্তা সামরিক বাহিনীর অন্তত চারজন ক্যাপ্টেনও রয়েছেন বলে থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন, মন, শান, কারেন প্রদেশ এবং মান্দালয়, স্যাগাইং ও ইয়াঙ্গুন অঞ্চলে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফএস) ও জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর (ইএও) যোদ্ধাদের হামলায় জান্তা বাহিনীর দুই ডজনের বেশি সদস্য নিহত হয়েছেন। খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার মান্দালয়ের আমারাপুরা টাউনশিপে সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে করে ৮ বন্দীকে পরিবহনের সময় ট্রুথ কিপিং ফোর্সের আমারাপুরার প্রতিরোধ যোদ্ধারা আকস্মিক হামলা চালিয়েছে। এ সময় ওই গাড়ি থেকে দুই রাজনৈতিক বন্দীকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এই হামলায় জান্তা বাহিনীর দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। হামলার সময় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লেইং মান্দালয় সফর করছিলেন। একই দিনে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় দেশটির জান্তা পুলিশের এক সদস্য ও প্রশাসনিক দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। বিকেলের দিকে ইয়াঙ্গুন শহরের কেন্দ্রস্থলের একটি ধর্মীয় ভবন পাহারা দেওয়ার সময় পুলিশ কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হামলার পর দেশটির আইন-শৃংখলাবাহিনী সেখানে একজন ট্রিশা চালক এবং এক বেসামরিক নাগরিককে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার রাখাইন প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী বৌদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা হামলা চালিয়ে জান্তা বাহিনীর অন্তত ১২ সদস্যকে হত্যা করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রাখাইনের ম্রাউক-ইউ টাউনশিপ, রাথেডং এবং পন্নাজিয়ুনে হামলা চালিয়ে ওই সৈন্যদের হত্যা করেছে আরাকান আর্মি। ইরাবতি বলছে, একই দিন বিকেলের দিকে ম্রাউক-ইউ টাউনশিপের মাউং সাওয়ে গ্রামের কাছে আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের মাইন হামলায় ১০ জান্তা সৈন্য নিহত হয়েছেন। পরে হামলার জবাবে ম্রাউক-ইউভিত্তিক জান্তা বাহিনীর ৩৭৮ ব্যাটালিয়ন মাউং সাওয়ে গ্রাম লক্ষ্য করে গোলাবারুদ নিক্ষেপ করেছে। এতে তিন বছর বয়সী এক মেয়ে শিশু ও ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর আহত হয়েছে। এই সংঘর্ষের পর দেশটির জান্তা বাহিনী স্থানীয় ১০ গ্রামবাসীকে আটক করেছে। স¤প্রতি মিয়ানমারজুড়ে প্রায় প্রতিদিনই পিডিএফ এবং ইএওর হামলার সম্মুখীন হচ্ছে দেশটির জান্তা বাহিনী। ইরাবতী, রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ